অনাস্থা-বিতর্কে নয়া মাত্রা অন্ধ্রে
‘পায়ে ধরে’ না ‘ছুরি মেরে’ মুখ্যমন্ত্রী, তরজা বিধানসভায়
প্রস্তাবটা ছিল সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে। কিন্তু তার উপরে আলোচনাটা হল একেবারেই অন্য বিষয়ে। ‘সনিয়া গাঁধীর পা ধরে’ নাকি ‘শ্বশুরকে পিছন থেকে ছুরি মেরে’ কে কী ভাবে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, সেই প্রশ্ন তুলেই চলল আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ। অনাস্থা প্রস্তাবের ‘বিরুদ্ধে’ বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী কিরণকুমার রেড্ডি। আর ‘পক্ষে’ বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু। আইনসভায় গণ্ডগোল-হাতাহাতির অনেক নজির থাকলেও পরিষদীয় বিতর্ককে কতটা কুৎসার পর্যায়ে নামিয়ে আনা যায়, আজ তারই সাক্ষী হয়ে রইল অন্ধ্রপ্রদেশ বিধানসভা। প্রস্তাবটি নিয়ে বিধানসভায় এ দিন রাত পর্যন্ত আলোচনা হয়।
অনাস্থা প্রস্তাব এনে তেলুগু দেশম পার্টির নেতা চন্দ্রবাবু আজ অধিবেশনের শুরুতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের তীব্র ব্যর্থতার কথা তুলে ধরেন। প্রথম দিকে কিরণকুমারকে সরাসরি আক্রমণ না করে তিনি বলেন, “আমরা শুধু মুখ্যমন্ত্রী নয়, সব মন্ত্রীর বিরুদ্ধেই অনাস্থা প্রস্তাব এনেছি। এই সরকারের উপর আমাদের আস্থা নেই।” সঙ্গে সঙ্গেই রেড্ডি বলেন, “চন্দ্রবাবু আমাদের উপর আস্থা রাখতে পারছেন কি না, তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। মানুষ আস্থা রাখেন বলেই আমরা ক্ষমতায় রয়েছি।”
চন্দ্রবাবু নায়ডু কিরণকুমার রেড্ডি
এর পরই শুরু হয়ে যায় কাদা ছোড়াছুড়ি। চন্দ্রবাবু বলেন, “আপনি তো সনিয়া গাঁধীর পায়ে ধরে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। নেতৃত্ব দেওয়ার মেরুদণ্ডই নেই আপনার।” জবাবে রেড্ডি বলেন, “১৯৬২ সাল থেকে আমাদের পরিবার ১২টা নির্বাচনে কংগ্রেসের হয়ে জিতেছে (কিরণের বাবা প্রয়াত অমরনাথ রেড্ডিও কংগ্রেস বিধায়ক ছিলেন)। তা ছাড়া, আমার উপর দলের বিধায়কদের আস্থা আছে, সনিয়া গাঁধীর আশীর্বাদ আছে। আপনার মতো শ্বশুরকে পিছন থেকে ছুরি মেরে আমি মুখ্যমন্ত্রী (১৯৯৫) হইনি।” চন্দ্রবাবু বলেন, “আমি নিজের ক্ষমতায় নেতা হয়েছি। সনিয়া গাঁধীর দয়ায় নয়।” ২০০৪ সাল থেকে চলতে থাকা কংগ্রেস সরকারের সময়ে বিভিন্ন দুর্নীতির কথাও উল্লেখ করেন চন্দ্রবাবু। সঙ্গে সঙ্গে রেড্ডি বলেন, “সম্পত্তি মামলায় এখনও আপনার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চলছে। দুর্নীতি নিয়ে কথা আপনাকে মানায় না।”
এর পর পোলাভারম প্রকল্পের টেন্ডার ডাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগও তোলেন নায়ডু। বলেন, কংগ্রেস এবং তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির সমিতির আঁতাঁতেই অযোগ্য একটি সংস্থাকে প্রকল্পটির কাজ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ের যাবতীয় ফাইলও লোপাট করে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতিবাদে ফেটে পড়েন তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতির সমিতির বিধায়করা।
অন্ধ্রের ২৯৪ আসনের বিধানসভায় ৭টি আসন শূন্য রয়েছে এখন। ফলে গরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য দরকার ১৪৪ জনের সমর্থন। আর কংগ্রেসের বিধায়ক রয়েছেন ১৫৩ জন। কিন্তু দলে তেলেঙ্গানা রাজ্যের দাবিদাররা ডোবাতে পারেন এমন আশঙ্কা কংগ্রেসের ছিলই। তার সঙ্গে ১৮ জন বিধায়ককে নিয়ে কংগ্রেসে যোগ দেওয়া অভিনেতা-নেতা চিরঞ্জীবী বেঁকে বসায় সব হিসেব উল্টে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে শেষ মুহূর্তে। কংগ্রেসের সাম্প্রতিক ব্যবহারে ক্ষুব্ধ চিরঞ্জীবী। তাঁর অভিযোগ, তাঁর প্রজারাজ্যম পার্টি (পিআরপি) কংগ্রেসে মিশে যাওয়ার পর থেকেই আর তেমন গুরুত্ব পাচ্ছেন না। বরং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস আরের ছেলে জগন্মোহন রেড্ডির দল থেকে যাঁরা ঘরে ফিরছেন, তাঁদের জন্যই লাল কার্পেট বিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গত কাল তিনি দলের বিধায়কদের বলেও দেন, তাঁরা যেন সরকারের বিপক্ষে ভোট দেন। ফলে এ নিয়ে বেশ অস্বস্তিতেই রয়েছে কংগ্রেস।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.