পুরনো মক্কেলকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ঝেড়ে ফেলতে চাইলেও স্বস্তিতে নেই পি চিদম্বরম। এই অবস্থায় আগামিকাল টু-জি মামলার শুনানিতে তাঁর ভাগ্য কোন দিকে গড়ায়, তার দিকেই তাকিয়ে আছে বিজেপি।
টু-জি মামলায় চিদম্বরমের ভূমিকা নিয়ে আদালত যদি সামান্যতম প্রশ্নও তোলে, তাহলেই বিজেপি সরকারের উপর প্রবল চাপ তৈরি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অপসারণ সুনিশ্চিত করতে চাইবে। এবং চিদম্বরমকে সরাসরি আঘাত করা গেলে এর পরে প্রধানমন্ত্রীকেও ছেড়ে কথা বলবে না তারা। সুতরাং বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগে কংগ্রেসও।
চিদম্বরমের বিরুদ্ধে বিজেপির অভিযোগ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে প্রভাব খাটিয়ে নিজের পুরনো মক্কেল হোটেল ব্যবসায়ী এস পি গুপ্তের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। গত কাল এই নিয়ে সংসদ তোলপাড় হওয়ার পর দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশ বাতিল করেন। সেটা নতুন করে অক্সিজেন জুগিয়েছে বিজেপিকে। সংসদে এই নিয়ে আলোচনার সুযোগ না দিলেও চিদম্বরম আজ নিজের মন্ত্রকে বসে আত্মপক্ষ সমর্থন করেন। প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব গোপাল পিল্লাইকেও ডেকে এনেছিলেন তিনি। চিদম্বরম বলেন, গত চার দশকে ২৫ হাজার মামলা লড়েছেন। তার মধ্যে সকলের সঙ্গে তাঁর স্বার্থের সম্পর্ক থাকতে পারে না। দিল্লি সরকারকে মামলা প্রত্যাহার করার পরামর্শ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা তাঁর মন্ত্রক নয়, আইন মন্ত্রক দিয়েছিল। কিন্তু সংসদের বাইরে চিদম্বরমের এই আত্মপক্ষ সমর্থন কোনও ভাবেই সন্তুষ্ট করছে না বিজেপিকে। দলের মধ্যে অরুণ জেটলির মতো নেতারা যদিও মনে করেন, এ ক্ষেত্রে চিদম্বরমের সত্যিই কোনও স্বার্থ জড়িত নেই। এমনকী টু-জি মামলায় আদালত কোনও স্পষ্ট নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সংসদে চিদম্বরমকে বয়কট করার সিদ্ধান্তও কতটা যৌক্তিক, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে দলের মধ্যেই।
এ দিকে সুপ্রিম কোর্টে আজ আদালত-বান্ধব রাজীব ধবন জানান, রামদেবের উপর পুলিশি অভিযানের নির্দেশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই দেন। কাল আবার টু-জি মামলায় চিদম্বরমের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যপ্রমাণ পেশ করবেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “এমনিতেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে প্রভাব কাটানো, রামদেবের উপর আক্রমণের ঘটনায় চিদম্বরম এবং তাঁকে নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রবল চাপের মুখে। তার উপর কাল টু-জি মামলায় চিদম্বরমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললে কংগ্রেসের কাছেও তাঁকে অপসারণ করা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না।”
বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ী চাইছেন, চার দিক থেকে চিদম্বরমের উপর চাপ বাড়িয়ে তাঁকে সরাতে। তাহলেই পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের আগে মনমোহন সিংহকে সরাসরি আক্রমণের পথ প্রশস্ত হবে। গডকড়ী আজ নিজেও বলেন, “এ রাজার মতো একই দোষে দুষ্ট চিদম্বরম। তার উপরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে প্রভাব খাটানোর অভিযোগও এসেছে। প্রধানমন্ত্রী অবিলম্বে চিদম্বরমকে বরখাস্ত করুন।” |