নিজস্ব সংবাদদাতা • রামপুরহাট |
হাসপাতালের রেকর্ড রুমে স্তুপীকৃত ফাইল সাজানো। ফাইল বিদ্যুতের বোর্ড পর্যন্ত ঠেকে গিয়েছে। তা ছাড়া, ওই রুমের জানালার কাচ ভাঙা। যদি অজান্তে কেউ ভাঙা জায়গা দিয়ে আগুনের টুকরো ফেলে দেয় তা হলেই বিপত্তি ঘটে যাবে। অবিলম্বে ভাঙা কাচ সারানোর নির্দেশ দিলেন রামপুরহাট মহকুমাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তব।
বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি রামপুরহাট হাসপাতালে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা দেখতে আসেন। হাসপাতালে ঘণ্টা খানেক ধরে বিভিন্ন ওয়ার্ড, জেনারেটর রুম, ইলেকট্রিক ব্যবস্থা, রান্নাঘরে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা দেখেন। সঙ্গে ছিল দমকলেরর কর্মীরাও। রামপুরহাট দমকল স্টেশনের আধিকারিক স্বপন দত্ত বলেন, “এ দিনের অভিযান নিয়ে বুধবার জেলাশাসকের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। বৃহস্পতিবার সেই মতো রামপুরহাট মহকুমাশাসককে নিয়ে রামপুরহাট হাসপাতাল পরিদর্শন করা হয়।” |
তিনি জানান, প্রথমে দেখা হয় হাসপাতালে ঢোকা ও বেরিয়ে যাওয়ার রাস্তা ঠিক আছে কি না, দমকলের গাড়ি ঢোকার ব্যবস্থা আছে কি না সেটাও দেখা হয়। স্বপনবাবু বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছে এই সব সমস্যা নেই। তবু হাসপাতাল থেকে বেরনোর পথ যদি আরও ভাল করা যায় তার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। এ ছাড়া, রেকর্ড রুমের অবস্থা বিপজ্জনক হয়ে আছে, রান্নাঘরে অগ্নি নিরোধক ব্যবস্থা নেই। অপারেশন থিয়েটারেও ওয়ারিং-এর ববস্থা ভাল নেই। শুধু তাই নয়, অপারেশন থিয়েটারে অগ্নি নিরোধক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে যে ড্রাই কেমিক্যাল পাউডারের সিলিন্ডার আছে, সেটা কী ভাবে ব্যবহার করতে হয় তার প্রশিক্ষণ নেই কর্মীদের।”
তিনি জানান, হাসপাতালের অগ্নি নিরোধক ব্যবস্থার জন্য অন্তবর্তীকালীন একটি রিপোর্ট দেওয়া হবে। তার মধ্যে প্রথমতদমকল থেকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট অবশ্যই নিতে হবে। দ্বিতীয়তঅগ্নি নিরোধক ব্যবস্থার পরিকাঠামোর আরও উন্নতি করতে হবে। চারটি পাউডার সিলিন্ডার থাকলেও তা যথাস্থানে বসানো হয়নি। তৃতীয়তওয়ারিং-এর যে ত্রুটি আছে তা বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে। চতুর্থতঅগ্নি নিরোধক ব্যবস্থার জন্য প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কর্মী নেই। ১৫ দিনের মধ্যে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করাতে হবে। এ ছাড়া, দমকল বিধি মেনে আরও কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বপনবাবু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলেছেন।
মহকুমাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তব বলেন, “অগ্নি নিরোধক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে কিছু ত্রুটি আছে। সেগুলি নির্দেশ মতো ঠিকঠাক করতে হবে।” হাসপাতাল সুপার হিমাদ্রি হালদার বলেন, “অগ্নি নিরোধক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে যে করম নির্দেশ দেবেন সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ দিনই হাসপাতাল ঘুরে দেখার সময় চারতলার সিঁড়ির কাছে জঞ্জালের স্তূপ দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মহকুমাশাসক। তিনি কঠোর ভাষায় অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার সুদীপ্ত মণ্ডলকে ডেকে বলেন, “এরকম হয়ে থাকলে আপনাকে সাজা দেওয়া হবে।” অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে বলেন তিনি। শুধু তাই নয়, হাসপাতালের আবর্জনা ফেলার জায়গা দেখেও খুশি হননি মহকুমাশাসক। তিনি বলেন, “হাসপাতালের সাফাইয়ের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারকে ডাকা হবে।” হাসপাতাল সুপার বলেন, “এ রকম হওয়া উচিত নয়। আমরাও সতর্ক হব।” |