তাজিয়ার শিল্পকর্ম নিয়ে থিমের লড়াই
যেন একে অন্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার ‘লড়াই’। ‘লড়াই’ থিমের। শিল্প-নৈপুণ্যের।
মহরম এলেই কেশপুরের বেশ কয়েকটি গ্রামে তাজিয়া তৈরির ব্যস্ততা শুরু হয়। কোথাও স্থানীয় গ্রামবাসীরাই তাজিয়া তৈরি করেন। কোথাও বাইরে থেকে শিল্পী এনে তাজিয়া তৈরি করানো হয়। কোন গ্রামের তাজিয়ার কী থিম, তা গোপন রাখারও চেষ্টা হয়।
আজ, মঙ্গলবার মহরম। তার অনেক আগে থেকেই অবশ্য সাজো-সাজো রব পড়ে গিয়েছে কেশপুরে। আট থেকে আশি, ছেলেবুড়োর যেন ফুরসতই নেই। কোনও না কোনও ভাবে প্রায় সবাই লেগে পড়েছেন তাজিয়া তৈরিতে। তাজিয়া তৈরি দেখতে গ্রামের আরও অনেকেও ভিড় করছেন। যাওয়া-আসার পথেও অনেকে খোঁজ নিচ্ছেন, কাজ কতদূর এগোল? রাতের মধ্যে শেষ হবে তো? উদ্যোগীদের আশ্বাস, চিন্তার কারণ নেই। রাতের মধ্যে সব কাজ শেষ হবে।
ত্রিপল দিয়ে ঘিরে তাজিয়া তৈরি উঁচাহার গ্রামে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
সোমবার দুপুরে কেশপুরের উঁচাহার গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, একটা জায়গায় গ্রামবাসীদের জটলা। পাশেই তাজিয়া তৈরির কাজ চলছে। এক দিক ত্রিপল দিয়ে ঘেরা। স্থানীয় এক গ্রামবাসী বলছিলেন, “থিম ‘চুরি’ হতে পারে। তাই ত্রিপল দিয়ে ঘিরে রেখে কাজ চলছে। আমাদের দেখে অন্য কেউ যেন এমন তাজিয়া তৈরি করতে না পারে।” এ বার সেখানে মসজিদের অনুকরণে তাজিয়া তৈরি হয়েছে। টানা দু’সপ্তাহ ধরে কাজ চলেছে। তাজিয়ায় থাকছে থার্মোকলের সুদৃশ্য কাজ। আগে বাঁশ-কঞ্চির উপর নানা রংয়ের কাগজ সাঁটিয়েই তাজিয়া তৈরি হত। কিন্তু, ক’বছর হল বাঁশ-কঞ্চির ব্যবহার কমে থার্মোকলের ব্যবহার বেড়েছে। তবে, মূল কাঠামো আগের মতোই বাঁশ দিয়েই তৈরি হয়।
উঁচাহার গ্রামের ময়তাব হোসেন বলেন, “প্রতি বছর কোনও না কোনও থিমে তাজিয়া তৈরি হয়। থার্মোকলের উপর রং দেওয়ার ফলে দেখতেও ভাল লাগে।” তাঁর কথায়, “সেই অর্থে প্রতিযোগিতা নয়, তবে একে অন্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার তাগিদ একটা থাকেই।” ছুতাগেড়্যার পাশেই কাঁটাগেড়্যা। এখানেই মহরমের মেলা বসে। এই এলাকা সংলগ্ন প্রায় বেশ কয়েকটি গ্রামে তাজিয়া তৈরি হয়। এর মধ্যে রয়েছে মাজুরহাটি পূর্ব ও পশ্চিম, উঁচাহার, গোপীনাথবাটি, চন্দনগেড়্যা, চকড়াগব, আমলদা, আখড়াপাতা। মঙ্গলবার দুপুরে সংলগ্ন এলাকার গ্রামগুলি থেকে তাজিয়া এসে পৌঁছবে ছুতারগেড়্যায়। পরে শোভাযাত্রা সহযোগে তা আকুন্দি গোলাঘর, আমডুবি এলাকা ঘুরে ফের ছুতারগেড়্যা সংলগ্ন কাঁটাগেড়্যায় পৌঁছবে। মাজুরহাটিতেও (পূর্ব) সুদৃশ্য তাজিয়া তৈরি হয়েছে। এ কাজ যাঁরা দেখভাল করছেন, তাঁদেরই অন্যতম শেখ আসিরুদ্দিন। তাঁর কথায়, “এই সময় পুরো এলাকায় কারও নাওয়া-খাওয়ার সময় থাকে না। ”
শোভাযাত্রার দিন তাজিয়া দেখতে প্রচুর মানুষ রাস্তার দু’ধারে ভিড় করেন। ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবাই মিলে যান মহরমের মেলায়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.