উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ক্ষোভ মন্ত্রীর |
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস প্রভাবিত কর্মচারী সংগঠনের নানা বক্তব্য এবং সাংবাদিক সম্মেলন নিয়ে কার্যত ক্ষোভ প্রকাশ করলেন দলের জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। শুক্রবার সকালে একটি মাল্লাগুড়িতে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে কর্মচারী সমিতির সাংবাদিক সম্মেলন ডাকার খবর শুনে দলীয় মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মন্ত্রী। আগামী দিনে সংগঠনের তরফে যাতে এই ধরণের কাজ না করা হয় তা নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সতর্ক করেন মন্ত্রী। সেই সঙ্গে সংগঠনের নেতাদের সম্পর্কে খোঁজখবরও শুরু করেছেন জেলার তৃণমূল নেতারা। গৌতমবাবুর কথায়, “উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়টি স্পর্শকাতর। রাজ্য সরকার, উচ্চ শিক্ষা দফতর সমস্ত বিষয়টি দেখছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে নানা কথা বলা এবং বারবার সাংবাদিক সম্মেলন ডাকাটা ঠিক নয়। তৃণমূল কর্মচারী সংগঠনের দায়িত্বে থাকা নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। সব কিছু বুঝে শুনে মন্তব্য করা প্রয়োজন। হুটহাট সাংবাদিক সম্মেলন করার কোনও দরকার নেই।” দলীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় তৃণমূল কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন নামে কর্মীদের একটি সংগঠন তৈরি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির একাংশ নতুন সংগঠনে যোগদান করেন। তবে এখনও সংগঠনটির কোনও রেজিস্ট্রেশন করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় অচলাবস্থা, স্বাভাবিক পঠনপাঠন-সহ নানা কথা বললেও আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে তাঁরা কোনও কথা না বলায় তৃণমূলের অন্দরেই নানা প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়। এমনকি, এদিন সংগঠনের পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলনে যে প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে, তাতেও আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়টির কোনও উল্লেখ না থাকায় জেলা তৃণমূলের অনেক নেতাই আশ্চর্য হয়ে গিয়েছেন। পুরো বিষয়টি দলের নেতাদের একাংশ মন্ত্রীকে জানিয়েছেন। যদিও তৃণমূল কর্মচারী সংগঠনের নেতারা এদিন দুপুরে পূর্ব ঘোষণা মত শিলিগুড়ি জার্নালিস্ট ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেখানে যুগ্ম সম্পাদক গুরুচরণ রায় বলেন, “আমরা মন্ত্রী, স্থানীয় বিধায়ক এবং তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের জানিয়েই নতুন এই সংগঠনটি করছি। মন্ত্রী এদিন কী বলেছেন তা আমরা জানি না। মন্ত্রীর নির্দেশ সব সময় মানা হবে। আমরা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক অবস্থার দাবি করছি। আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়টি আদালতের বিচার্য বিষয় বলে আমরা কোনও মন্তব্য করছি না।”
|
এক কংগ্রেস কর্মীকে গুলি করে খুন করে পালাল তিন দুষ্কৃতী। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম জাহাঙ্গির আলম (৩৪)। শুক্রবার দুপুর দেড়টা নাগাদ কালিয়াচক থানা এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। দুষ্কৃতীরা প্রথমে জালালপুরে একটি ট্রাকের খালাসির উপর হামলা করে। তার পরে বামনগ্রামে ওই কংগ্রেস কর্মীকে গুলি করে খুন করে। ওই ঘটনার জেরে জালালপুরে উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেছে। পাশাপাশি বামনগ্রাম-মোসিমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএমের প্রধানের বাড়ি ভাঙচুর ও লুঠপাট করা হয়। জেলার পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “রাস্তা ছাড়া নিয়ে বিবাদের জেরে দুষ্কৃতীরা ট্রাকের খালাসিকে গুলি করে। পরে ওই তিন জন বামনগ্রামে এক যুবককে গুলি করে খুন করে পালিয়ে যায়। পুরানো আক্রোশের জেরে এই খুন বলে মনে হচ্ছে।” সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জখম ওই খালাসি ভি ভাগ্যরাও বলেন, “ট্রাক না থামানোয় দুস্কৃতীরা আমাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তারপরে ট্রাক থামালে দুষ্কৃতীরা ১৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।” ঘটনাস্থলেই জাহাঙ্গির আলমের মৃত্যু হয়। