আমরি হাসপাতালের অন্যতম ডিরেক্টর রাহুল তোদির বিরুদ্ধে আমরি-কাণ্ডে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার জন্য আদালতে আবেদন জানাল কলকাতা পুলিশ।
কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) দময়ন্তী সেন শুক্রবার জানান, হাসপাতালে আগুন লেগে চিকিৎসাধীন বহু রোগীর মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে রাহুল তোদিও অন্যতম অভিযুক্ত। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, তিনি কলকাতায় নেই। দেশ জুড়ে তাঁর খোঁজ চলছে। সেই প্রেক্ষিতেই তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার জন্য এ দিন আলিপুর আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। তবে আমরি সূত্রের দাবি, রাহুল তোদি হাসপাতাল সংক্রান্ত বিষয় দেখতেন না। |
গোয়েন্দা প্রধান আরও জানান, ওই ঘটনা অন্য এক অভিযুক্ত রাধেশ্যাম অগ্রবাল এখন পুলিশি-প্রহরায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকে জেরার সুযোগ মেলেনি। তাই রাধেশ্যামবাবুর শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করে পুলিশকে সেই রিপোর্ট দিতে রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তার কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। কবে থেকে ওই ব্যক্তিকে জেরা করা হবে, রিপোর্ট পেয়েই সেই সিদ্ধান্ত নেবে পুলিশ।
গোয়েন্দারা জানান, রাধেশ্যাম অগ্রবালের কন্যা প্রীতি সুরেখাও আমরি হাসপাতালের অন্যতম ডিরেক্টর। এ দিন ফুলবাগানে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। হাসপাতাল পরিচালনার কাজে প্রীতির ভূমিকা কী ছিল, কী কী সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছিলেন, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। সে সংক্রান্ত কিছু কাগজপত্র তাঁরা বাজেয়াপ্ত করেছেন বলে গোয়েন্দাদের দাবি। আমরি-র আরও কয়েকজন কর্মীকে এ দিন লালবাজারে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, হাসপাতাল পরিচালনায় কোন কোন ডিরেক্টর, কবে, কী কী নির্দেশ দিয়েছিলেন তা জানতে চাওয়া হয় ওই কর্মীদের কাছ থেকে। দমকলের পক্ষ থেকে বারবার অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা সম্পর্কে যে সব নোটিস আমরি কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছিল, সে ব্যাপারে ডিরেক্টরেরা কী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কর্মীদের সে সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করা হয়।
আমরি-কাণ্ডে উদ্ধার হওয়া এক রোগিণী এ দিন এসএসকেএম হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁর নাম নমিতা ভট্টাচার্য (৭৬)। বাড়ি বাঘাযতীন এলাকায়।
আবার এ দিনই অগ্নিকাণ্ডের রাতে আমরির অ্যানেক্স ভবনে যে সব চিকিৎসক ‘ডিউটি’তে ছিলেন তাঁদের ‘ভূমিকা’ কী ছিল, তা খতিয়ে দেখার দাবি জানান সরকারি চিকিৎসকদের একাংশ। নীলরতন সরকার হাসপাতালে কংগ্রেস সমর্থিত চিকিৎসকদের একটি সংগঠন আমরি-র মৃতদের প্রতি শোকজ্ঞাপন করার পাশাপাশি মোমবাতি নিয়ে মিছিল করে। মিছিলে উপস্থিত রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অগ্নিকাণ্ডের রাতে কোনও চিকিৎসক ছিলেন কি না, খতিয়ে দেখা উচিত।”
|