জরদা নদী সংস্কারে উদ্যোগী পঞ্চায়েত
রলা নদী কাণ্ডের পরে জরদা নদীকে দূষণ মুক্ত করতে উদ্যোগী হল ময়নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত। শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হল জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান সুনিশ্চিতকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে জমে থাকা আবর্জনা ও বালু-মাটির স্তুপ কেটে নদীর গতিপথ ফেরানোর কাজ। গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, টানা দু’মাস নদী সংস্কারের কাজ চলবে। অন্তত আটশো শ্রমিক ওই কাজ করবেন। গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ বলেন, “কীটনাশক ব্যবহার ও দূষণের কারণে সম্প্রতি জলপাইগুড়ির করলা নদীতে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে। জরদা নদী ময়নাগুড়ি শহরের লাইফ লাইন। দূষণের কবলে পড়ে ওই নদীর উদ্বেগজনক পরিস্থিতি হয়েছে। করলার মতো কোনও দুর্ঘটনা যেন এখানে না-হয় সে জন্য আমরা জরদা সংস্কারের জন্য ২০ লক্ষ টাকার আটটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি।” ময়নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের উদ্যোগে খুশি গবেষক ও রাজনৈতিক মহল। যদিও জরদা সংস্কারের কাজ প্রথম নয়। দু’বছর আগে খাগরাবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ নদী খনন ও সাফাইয়ের কাজ করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ডাম্পিং গ্রাউণ্ড না-থাকায় শহরের সমস্ত আবর্জনা নদী গর্ভে ফেলা হচ্ছে।
ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।
পুরাতন বাজারের থানা সংলগ্ন নদী চর থার্মোকল ও প্লাস্টিকে ভরে গিয়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকায় নদীর গতি রুদ্ধ হয়েছে। প্রচুর মৎস্যজীবী জরদায় প্রতিদিন মাছ শিকার করে। এ ছাড়াও নদীর জল ব্যবহার করেন আনন্দনগর, রাহুত কলোনি, ময়নাপাড়া ও মহাকালপাড়ার কয়েক হাজার মানুষ। নানা মহলে অভিযোগ উঠেছে একদিকে দূষণের কারণে বিরল প্রজাতির প্রচুর মাছ যেমন বিলুপ্ত হয়েছে একই ভাবে নদীর জল ব্যবহার করে স্থানীয় বাসিন্দারা চামড়া ও পেটের রোগে ভুগছেন। গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের এ দিনের উদ্যোগ দেখে তাই ময়নাগুড়ি কলেজের ভূগোল বিভাগের প্রধান মধুসূদন কর্মকার স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন। তিনি বলেন, “অনেক দিন থেকে জরদার ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে বলছি। এর আগে কিছু কাজ হয়েছে। কিন্তু এ বার দু’মাসের প্রকল্প হাতে নেওয়ায় দূষণের সমস্যা অনেকটাই মিটবে।” ময়নাগুড়ির পেট চিরে তিরতির করে বইছে জরদা। কিছুটা এগিয়ে জল্পেশ মন্দির ছুঁয়ে তা চলে গিয়েছে বাংলাদেশের দিকে। ‘কালিকাপুরাণ’ ও ‘কামরূপ কুলকারিকার’ মতো প্রাচীন গ্রন্থে ওই নদীর উল্লেখ রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রাচীন নদীগুলির মধ্যে জরদা অন্যতম। কিন্তু টানা কয়েক দশক দূষণের কারণে ওই প্রাচীন নদী হারিয়ে যেতে বসে। ময়নাগুড়ি ব্লক কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ঘোষাল বলেন, “এক সময় ওই নদী বেশ প্রসারিত ও গভীর ছিল। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং বসতির সম্প্রসারণের জন্য নদী বেহাল হয়ে পড়ে। শহরের আবর্জনায় মুখ ঢাকে জরদা। বাড়ে দূষণের প্রকোপ। ওই বিপদ মোকাবিলায় গ্রাম পঞ্চায়েত ভাল উদ্যোগ নিয়েছে।” ময়নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮টি প্রকল্পে নদী সংস্কারের কাজ চলবে। আনন্দনগর থেকে মহাকালপাড়া পর্যন্ত চারটি বুথের ১ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ওই কাজ হবে। পঞ্চায়েত প্রধান গোবিন্দ রায় বলেন, “নদী এলাকা পুরোপুরি দূষণ মুক্ত করা হবে।”

করলায় আজ বিশেষজ্ঞ দল
করলা নদীর জলের নমুনা পরীক্ষা করতে জলপাইগুড়িতে আসছেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ দল। আজ, শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রধান সুদীপ বরাটের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ দলটি ফের করলার জলের নমুনা নেবেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.