অনির্দিষ্ট কাল বন্ধ খাদান-ক্রাশার
নিরাপত্তার দাবি তুলে অনির্দিষ্টকালের জন্য সমস্ত ক্রাসার ও খাদান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল রামপুরহাটের বারমেসিয়া, বড়পাহাড়ি, ধরমপাহাড়ি ও দিঘলপাহাড়ি এলাকার পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতি। ওই সমস্ত ব্যবসায়ী মালিক সমিতির পক্ষে সুকুমার মিত্র, পনি বিশ্বাস, রাজেল শেখরা বলেন, “আমাদের পাথর খাদান ও ক্রাসারের বৈধতা ও অবৈধতার প্রশ্নে সমস্ত কাগজপত্র প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছি। দূষণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার পরে পরে যদি কোনও ব্যবসায়ীর কাগজপত্রে ঠিক নেই বা বৈধ নয় বলে প্রশাসন জানায়, তা হলে ওই ব্যবসায়ী ব্যবসা চালাবে না। যখন কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখার কাজ চলছে সেই সময়ের মধ্যে খাদান বা ক্রাশার চালু রাখলে ব্যবসায়ী, কর্মচারীদের মার খেতে হচ্ছে আদিবাসী গাঁওতার সদস্যদের হাতে। তাই নিরাপত্তার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্যবসা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
পাথর শিল্পাঞ্চলে দূষণ নিয়ন্ত্রণে পাথর ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলে বৈঠক করে বন্ধের ডাক গিয়েছিল আদিবাসী গাঁওতা। রবিবার সেই বৈঠক থেকে ফেরার পথে আদিবাসী গাঁওতার সদস্যেরা পাথর ব্যবসায়ী ও কর্মীদের উপরে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। ওই দিন সন্ধায় সমিতির পক্ষ থেকে আদিবাসী গাঁওতার নেতৃত্ব রবীন সোরেনের বিরুদ্ধে রামপুরহাট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়।
নিরাপত্তার দাবি ব্যবসায়ীদের বন্ধের সমর্থনে অবরোধ। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।
নিরপত্তার দাবি তুলে সোমবার ব্যবসা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মালিক পক্ষ। তাই এ দিন সকাল থেকে রামপুরহাট থানার ঝনঝনিয়া মোড়ে পথ অবরোধ করে। পাথর বোঝাই করতে আসা ট্রাকগুলিকে তারা আটকে রাখলেও অন্য গাড়িগুলিকে ছেড়ে দেয়। এ দিন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রামপুরহাট-দুমকা রোডের উপরে থাকা ক্রাশারগুলি বন্ধ ছিল। তবে বড়পাহাড়ি গ্রাম লাগোয়ো কয়েকটি ক্রাশার ও খাদান খোলা ছিল। এলাকার ১৩টি খাদানে কাজ হয়েছে বলে দাবি মালিকপক্ষের। তবে খাদান বা ক্রাশার বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছেন দিন আনা দিন খাওয়া মানুষজন। বড়পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দা ডাক্তার মুর্মু বলেন, “আমাদের গ্রামে অধিকাংশই আদিবাসী। সকলেই দিন আনে দিন খায়। ক্রাশার বা খাদানে কাজ না করলে উনুনে হাঁড়ি চড়ে না। এই অবস্থায় ক্রাশার খোলা ছাড়া বিকল্প কিছু নেই। তাই আমরা মালিক পক্ষকে ক্রাশার বা খাদান চালু রাখতে বলেছি।”
ওই এলাকার ব্যবসায়ী সুপ্রিয় চট্টোপাধ্যায়, বালকনাথ মণ্ডল, সুপ্রকাশ দাসরা বলেন, “বড়পাহাড়ি গ্রাম লাগোয়া ২০টি ক্রাশারের মধ্যে ১৪টি ক্রাশারে কাজ করতে চেয়েছিলেন শ্রমিকেরা। কিন্তু সকালে মাইকিং করে ক্রাশার ও খাদান বন্ধ রাখতে আহ্বান জানানোর জন্য অনেক শ্রমিক ফিরে যান। যে কারণে ৬টি ক্রাশার ও ১৩টি খাদানে কাজ হয়েছে।”
আদিবাসী গাঁওতার নেতৃত্ব রবীন সোরেন বলেন, “মালিকদের মধ্যে তো ঐক্য নেই। তাঁরাই ক্রাশার, খাদান বন্ধ রাখার ডাক দিচ্ছেন, আবার তাঁদেরই কেউ কেউ খোলা রাখছেন।” অন্য দিকে, মালিক সমিতি রবীন সোরেনকে গ্রেফতারের দাবিতে ঝনঝনিয়া সাঁকো থেকে রামপুরহাট থানা পর্যন্ত মিছিল করে এবং কেস নম্বর দেওয়ার দাবি জানায় তারা। এই নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তারা বচসায় জড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত পুলিশ কেস নম্বর দিয়ে দেয়। এর পরে তারা নিরাপত্তার দাবিতে মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয়। মহবকুমাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তব বলেন, “খাদান বা ক্রাশার চালাতে গেলে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ‘নো অবজেকশন’ সার্টিফিটেক লাগবে। তা ছাড়া, বৈধ কাগজপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের ‘নো অবজেকশন’ সার্টিফিটেকও দিতে হবে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের লোকজন যেহেতু দুর্গাপুর থেকে আসেন, তাই দূষণ নিয়ন্ত্রণের কাগজ পরীক্ষার ক্ষেত্রে সময় লাগবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.