দু’রাতে নানুরের বাইতাড়া গ্রামে পুড়ল ৫টি বাড়ি। তার মধ্যে একটি এক তৃণমূল কর্মীর বাকি চারটি সিপিএম সমর্থকের। স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূল, সিপিএম একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে এবং দুই দলের নেতৃত্ব অভিযোগ অস্বীকারও করেছেন।
গ্রামটি নওয়ানগরকড্ডা পঞ্চায়েতের অধীন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত দেড়টা নাগাদ বাইতাড়া উত্তরপাড়ার বাসিন্দা তৃণমূল কর্মী হুমাই শেখের বাড়িতে প্রথম আগুন লাগে। বসতবাড়ি, গোয়ালঘর, খড়ের গাদা পুড়ে গিয়েছে। অগ্নিদগ্ধ হয়েছে সাতটি গরু। ৫টি ছাগল মারা গিয়েছে। হুমাই শেখের স্ত্রী হাসিনা বিবি জানান, পড়শিদের চিৎকার শুনে তাঁরা উঠে দেখেন সব জ্বলছে। চেষ্টা করেও তাঁরা বাঁচাতে পারেননি। তাঁর অভিযোগ, “রাজনৈতিক আক্রোশে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই কাজ করেছে।” |
পুড়ে যাওয়া বাড়ি। ছবি: সোমনাথ মুস্তাফি। |
পরের দিন অর্থাৎ বুধবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ আগুন লাগে দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা সিপিএম সমর্থক মহম্মদ নাসির শেখ, মহম্মদ মফিজুল শেখ, উত্তরপাড়ার মহম্মদ বিল্লাল শেখ এবং আকলিমা বিবিদের বাড়ি কিংবা গোয়াল ঘরে আগুন লাগে। অন্যান্যদের তেমন ক্ষতি না হলেও নাসির শেখের বসতবাড়ি পুরোপুরি পুড়ে গিয়েছে। নাসির শেখ এবং মফিজুল শেখদের অভিযোগ, “তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বহিরাগত এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা ছিনিয়ে নিয়েছিল। গ্রামে বহিরাগত দুষ্কৃতীদের হামলা হতে পারে এই আশঙ্কায় আমরা টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিই। সেই আক্রোশে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা আমাদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়।”
পুলিশ জানায়, দু’পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার সূত্রপাত কী নিয়ে তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সমীর ভট্টাচার্য বলেন, “পোস্তর আঠা সংগ্রহকারী বহিরাগত এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা ছিনিয়ে নেয় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার জেরে গ্রামে বহিরাগত দুষ্কৃতীদের হামলা হতে পারে বলে দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা প্রতিবাদে সরব হন। সেই আক্রোশে মিথ্যা মামলায় দলীয় কর্মী-সমর্থকদের ফাঁসানোর জন্য তৃণমূল নিজেদের বাড়ি পুড়িয়েছে। আমাদের কর্মী-সমর্থকের বাড়িতেও আগুন দিয়ে দেয়।” অন্য দিকে অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের ব্লক কার্যকরী সভাপতি অশোক ঘোষ বলেন, “এক বছর আগে ওই সব এলাকায় আমাদের তেমন কোনও সংগঠন ছিল না।” তাঁর দাবি, “এখন সিপিএম ছেড়ে বহু লোক আমাদের দলে যোগ দিচ্ছেন। সন্ত্রাস সৃষ্টি করে ওই দলবদল রুখতে সিপিএমের দুষ্কৃতীরা আমাদের কর্মীর বাড়ি পুড়িয়েছে। তার পাল্টা অভিযোগ করার জন্য নিজেদের বাড়িতেও আগুন দিয়েছে।”
|