মগরাহাট কাণ্ডের গুঁতোয় শীতঘুম ভেঙে শুরু ‘অভিযান’
বিপুল নিষিদ্ধ স্পিরিট, দুর্গাপুরে গ্রেফতার এক
যে কোনও বড় বিপর্যয়ের পরে প্রশাসনের টনক এক বার করে নড়ে। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে দুর্গাপুরে বেনাচিতির সিকন গলির একটি গুদাম থেকে সাড়ে পাঁচশো লিটার ওডি স্পিরিট (অর্ডিনারি ডিজেনারেটেড স্পিরিট) বাজেয়াপ্ত করেছে আবগারি দফতর। গ্রেফতার হয়েছে এক জন।
দুর্গাপুর মহকুমাশাসক আয়েষা রানি এ জানান, মগরাহাটের ঘটনার প্রেক্ষিতে আবগারি দফতরকে অভিযান চালানোর অনুরোধ জানানো হয়েছিল। প্রথমে শহর এলাকায় শুরু হলেও শীঘ্রই ব্লকগুলিতেও এই ধরনের অভিযান চালানো হবে বলে তাঁর আশ্বাস। আবগারি দফতরের পশ্চিমাঞ্চল সুপার সুজিতকুমার দাস জানান, অনুমতিপত্র না থাকায় জয়ন্ত দণ্ডপাট নামে এক ব্যক্তিকে ধরা হয়েছে।
দুর্গাপুর আবগারি দফতরের ওসি পার্থ ঘোষ জানান, বেনাচিতিতে বাজেয়াপ্ত হওয়া স্পিরিট মূলত কাঠের আসবাবে বার্নিশ ও রং করার কাজে ব্যবহার হয়। তা রাখার জন্য আবগারি দফতরের অনুমতি লাগে। নির্দিষ্ট পরিমাণও বেঁধে দেওয়া থাকে। যেখানে সর্বোচ্চ ৪ লিটার ওডি স্পিরিট রাখার অনুমতি দেয় আবগারি দফতর, বেনাচিতিতে ধৃতের কাছে তা সাড়ে পাঁচশো লিটার পাওয়া গিয়েছে।
চোলাইয়ের জ্যারিকেন। —নিজস্ব চিত্র।
আবগারি দফতর সূত্রে জানা যায়, কাঁচা ইথাইল অ্যালকোহল বারবার শুদ্ধ করে তাতে রং ও গন্ধ যোগ করে বিদেশি মদ (ফরেন লিকার) তৈরি করা হয়। যা তত শুদ্ধ নয়, বর্ণ-গন্ধেরও বালাই নেই, তা হল দেশি বা বাংলা মদ। এই দুই ধরনের মদে বড় শারীরিক ক্ষতি বা মৃত্যুর সম্ভবনা নেই। দুর্গাপুর থানা এলাকায় সরকার অনুমোদিত দেশি মদের দোকান আছে ১১ টি, কোকওভেন থানা এলাকায় ৩টি, নিউ টাউনশিপ থানা এলাকায় ২টি, কাঁকসা থানা এলাকায় ১৬টি এবং বুদবুদ থানা এলাকায় ৮টি। এর বাইরে লেবারহাট, মায়াবাজারের জিতেননগর ক্যানাল পাড়, তামলা, আমড়াই, রায়ডাঙা, আনন্দপুরের মতো নানা এলাকায় চলছে চোলাই বা পচাইয়ের ঠেক।
মূলত নোংরা পরিবেশে গোদা উপায়ে পচাই তৈরি হয়। বিষক্রিয়ার সম্ভাবনা থাকে প্রবল। আবগারি কর্তারা জানান, সামান্য পদ্ধতিগত গোলমালে ইথাইলের বদলে তৈরি হয়ে যেতে পারে মিথাইল অ্যালকোহল, যা বিষাক্ত। চোখ নষ্ট হতে পারে, বিকল হয়ে যেতে পারে স্নায়ু। মাত্রা বেশি হলে মৃত্যুও ঘটতে পারে। চোলাইয়ে ওডি স্পিরিট মেশানো হলে তা আরও মারাত্মক হয়ে ওঠে। ইথাইল অ্যালকোহলে পিডিটিন জাতীয় সামগ্রী মিশিয়ে তার চরিত্র বদলানো হয়। চোলাইয়ের তীব্রতা বাড়ানোর জন্য ওডি স্পিরিট অল্প মেশানো হয়। কোনও ক্রমে পরিমাণ সামান্য বেড়ে গেলেই তার প্রভাব হয় মারাত্মক।
পার্থবাবু জানান, বেনাচিতিতে ধৃত ব্যক্তি চোলাইয়ে স্পিরিট মেশানোর চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে তাঁদের অনুমান। তিনি বলেন, “যে স্পিরিট উদ্ধার করা হয়েছে তা অত্যন্ত বিষাক্ত। কলকাতার কোনও জায়গা থেকে ওই স্পিরিট আনা হয়েছিল বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.