শীর্ষ নেতা কিষেণজির মৃত্যুতে মাওবাদীরা বড়সড় ধাক্কা খাবে বলে মনে করেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। এক সময় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন তিনি। প্রাক্তন এই আইপিএস অফিসার বিভিন্ন সময়ে মাওবাদী সমস্যার সমাধানে সরাসরি সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন। গত ২৪ নভেম্বর পশ্চিম মেদিনীপুরের বুড়িশোলের জঙ্গলে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মাওবাদী নেতা কিষেণজির মৃত্যু হয়। সোমবার কলকাতায় এক আলোচনাচক্রে সেই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে এই মন্তব্য করেন রাজ্যপাল।
নারায়ণন বলেন, “এই ধরনের আন্দোলনে এক জনের মৃত্যুতে তেমন কিছু যায়-আসে না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মাওবাদীরা বড়সড় ধাক্কা খাবেই।” কিষেণজির মৃত্যুর পরে এই রাজ্যে মাওবাদীরা বড়সড় আঘাত হানতে পারে বলেও মনে করেছিলেন গোয়েন্দারা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এই ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ-সহ মাওবাদী অধ্যুষিত সব রাজ্যকেই সতর্ক করে দিয়েছে। রবিবার রাতেই বিহারের গয়ায় কোবরা বাহিনীর ক্যাম্পে হামলা চালায় মাওবাদীরা।
|
কলকাতায় এক আলোচনাচক্রে রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের
উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের সঙ্গে ভিক্টোরিয়ার গভর্নর অ্যালেক্স চেরনভ। —নিজস্ব চিত্র |
সোমবারে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনাচক্রেও উঠে এসেছে নিরাপত্তার প্রসঙ্গ। সন্ত্রাসবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি, সাইবার ক্রাইমের প্রসঙ্গ টেনে রাজ্যপাল সেখানেই বলেন, “নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া ইদানীং গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া খবর এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কৌশল আদানপ্রদান শুরু করেছে।” ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে-সব দেশ সব চেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠতে চলেছে, তার মধ্যে ভারতের সঙ্গে সঙ্গে রয়েছে অস্ট্রেলিয়াও। রাজ্যপাল বলেন, “কোনও দেশই এখন আর একা নিজেকে সুরক্ষিত করতে পারে না। অন্য দেশের সাহায্য লাগে। ভারত ও অস্ট্রেলিয়া আগামী দিনের এই দুই শক্তিশালী দেশের মধ্যে সহযোগিতার ভিত্তি গড়ে উঠলে সেটা তাদের আরও সুরক্ষিত করবে।”
ভারতের সঙ্গে সঙ্গে চিনও অন্যতম শক্তিশালী দেশ হিসেবে দ্রুত উঠে আসায় এই ধরনের সহযোগিতার আরও বেশি প্রয়োজন দেখা দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বিভিন্ন বক্তা। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেন, “কলকাতা ও মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ও গবেষকদের মধ্যে শিক্ষা বিনিময় কর্মসূচি রয়েছেই। এ বার দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও বাড়ানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে।” ভারতে অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার পিটার ভার্গিজ, ভিক্টোরিয়ার গভর্নর অ্যালেক্স চেরনভ আলোচনাচক্রে উপস্থিত ছিলেন। |