জঙ্গলমহলের একাংশে সেচ-ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে উদ্যোগী হলেন শালবনি বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো। ভীমপুর, লালগেড়িয়া, দেবগ্রাম, আনুশোল, শঙ্করকাটা এলাকায় সেচের জন্য গভীর নলকূপ তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এ জন্য বিধায়ক তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ করেছেন। নতুন নলকূপ তৈরি হলে সেচে জলের সমস্যা দূর হবে। স্রেফ জলের অভাবে আর চাষের কাজ মার খাবে না। জঙ্গলমহল এলাকার একাংশে সেচের জল পৌঁছয় না মেনেই শালবনির বিধায়ক বলেন, “পর্যাপ্ত জলের অভাবে চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ বার ক্ষুদ্রসেচের উপর বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় সেচের জন্য নতুন নলকূপ তৈরি করা হবে। এর ফলে, সাধারণ গ্রামবাসীরাই উপকৃত হবেন।”
শালবনি এলাকা সেচসেবিত বলেই চিহ্নিত। কিন্তু, এলাকার একটা বিস্তীর্ণ অংশেই সেচের জল পৌঁছয় না বলে অভিযোগ। ফলে, স্থানীয় মানুষ সমস্যায় পড়েন। শুরুতে পাঁচটি এলাকায় গভীর নলকূপ তৈরি হলেও পরে আরও কয়েকটি এলাকায় নলকূপ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে বিধায়কের।
প্রশাসন সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় মোট কৃষিজমির পরিমাণ ৭ লক্ষ ৭৩ হাজার ৩৭৫ হেক্টর। এর মধ্যে সেচের সুবিধা রয়েছে ৩ লক্ষ ২৩ হাজার ৯৬৩ হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ, অর্ধেক জমিতে। জঙ্গলমহল এলাকায় কৃষিজমি রয়েছে ২ লক্ষ ১২ হাজার ৯৭৮ হেক্টর। সেচের সুবিধা রয়েছে মাত্র ১ লক্ষ ৯ হাজার ২৯ হেক্টরে। খাতায়-কলমে জেলার অর্ধেক কৃষিজমি সেচসেবিত বলে প্রশাসন দাবি করলেও গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বাস্তবে এই অবস্থা আরও করুণ। পরিস্থিতি পাল্টাতে অবশ্য উদ্যোগী হয়েছে রাজ্যের নতুন সরকার। আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই এ জেলার বিভিন্ন এলাকায় পুকুর কাটার পরিকল্পনা করা হয়েছে। জলসম্পদ উন্নয়ন দফতরই এই পরিকল্পনা করেছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। তবে, জঙ্গলমহল এলাকায় পুকুরের থেকে বেশি সংখ্যক ‘চেক ড্যাম’ তৈরি করা হবে। কারণ, এখানে ছোট ছোট বেশ কয়েকটি খাল আছে। এ দিকে, এলাকার বিধায়ক সেচ ব্যবস্থার দিকে নজর দেওয়ায় খুশি শালবনি এলাকার মানুষ। ভীমপুরের শিশির মাহাতোর কথায়, “সেচের জল পেতে সমস্যা হয়। অনেক এলাকায় শুধুমাত্র জলের জন্যই চাষের কাজ মার খায়। আগের সরকার সেচের উপর গুরুত্বই দেয়নি।” দেবগ্রামের বাবলু বিশুই বলেন, “সেচের উন্নতি হলে ফসলের উৎপাদন বাড়বে। চাষিদের ক্ষতির মুখ দেখতে হবে না।” |