ঝঞ্ঝার মেঘ আর উচ্চচাপের বলয়ে বন্দি শীত
ম্বা, জবরদস্ত ইনিংসের আশা তো জাগিয়েছিল প্রায় এক মাস আগে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই। কিন্তু ডিসেম্বরের পাঁচ দিন হয়ে গেল, তার আর দেখা নেই।
শীতের হলটা কী!
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দক্ষিণবঙ্গে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকার কথা ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ তা উঠে বসে আছে ১৯ ডিগ্রির কাছাকাছি! সোমবার কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৮.৫ ডিগ্রি। চলতি সময়ের স্বাভাবিকের তুলনায় তিন ডিগ্রি বেশি। উত্তরবঙ্গে এত
দিনে রীতিমতো শীত পড়ে যাওয়ার কথা ছিল। পড়েনি। সেখানকার সমতল এলাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে যাওয়ার কথা ছিল ১২ ডিগ্রিতে। কিন্তু তা ঘোরাফেরা করছে ১৭ এবং ১৮ ডিগ্রির মধ্যে। দুই বঙ্গেই আকাশ মেঘলা। কেমন যেন একটা গুমোট গুমোট ভাব। ব্যতিক্রম শুধু পাহাড়। সেখানে তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছে শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি।
পাহাড় ও সমতলের আবহাওয়ায় এখন আসমান-জমিন ফারাক। দক্ষিণবঙ্গ ও ডুয়ার্সের বাজারে শীতের সব্জি উপচে পড়ছে। শীতটাই নেই। অনেক স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষাও শেষ। শুধু শীতটাই নেই। আর ঠিক সময়ে শীত না-পড়ায় রোগজীবাণুদেরও পোয়াবারো। চিকিৎসকেরা আশা করছিলেন, তাপমাত্রা নামলেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বে রোগজীবাণুরা। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। তার ফলে ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশি থেকেই গিয়েছে। কমেনি পরিচয়হীন রোগজীবাণুর দাপটও।
নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে তাপমাত্রা যে-ভাবে নামতে শুরু করেছিল, তাতে এ বারের শীত সম্পর্কে আশাবাদী ছিলেন আবহবিদেরা। তাঁদের ধারণা ছিল, বর্ষায় এ বার পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়েছে। তাই নভেম্বর, ডিসেম্বরে ঘনঘন ঘূর্ণাবর্ত কিংবা নিম্নচাপ আর শীতের পথে তেমন বাধা সৃষ্টি করবে না। কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত হয়নি। প্রথমে একের পর এক ঘূর্ণাবর্ত যথেচ্ছ মেঘ ঢুকিয়ে দিয়েছে পরিমণ্ডলে। তাতে তাপমাত্রা তেমন নামতেই পারেনি। এক সময় ঘূর্ণাবর্ত যদিও বা সরে গেল, তার জায়গা দখল করে নিল মধ্য ভারতের উচ্চচাপ বলয় এবং বিহারের উপরে থাকা পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। এই সময়ে কড়া শীতের বদলে যে-গুমোট আবহাওয়া চলছে, তার জন্য এই দু’টি বিষয়কেই দায়ী করছেন আবহবিদেরা।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ জানান, মধ্য ভারতের উপরে এই মুহূর্তে একটি উচ্চচাপ বলয় তৈরি হয়েছে। উত্তর ভারত থেকে আসা উত্তুরে হাওয়াকে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে সেই উচ্চচাপ বলয়। শুধু তা-ই নয়, বিহারের উপর দিয়ে এখন একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা বয়ে যাচ্ছে। তার জন্য দক্ষিণবঙ্গে মেঘ ঢুকছে পরিমণ্ডলে। তাই আবহাওয়া এমন গুমোট তা হলে শীত কবে আসবে?
গোকুলবাবু বলছেন, “এই পরিস্থিতির পরিবর্তন না-হলে শীত আসবে না।” তিনি জানান, দক্ষিণবঙ্গের থেকে উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি বেশি অস্বস্তিকর। কারণ, সেখানে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাব পড়ছে বেশি। তাই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এই সময়ের স্বাভাবিকের থেকে ৫-৬ ডিগ্রি উপরে রয়েছে। উত্তরবঙ্গের সমতল এলাকার জন্য আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, “ভোরে কুয়াশা পড়বে। দিনের বেলা আকাশ মেঘে ঢাকা থাকবে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেশি থাকায় বাড়তে থাকবে অস্বস্তিও।” আশাভরসার জায়গা শুধু দার্জিলিং পাহাড়। সেখানে ভাল রকম শীত উপভোগ করা যাচ্ছে। মেঘে ঢাকা আকাশে সূর্যের দেখা নেই। তাই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছে শূন্যের কাছাকাছি। এর মধ্যেই দার্জিলিঙের পাহাড়ে হাল্কা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহবিদেরা। তাতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.