নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কলকাতার ধাঁচে হাওড়াতেও দমকলের উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে পরিদর্শন কমিটি। জেলার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থায় কমিটি নিয়মিত পরিদর্শন করে অগ্নি-নির্বাপক ব্যবস্থা যথাযথ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখবে। কোনও সংস্থা অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা যথাযথ ভাবে না করে থাকলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করবে কমিটি। আমরিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এত জনের মৃত্যুর পরে কলকাতায় দমকলের পরিদর্শন কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়। তারপরেই হাওড়ার জন্য একই ধরনের কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে দমকল সূত্রে জানানো হয়েছে।
তবে কমিটি গঠনের আগে জেলার বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক করা হবে বলে দমকলের এক কর্তা জানান। প্রস্তাবিত বৈঠকে প্রতিটি সংস্থার কাছে জানতে চাওয়া হবে, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা হিসাবে তাঁরা এ পর্যন্ত কী কী করেছেন। কত জনের ‘ফায়ার লাইসেন্স’ রয়েছে, তা-ও জানতে চাওয়া হবে ওই সব সংস্থার প্রতিনিধিদের কাছে। বৈঠকের পরেই কমিটি গঠন করে পরিদর্শন শুরু হবে। হাওড়া জেলা এবং শহর দু’টি জায়গাতেই পরিদর্শন করবে কমিটি।
উল্লেখ্য, হাওড়া শহর এবং গ্রাম দু’টি এলাকাতেই কয়েক বছর ধরে গড়ে উঠেছে একাধিক নির্মাণ। তৈরি হয়েছে শপিং মল। গড়ে উঠেছে অসংখ্য কারখানা, নার্সিংহোম, হাসপাতাল, বাজার। এদের কতগুলির ‘ফায়ার লাইসেন্স’ রয়েছে, সে বিষয়ে সর্বশেষ কোনও তথ্যই নেই দমকলের কাছে। গত দু’বছরের মধ্যে গ্রামীণ এলাকায় বেশ কয়েকটি কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুন নেভাতে গিয়ে দমকল জানতে পারে ওই সব সংস্থার কাছে ‘ফায়ার লাইসেন্স’ থাকলেও নিয়ম মেনে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রাখা হয়নি। অনেক ক্ষেত্রে আবার নিয়মানুযায়ী জলাশয় থাকার কথা থাকলেও তা ছিল না। ফলে আগুন নেভাতে গিয়ে জলের অভাবে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়েছে দমকলকে।
দমকলের এক কর্তা জানান, আমরি কাণ্ডের পরে আর চুপচাপ বসে থাকা হবে না। কমিটি শপিং মল, কারখানা, নার্সিংহোম, হাসপাতাল, সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা বাজার চত্বর, সিনেমা হল এমনকী বিয়েবাড়ির জন্য তৈরি হলগুলিতেও নিয়মিত পরিদর্শন করবে। অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা না-থাকলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্ভব হলে প্রতিটি সংস্থায় হানা দেওয়া দেওয়া হবে বলে দমকলের ওই কর্তা জানান।
কমিটিতে থাকবেন চারটি সংস্থার প্রতিনিধি। তাঁরা হলেন, দমকল, শহরের ক্ষেত্রে পুলিশ কমিশনার এবং জেলার ক্ষেত্রে পুলিশ সুপার (গ্রামীণ)-এর প্রতিনিধি। গ্রামের ক্ষেত্রে রাজ্য বিদ্যুৎবণ্টন সংস্থা এবং শহরের ক্ষেত্রে সিইএসসি-র প্রতিনিধি এবং হাওড়া, বালি ও উলুবেড়িয়া পুরসভার প্রতিনিধিরা।
দমকলের পশ্চিমাঞ্চলের উপ-অধিকর্তা বিভাস গুহ বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব কমিটি গঠন করে জেলা জুড়ে পরিদর্শনের কাজ শুরু করে দেওয়া হবে। তার আগে যে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে যে বৈঠক ডাকা হবে তাতেই প্রত্যেককে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রাখতে হলে কী করতে হবে, তা নির্দিষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হবে।” |