গোটা সড়ক জুড়ে শুধু ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দই নয়, মাটির রাস্তাকেও হার মানায় জাতীয় সড়ক। পিচের চাদর উঠে যাওয়ায় রাস্তা দিয়ে যখন গাড়ি যাতায়াত করে তখন ধুলোয় ঢেকে যায় সড়ক-সহ আশেপাশের এলাকাও। বেহাল রাস্তায় দুর্ঘটনাও নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই বেহাল সড়ক ধরেই জেলা সদর মালদহে যাতায়াত করেন চাঁচল মহকুমা প্রশাসনের কর্তারা। তারপরেও প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ তুলে ৬ ঘন্টা ধরে ৮১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন ব্যবসায়ী-সহ এলাকার বাসিন্দারা। মালদহের সামসিতে শুক্রবার ওই জাতীয় সড়ক অবরোধের ঘটনাটি ঘটে। অবরোধের জেরে মালদহের সঙ্গে চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুরের যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় চূড়ান্ত বিপাকে পড়তে হয় নিত্যযাত্রীদের। পরে প্রশাসনের তরফে এলাকায় গিয়ে আশ্বাস দেওয়ার পর বিকাল ৫টায় অবরোধ তুলে নেন বাসিন্দারা। চাঁচলের ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক অশোক সরকার বলেছেন, “জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওই সড়ক সংস্কারের টেন্ডারও হয়ে গিয়েছে। দ্রুত সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হবে বলে ওঁরা জানিয়েছেন। অবরোধকারীদের তা জানানো হয়েছে।” বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, গত বর্ষার সময়ই গাজল থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটার জাতীয় সড়কের পুরোটাই সম্পূর্ণ বেহাল হয়ে পড়েছে। ওই সড়ক ধরে মালদহ যেতে দ্বিগুনেরও বেশি সময় লাগছে। খারাপ রাস্তায় যাতায়াত করতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠছে যাত্রীদের। ঘটছে আকছার দুর্ঘটনাও। অবরোধকারীরা জানান, সামসি এলাকায় রাস্তার পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক। সামসি থেকে চাঁচল বা মালদহমুখি রাস্তা দুটোতেই ২ কিলোমিটার রাস্তা প্রায় নেই বললেই চলে। যাতায়াতের সময় ধুলোর চোটে এলাকার পরিবেশ বিষিয়ে উঠেছে। সামসি এলাকাতেই রাস্তার পাশে রয়েছে একটি প্রাথমিক স্কুল। ধুলোর যন্ত্রণায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে পড়ুয়াদেরও। এদিন সকাল ১১টা থেকে সামসির দুর্গাবাড়ি এলাকায় জাতীয় সড়কের উপরেই তা সংস্কারের দাবিতে সড়কের উপর বেঞ্চ পেতে অবরোধ শুরু করেন তাঁরা। অবরোধে সামিল হয় এলাকার পড়ুয়ারাও। সামসি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক প্রবীর চৌধুরি বলেন, “মহকুমা প্রশাসনের কর্তারা এই পথেই যাতায়াত করেন। কারও হেলদোল নেই। বর্ষার পর থেকে এই অবস্থা চলছে। গ্রামের মাটির রাস্তাও এর থেকে অনেক ভাল। আর কতদিন ভুগতে হবে আমাদের? বাধ্য হয়েই আন্দোলনে নামতে হয়েছে।” |