|
|
|
|
সিআইডি হেফাজতে মতিউর |
কণ্ঠিবাড়িতে ‘কঙ্কালে’র দাবি, শুনিয়ায় উদ্ধার আগ্নেয়াস্ত্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • এগরা ও হলদিয়া |
আবারও কঙ্কাল-রহস্য। এ বার খেজুরির কণ্ঠিবাড়িতে। স্থানীয় সিপিএম নেতা কালীপদ দাসের বাড়ি লাগোয়া এক জায়গায় পাঁচ বছর ধরে ‘নিখোঁজ’ এক দলীয় কর্মীর দেহ পোঁতা রয়েছে বলে সরব হয়েছে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার দিনভরই এ নিয়ে উত্তেজনা ছিল। পুলিশ জায়গাটি ঘিরে রেখেছে। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে আজ, শুক্রবার মাটি খোঁড়া হবে বলে ঠিক হয়েছে। তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক মামুদ হোসেনের দাবি, “২০০৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে আত্মীয়বাড়ি যাওয়ার পথে ভাজাচাউলির দলীয় কর্মী শচীন ধাড়া ‘নিখোঁজ’ হন। তাঁকে মেরে দেহটি সিপিএমের লোকজন খেজুরির কণ্ঠিবাড়িতে পুঁতে দিয়েছিল বলে আমরা সম্প্রতি জানতে পেরেছি। তাই মাটি খোঁড়ার দাবি জানিয়েছি আমরা।” সিপিএম নেতা কালীপদবাবু অবশ্য অনেক দিন ধরেই এলাকা ছাড়া।
অস্ত্র উদ্ধারেরও হিড়িক শুরু হয়েছে নতুন করে। উমাপতিবাড়ের পরে এ বার শুনিয়া। বৃহস্পতিবার সকালে শুনিয়ার তৃণমূল কর্মীরা পুলিশকে ডাকিয়ে এনে তল্লাশি চালায় ঘরছাড়া কয়েক জন সিপিএম নেতা-কর্মীর বাড়িতে। স্থানীয় ঘোড়াঘাটা হাইস্কুলের পার্শ্বশিক্ষক, সিপিএম-কর্মী ব্যোমকেশ গিরির বাড়ি থেকে একটি এবং সিপিএমের দেশপ্রাণ জোনাল কমিটির সদস্য অজয় সামুইয়ের বাড়ি থেকে আর একটি বন্দুক উদ্ধার হয় বলে দাবি। |
|
ছবি: আরিফ ইকবাল খান। |
ব্যোমকেশবাবু বছর দেড়েক এবং অজয়বাবু মাস চারেক হল অবশ্য এলাকা ছাড়া। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য প্রশান্ত পাত্রের অভিযোগ, “মঙ্গলবার রাত থেকে শুনিয়া, উমাপতিবাড়, কুলঞ্জারা গ্রামে সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। ওই এলাকাগুলিতে বিধানসভা ভোটের পরেও আমাদের কিছু প্রভাব ছিল। বেছে বেছে সিপিএম নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালানো হচ্ছে। তাঁদের জোর করে তৃণমূলে যোগ দিতে বলা হচ্ছে। তা না মানলেই চলছে অত্যাচার। আমাদের দলের কর্মীদের বাড়িতে অস্ত্র রেখে তা উদ্ধারের নাটক সাজাচ্ছে তৃণমূল।”
প্রশান্তবাবুর আরও দাবি, “তৃণমূলের গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব এখন এতই তীব্র যে ওরা সামাল দিতেই পারছে না। নিজেদের হাতে থাকা অস্ত্রে নিজেদের মধ্যেই খুনোখুনির আশঙ্কায় রয়েছে ওরা। তাই কৌশলে একাংশ তৃণমূল কর্মীর অস্ত্র পুলিশকে দিয়ে উদ্ধার করানো হচ্ছে। তার আগে অস্ত্র রেখে আসা হচ্ছে ঘরছাড়া সিপিএম কর্মীদের বাড়িতে। যাতে মামলায় ফেঁসে ওই সিপিএম কর্মীরা এলাকায় ফিরতে না পারেন।” তৃণমূল নেতা মামুদ হোসেনের অবশ্য পাল্টা দাবি, “সিপিএম ছেড়ে আসা কর্মীরাই ওদের নেতাদের বাড়িতে থাকা অস্ত্রের হদিস দিচ্ছে। রাতারাতি কিছু অস্ত্র শুনিয়া থেকে খেজুরির বীরবন্দর, কণ্ঠিবাড়িতেও পাচার করেছে সিপিএমের লোকেরা। সেখানেও তল্লাশি চালানো দরকার।”
এরই মধ্যে নন্দীগ্রামের নিখোঁজ-কাণ্ডে বুধবার খেজুরির কলাগেছিয়া থেকে ধৃত যুব সিপিএম-কর্মী মতিউর রহমানকে বৃহস্পতিবার হাজির করা হয়েছিল হলদিয়া এসিজেএম আদালতে। সিআইডি-র আবেদনের ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম পবিত্রকুমার সেন ধৃতকে ১৪ দিনের জন্য সিআইডি হেফাজতে রাখারই নির্দেশ দেন। ২০০৭-এর ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামে ভূমি-উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির মিছিলে হামলা এবং ভূমি-কমিটির বেশ কয়েক জনকে ‘গুমখুনে’ এই যুব সিপিএম-কর্মী অন্যতম মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন বলে দাবি সিআইডি অফিসারদের।
|
|
|
|
|
|