২০১২ সালের কেন্দ্রীয় রেল বাজেট ঘোষণা হতে তিন মাসও বাকি নেই। অথচ গত রেল বাজেটে তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত রাধিকাপুর-নিউ জলপাইগুড়ি ডিএমইউ ট্রেন চালু না-হওয়ায় উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ মহকুমার বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে। ওই ট্রেন চালু করার দাবিতে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার দরবার করেও লাভ না হওয়ায় মহকুমা জুড়ে আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ব্যবসায়ী সংগঠন ও উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের ব্যবহারকারীদের আঞ্চলিক উপদেষ্টা কমিটি। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম ভূষণ পটেল বলেন, “রাধিকাপুর নিউ জলপাইগুড়ি ট্রেন চালুর জন্য সমস্ত পরিকাঠামোই রয়েছে। একাধিক রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সংগঠনের তরফে দীর্ঘদিন ধরে ওই ট্রেন চালুর দাবি জানানো হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলেই ট্রেনটি দ্রুত চালু করা হবে।” জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অসীম ঘোষ বলেন, “প্রশাসনিক জটিলতায় রাধিকাপুর-নিউ জলপাইগুড়ি ট্রেন চালু হচ্ছে না বলে খবর পেয়েছি। দলের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ওই ট্রেন চালুর ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।” রায়গঞ্জ মহকুমার সঙ্গে শিলিগুড়ি হয়ে নিউ জলপাইগুড়ির রেল যোগাযোগ নেই। মহকুমার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের রায়গঞ্জ থেকে বাসে চড়ে শিলিগুড়িতে যাতায়াত করতে হয়। সন্ধ্যার পর বাসের অভাবে বাসিন্দারা বিপাকে পড়েন। সাধারণত রায়গঞ্জ থেকে বাসে চড়ে ১৮৭ কিলোমিটার দূরে শিলিগুড়ি যেতে সাড়ে ৪ ঘন্টা সময় লাগে। রায়গঞ্জ থেকে ডালখোলা পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক বেহাল হয়ে পড়ায় যানজটের জেরে শিলিগুড়ি যেতে ৭-৯ ঘন্টা সময় লেগে যাচ্ছে। পড়ুয়া থেকে রোগীদের শিলিগুড়িতে যেতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্তের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল কলকাতায় গিয়ে রাধিকাপুর-নিউ জলপাইগুড়ি ট্রেন চালুর দাবিতে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি জমা দেয়। তাতে কোনও লাভ হয়নি। আগামী রেল বাজেটের আগে ওই ট্রেন চালু করা না হলে জেলা জুড়ে রেল অবোরোধ করতে বাধ্য হব।” জেলা বামফ্রন্টের সচিব অপূর্ব পাল বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক ফায়দা নিতেই রেল বাজেটে রাধিকাপুর নিউ জলপাইগুড়ি ট্রেন চালুর কথা ঘোষণা করা হয়। জানুয়ারি মাসের মধ্যে ট্রেনটি চালু করা না-হলে মহকুমা জুড়ে পথ অবোরোধ ও রেল অবরোধ হবে।” |