যন্তর মন্তরে অণ্ণা হজারের মঞ্চে বিজেপির পাশে বৃন্দা কারাটের উপস্থিতি নিয়ে সিপিএমের মধ্যে বিরোধ এ বার চরমে উঠল। ‘সংশয় কাটাতে’ এ বার কলম ধরেছেন প্রকাশ কারাট, যা আসলে দলে তাঁর বিরোধীদের প্রতি হুঙ্কার বলেই মনে করা হচ্ছে। তাঁর যুক্তি, “সংসদে লোকপাল নিয়ে আলোচনা হবে বলে যন্তর মন্তরের জনসভায় এ নিয়ে আলোচনা করা যাবে না, এই যুক্তি কংগ্রেসের স্বার্থ চরিতার্থ করে। সুখের কথা, খুব কম লোকই এই যুক্তি গ্রহণ করছে।”সিপিএমের অন্দরমহলে গুঞ্জন, সাধারণ সম্পাদকের এই আক্রমণের তির যত না কংগ্রেসের দিকে, তার থেকে অনেক বেশি দলে তাঁর সমালোচকদের প্রতি। দলে যাঁরা এখনও বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব রেখে কংগ্রেসের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলার পক্ষপাতী, আজ কারাট তাঁদেরই বার্তা দিতে চেয়েছেন। গত রবিবার অণ্ণার মঞ্চে বৃন্দার যোগদান নিয়ে এই নেতারাই শোরগোল তুলেছেন। কারাট-বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, কংগ্রেসের বিরোধিতা করতে গিয়ে অণ্ণার সম্পর্কে মত পাল্টে ফেলেছেন সাধারণ সম্পাদক। অতীতে সিপিএম অণ্ণাকে সাম্প্রদায়িক শক্তির সহচর আখ্যা দিয়েছিল।
অণ্ণার আন্দোলনকে আড়াল থেকে সঙ্ঘ-পরিবার নিয়ন্ত্রণ করছে বলে মনে করেন অনেক সিপিএম নেতা। অথচ কংগ্রেসকে কোণঠাসা করতে গত রবিবার যন্তর মন্তরে বিজেপি নেতা অরুণ জেটলির সঙ্গে অণ্ণারই মঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন বৃন্দা। ফলে কংগ্রেস বা বিজেপি সম্পর্কে দল কী অবস্থান নিচ্ছে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। তাঁরা বলছেন, সিপিএমের মত সংসদেই জানানো যেত।
ঠিক এই যুক্তিটাই আজ খণ্ডন করেছেন কারাট। দলীয় মুখপত্রে প্রকাশিতব্য এক নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, কংগ্রেস নিজের স্বার্থে এই সব যুক্তি দিচ্ছে। কারাট-শিবিরের বক্তব্য, অণ্ণার মঞ্চে বৃন্দার যোগদানের বিষয়টি দিল্লিতে উপস্থিত পলিটব্যুরো সদস্যদের আলোচনাতেই ঠিক হয়েছিল। দিল্লির বাইরে থাকা সদস্যদের সঙ্গেও ফোনে কথা বলে নেওয়া হয়। বৃন্দা যে ভাবে অণ্ণার মঞ্চে দলের মত জাহির করে এসেছেন, তা প্রশংসিতও হয়েছে। কারাট-বিরোধী শিবিরের নেতারা বলছেন, অণ্ণার তরফে আমন্ত্রণ জানানো হলেও প্রথমে বামেরা এতে যোগ দেবে না বলেই ঠিক ছিল। সিপিআই-নেতা ডি রাজা অবশ্য বলছেন, “সিপিএম সম্পর্কে বলতে পারব না। আমরা কিন্তু প্রথম থেকেই ঠিক করেছিলাম, যন্তর মন্তরে যাব।” |