এখনও ঢেঁড়া পিটিয়ে প্রচার চলে বোলপুরে
থ্য প্রযুক্তি ও গণ মাধ্যমের নানা দিক খুলেছে। কিন্তু সে সব এখানে থমকে গিয়েছে। প্রশাসনের তরফে এখনও আমজনতার কাছে কোনও বার্তা পাঠানোর জন্য ঢেঁড়া পেটানো হয়। সেই রাজা-মহারাজাদের আমল থেকে ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে বার্তা দেওয়ার চল এই একবিংশ শতাব্দীতেও রয়ে গিয়েছে। গ্রাম বাংলায় এ ছবি আজও দেখা যায়। সরকারি ঘোষণা, আদালতের নির্দেশ কিংবা জন চেতনামূলক প্রচার- ঢেঁড়া পিটিয়ে লোকজনদের মনোযোগ আকর্ষণ করে বাজনদাররা তা ঘোষণা করেন। এ রাজ্যের অনেক এলাকার মতোই বোলপুর-শান্তিনিকেতন এলাকায় এমন প্রচারের মাধ্যম আকছার দেখা যায়।
ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
সম্প্রতি বোলপুর পুরসভা রিকশা, ভ্যান চালকদের লাইসেন্স এবং বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ‘ট্রেড লাইসেন্স’-এর নবীকরণের জন্য পাঁচ দিন ধরে ঘোষণা চালায়। এই ঘোষণার জন্য তাঁরা কাজে লাগান ঢেঁড়া বাদনদের। শহরের ব্যস্ততম রাস্তা শান্তিনিকেতন রোড থেকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে ঢেঁড়া পিটিয়ে জোর প্রচার চালানো হয়। বোলপুরের বাঁধগোড়ার বাসিন্দা জয়দেব বাদ্যকর ঢেঁড়া পিটিয়ে প্রচার করছিলেন। সাইকেল থেকে তিনি রাস্তার এক পাশে নামলেন। ঢ্যাঁড়া পেটাতে শুরু করলেন। হঠাৎ ঢ্যাঁড়ার শব্দ শুনে পথচলতি মানুষজন তাঁকে ঘিরে ধরেন। তখন জয়দেব পুরসভার লিখে দেওয়া নির্দেশ চিৎকার করে পাঠ করেন। পাঠ শেষে আবার লাফিয়ে সাইকেলে উঠে পড়েন।
বছর চল্লিশের জয়দেববাবু বলেন, “অনেক বছর ধরে ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে প্রচারের কাজ করছি। কখনও বোলপুর পুরসভার কোনও বিজ্ঞপ্তি তো কখনও দখল মুক্ত করার জন্য প্রশাসনের নির্দেশ- এমন নানা ঘোষণা করে আসছি। এর সঙ্গে পাড়ার পুজোর কমিটির বৈঠক, ওয়ার্ড কমিটির বৈঠক থেকে নানা সামাজিক অনুষ্ঠানের প্রচারের জন্যও বরাত পাই।” তিনি জানান, শুধু বোলপুর শহরেই নয়, পাড়ুই, ইলামবাজার, লাভপুর থেকেও ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে প্রচার করার জন্য তাঁর ডাক পান। আদালতের নির্দেশ হলে ২০০ টাকা পাই। পুরসভার ক্ষেত্রে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত দৈনিক রোজগার হয়।
বোলপুরের পুরপ্রধান তৃণমূলের সুশান্ত ভকত বলেন, “প্রচার মাধ্যমের এখন অনেক উন্নতি হয়েছে। কিন্তু মানুষের বাড়ি বাড়ি প্রয়োজনীয় বার্তা পৌঁছে দিতে ঢ্যাঁড়া পেটানোর বিকল্প রয়েছে বলে মনে হয় না। ঢেঁড়ার শব্দ মানুষকে সহজে আকৃষ্ট করে।” তিনি জানান, ঢ্যাঁড়া পেটানো পুরনো প্রথা হলেও বড় কাজের। স্বাস্থ্য দফতরও রোগ সর্ম্পকে বাসিন্দাদের সচেতন করতে এখনও ঢ্যাঁড়া বাজনদারদের কাজে লাগান। বোলপুর মহকুমার সহকারি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়ন্ত সুকুল বলেন, “ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, পোলিও, ফাইলেরিয়া প্রভৃতির উপসর্গ ও তার প্রতিকারের জন্য কী করণীয় তা ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে তা প্রচার করা হয়।” তাঁরও যুক্তি, অন্য মাধ্যমের থেকে ঢ্যাঁড়ার আকর্ষণ গ্রামে-গঞ্জে বেশি। তাই অনেক লোকের কাছে এ ভাবে বার্তা পৌঁছে দেওয়া যায়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.