এসডিও অফিসের সামনেই বিক্ষোভ গাঁওতার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রামপুরহাট |
আদিবাসী গাঁওতা ও মালিক পক্ষের মধ্যে ঝামেলার জেরে ডিসেম্বরের প্রথম রামপুরহট থানা এলাকার প্রায় ২০০টির মতো খাদান-ক্রাশার বন্ধ। ২৫ হাজারের মতো শ্রমিক কর্মহীন। ২০টির মতো খোলা রয়েছে। সম্প্রতি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হলেও সমস্যা মেটেনি।
তারই মধ্যে জট আরও বাড়ল- রামপুরহাটের বারমেশিয়া, ধরমপাহাড়ি, বড়পাহাড়ি, দিঘলপাহাড়িরামপুরহাটের এই সব পাথর শিল্পাঞ্চলে দূষণ নিয়ন্ত্রণ-সহ বৈধ ও অবৈধ ক্রাশার চিহ্নিত করণে প্রশাসন দেরি করছে। এই অভিযোগে শুক্রবার জেলা আদিবাসী গাঁওতার নেতৃত্ব আদিবাসীরা রামপুরহাট মহকুমা প্রশাসনিক কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভে বসায়। পরে ১৪ দফা দাবিতে মহকুমাশাসককে স্মারকলিপি দেয়। মহকুমাশাসকের আশ্বাসে তারা বিক্ষোভ তুলে নেয়। তবে আগামী এক মাসের মধ্যে শিল্পাঞ্চল এলাকার সামগ্রিক চিত্র স্পষ্ট না করলে ফের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনশনে বসার হুমকি দিয়েছেন আদিবাসী গাঁওতার আহ্বায়ক সুনীল সোরেন। |
মহকুমাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তব অবশ্য বলেন, “দু’মাসের মধ্যে ওই সব পাথর শিল্পাঞ্চলের সুস্পষ্ট চিত্র আদিবাসী গাঁওতার কাছে তুলে দিতে পারব বলে আশা করছি।” সুনীল সোরেনের দাবি, “২০১০ সালে তৎকালীন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন জেলা জুড়ে পাথর শিল্পাঞ্চলগুলির জন্য যে নির্দেশ জারি করেছিলেন সেই মতো পাঁচামি, শালবাদরা এলাকায় পাথর শিল্পাঞ্চলে দূষণ নিয়ন্ত্রণ, ক্রাশার, খাদানের বৈধতা অবৈধতা নিয়ে কাজ হল। কিন্তু এক বছর ধরে একই নির্দেশ রামপুরহাট, নলহাটি, মুরারই থানা এলাকার পাথর শিল্পাঞ্চলে কার্যকর হয়নি।”
তাঁর আরও দাবি, “মালিক পক্ষ, আদিবাসী গাঁওতা নেতৃত্ব এবং প্রশাসনকে নিয়ে রামপুরহাট থানার বারমেশিয়া, ধরমপাহাড়ি, বড়পাহাড়ি, দিঘলপাহাড়ি এলাকার ক্রাশার, খাদানের দূষণ, বৈধতা, অবৈধতা, হস্তান্তরিত আদিবাসী জমি ফেরত-সহ নানা বিষয় নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়। এক মাসের মধ্যে শিল্পাঞ্চলের সুস্পষ্ট চিত্র আমাদের কাছে পরিষ্কার করে দেওয়ার কথা ছিল। এখনও কোনও কাজই হয়নি।” মহকুমাশাসক বলেন, “এটা ঠিক কথা নয়। আমি বলেছিলাম, মালিকদের এক মাসের মধ্যে খাদান, ক্রাশার সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজ জমা দিতে। সেটা পরীক্ষা করে দেখবেন বিডিও, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, সংশ্লিষ্ট ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। তার কাজ চলছে। এখনও পর্যন্ত ৫৮২ জন তাঁদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। ১৪৯টি পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। তার মধ্যে ৭৯টি জেলাস্তরে স্ক্রিনিং কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে নির্দেশ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে সময় লাগবে।”
খাদান সংক্রান্ত অভিযোগ ছাড়া, আর যে সব দাবি জানিয়েছে সেগুলি হলরামপুরহাটের ভাটিনা মৌজার হরিনাথপুরে একটি নতুন ক্রাশার গড়ে উঠছে। তা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা আপত্তি তুলেছেন। মুরারই, রামপুরহাট ১, নলহাটি ১ ব্লকে আদিবাসীদের মধ্যে রেশনকার্ড বিলি ও শংসাপত্র দেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা। মহকুমাশাসক বলেন, “নির্মীয়মাণ খাদান নিয়ে সে সমস্যা তা খতিয়ে দেখা হবে। রেশনকার্ড বিলি ও আদিবাসী শংসাপত্রও দেওয়া হবে।” রামপুরহাটের সুরুচুয়া লাগোয়া অবৈধ মোরাম খাদানের অভিযোগও খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমাশাসক।”
|