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ জালালপুরে পৌঁছতেই স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। উত্তেজিত বাসিন্দারা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেন। এরপরই পুলিশ লাঠিচার্জ করে পথ অবরোধ তুলে দেয়। অন্যদিকে দুষ্কৃতীদের হামলায় কংগ্রেস কর্মী জাহাঙ্গীর আলম খুনের পরই উত্তেজিত বামনগ্রামের বাসিন্দারা সিপিএমের প্রধান জেরিনা বেগমের বাড়ি হামলা করেন। ওই বাড়িতে লুটপাটও করেন বলে অভিযোগ। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক দেবপ্রিয় সাহা বলেন, “এলাকা হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় সিপিএম তাদের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিয়ে হামলা করে সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক জীবন মৈত্র বলেন, “কারা খুন করেছে সেটা সকলেই দেখেছে। ওই তিন দুষ্কৃতীর সঙ্গে সিপিএমের কোনও সম্পর্ক ছিল না।”
|
গ্রামবাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বিএসএফের |
গাঁজা পাচারে জড়িত সন্দেহে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতারের ঘটনার জেরে গ্রামবাসী-বিএসএফ সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহারের শীতলখুচি। শুক্রবার সন্ধ্যায় শীতলখুচি থানার কাছে ওই সংঘর্ষে বিএসএফের দুই জওয়ান এবং এক পুলিশ কর্মী জখম হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিএসএফের একটি গাড়িও উত্তেজিত জনতা ভাঙচুর করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিএসএফের তরফে শূন্যে এক রাউন্ড গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে রাতেই ওই এলাকায় গিয়েছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক হিতেন বর্মন। কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “পাচারকারী সন্দেহে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনতা ও বিএসএফের গোলমাল বাঁধে। তাতে বিএসএফের দুই জওয়ান ও এক পুলিশ কর্মী জখম হয়েছেন। বিএসএফের তরফে শূন্যে গুলি চালানো হয় বলে শুনেছি।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন বিকেলে বিএসএফ জওয়ানরা শীতলখুচি থানার নগর সিঙ্গিমারি গ্রামের সীমান্ত এলাকা থেকে মফিজউদ্দিন মিয়াঁ নামে এক ব্যক্তিকে গাঁজা-সহ হাতেনাতে ধরে। বিএসএফে তরফে ওই ব্যক্তিকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই শীতলখুচি বাসস্ট্যান্ডের সামনে বিএসএফের একটি গাড়ি ঘিরে ধরেন উত্তেজিত জনতা। ওই গাড়িতে ধৃত ব্যক্তিকে রাখা হয়েছে সন্দেহ করে বিক্ষোভ শুরু হয়। তা নিয়ে উত্তেজনা শুরু হলে উত্তেজিত জনতা গাড়ি লক্ষ্য করে ঢিলও ছোঁড়ে বলে অভিযোগ। বিএসএফ জওয়ানরাও পাল্টা মার দেন বলে অভিযোগ। সংঘর্ষের সময়ে বিএসএফের ইন্সপেক্টর রণবীর সিংহ এবং কনস্টেবল রাজেশ কুমার জখম হন। গোলমালের সময়ে সেখানে হাজির হয় পুলিশের একটি জিপ। ওই জিপের আরোহী কনস্টেবল মন্তেশ্বর র্বনও জখম হন। এর পরেই বিএসএফের তরফে শূন্যে গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পাচারকারী সন্দেহে ধৃত ব্যক্তির সম্পরর্কে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।” এলাকার ব্লক তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি মদন বর্মনের দাবি, “এলাকার লোকজনের কাছ থেকে শুনেছি ধৃত ব্যক্তি জমিতে কাজ করছিলেন। সেই সময়ে তাকে জওয়ানরা ধরলে উত্তেজনা ছড়ায়।”
|
ইটাহারে দুর্ঘটনায় মৃত তিন |
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকা অন্য একটি ট্রাকের পিছনে ধাক্কা মারায় তিন জনের মৃত্যু হল। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহার থানার শ্রীপুর এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে। মৃতদের নাম ইব্রাহিম শেখ (১৯), নজরুল শেখ (৪০) ও মোর্তুজ আলি (৪৫)। তাঁদের বাড়ি মালদহের কালিয়াচক থানার সুলতানগঞ্জ এলাকায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় পিছনের ট্রাকের চালক ও দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের এক যাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের চালক ও খালাসি-সহ দুটি ট্রাককেই আটক করেছে। |