চুনাপাথরের গুহায় ঘুরতে যাওয়াই কাল হল। বদ্ধ গুহার মধ্যে মাথা ঘুরে উঁচু থেকে আছড়ে পড়লেন বনহুগলির বাসিন্দা উজ্জ্বল ঘোষ (৫৪)। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। গত কাল চেরাপুঞ্জি বা সোহরার বিখ্যাত মওসমাই বা বশিষ্ঠ গুহায় এই ঘটনাটি ঘটে।
সোহরা বাজার থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে মওসমাই গুহা। এই এলাকায় প্রায় ২০০টি এমন চুনাপাথরের গুহা রয়েছে। তবে পর্যটকদের আনাগোনা এই একটি গুহাতেই। নতুন ও পুরনো, দুই ভাগে ভাগ করা রয়েছে মওসমাই। পুরনো অংশে আলোর ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানেই এক দিক থেকে ঢুকে, সংকীর্ণ পথ ও পাথুরে উঁচু-নীচু সুড়ঙ্গ পার হয়ে অন্য দিকে দিয়ে বের হওয়ার রাস্তা। ভিতরে ঢুকে হামেশাই ভয় পেয়ে বা দম আটকে বেরিয়ে আসে পর্যটকরা।
কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্টের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র উজ্জ্বল ঘোষ, পড়শি তথা বন্ধু সুনীল ঘোষের সঙ্গে গুয়াহাটি ঘুরে মেঘালয়ে আসেন ১৩ ডিসেম্বর। |
মওসমাই-এর চুনাপাথরের সেই গুহা। নিজস্ব চিত্র। |
গত কাল মেঘালয় পর্যটন বিকাশ নিগমের প্যাকেজ ট্যুরেই চেরাপুঞ্জি যান তাঁরা। সঙ্গে অন্য পর্যটকরাও ছিলেন। শিলং থেকে ফোনে সুনীলবাবু বলেন, “গুহার ভিতরে অনেকটা যাওয়ার পরেই উজ্জ্বল অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমি পিছনে ছিলাম। ও পিছন দিকে ফিরে কোনওমতে বলল, শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। তারপরেই পড়ে গেল। আমি চীৎকার করে বাকিদের ডাকলাম। সবাই মিলে ধরাধরি করে ওকে বাইরে এনে শোয়ানো হয়। প্রাথমিক শুশ্রূষার পরেও জ্ঞান ফেরেনি। উজ্জ্বলকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ।”
সোহরার এসডিপিও হারবার্ট বলেন, “সম্ভবত গুহার মধ্যে শ্বাসরোধ হয়ে উজ্জ্বলবাবুর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। আজ মৃতদেহের ময়না তদন্ত হয়েছে। উজ্জ্বলবাবুর সহকর্মীরা দেহটি কলকাতা নিয়ে যাবেন।” উজ্জ্বলবাবুর বাড়ি বনহুগলির ৪৩ নম্বর বাস স্ট্যান্ডের কাছে, গোপাল লাল ঠাকুর রোডে। বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী ও এক মেয়ে। কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্টের দুই কর্মী অঞ্জনকুমার রায় ও শঙ্কর পাল আজ শিলং এসে পৌঁছান। শঙ্করবাবু বলেন, “আজই ফেরার টিকিট ছিল। তবে রাস্তায় এত যানজট থাকায় ফেরা হবে না। আগামী কাল দেহ নিয়ে রওনা হব। বেড়াতে এসে উজ্জ্বলদা আর ফিরবেন না, ভাবতেই পারছি না।” |