নিরাপত্তাহীন প্রতীক্ষালয়ে শুধুই উদ্বেগ
প্রতি দিন রাতে চরম নিরাপত্তাহীন অবস্থায় জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে রাত কাটাতে বাধ্য হন রোগীর আত্মীয়স্বজনেরা। হাসপাতালগুলির প্রতীক্ষালয়গুলির অবস্থা ঠিক কী, তার প্রমাণ সদ্য পাওয়া গিয়েছে কৃষ্ণগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে রাতে প্রতীক্ষালয়ে ঢুকে দুই ব্যক্তি অন্যদের ‘মিষ্টি’ খেতে দেন। ওই দুই ব্যক্তি বলেন, তাঁদের এক জন আত্মীয়ের ‘মেয়ে হয়েছে’, সেই আনন্দেই তাঁরা ‘মিষ্টি’ খাওয়াচ্ছেন। প্রতীক্ষালয়ে অন্য যাঁরা ছিলেন, তাঁরা তাই কোনও অবিশ্বাস না করেই ‘মিষ্টি’ খেয়ে নেন। কিন্তু ‘মিষ্টি’র সঙ্গে এমন কিছু মেশানো ছিল, যাতে তারপরে তাঁরা অচৈতন্য হয়ে পড়েন। তখন তাঁদের সব টাকা পয়সা লুঠ করে পালায় ওই দুই ব্যক্তি।
বছর দু’য়ের আগেও এমনই ঘটনা ঘটে কৃষ্ণনগর জেলা সদর হাসপাতালেও। এ ছাড়া, একাধিকবার স্থানীয় দুষ্কৃতী ও মদ্যপ যুবকদের হাতে রাতের অন্ধকারে রোগীর বাড়ির লোকজনকে আক্রান্ত হতে হয়েছে। করিমপুর থেকে কল্যাণী পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন হাসপাতালেই বারবার এই অভিযোগ উঠেছে। সদর ও শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের সুপার কাজল মণ্ডলের বক্তব্য, “দু’টি হাসপাতালেই রোগীর বাড়ির লোকেদের থাকার জন্য ঘর রয়েছে। সেখানে হাসপাতালের কার্ড দেখিয়ে ন্যূনতম টাকায় থাকা যায়। কিন্তু অনেকেই হাসপাতাল চত্বরেই রাত কাটান। তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। রাত বাড়লেই হাসপাতাল চত্বরে মাতালের উপদ্রব বাড়ে। মদের আসরও বসে। লুঠপাটের ঘটনাও ঘটেছে। আমরা বারবার স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে সব কথা জানিয়েছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।”
একই অবস্থা করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতাল, চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতাল, বেথুয়াডহরি গ্রামীণ হাসপাতালেও। হাসপাতাল চত্বরেই রাত কাটাতে হয় রোগীর বাড়ির লোকজনকে। দু’একটি হাসপাতালে রাতে থাকার মতো ঘর থাকলেও তা যে নিরাপদ নয়, তার প্রমাণ মিলেছে কৃষ্ণগঞ্জ হাসপাতালের ঘটনা থেকেই। বেথুয়াডহরি হাসপাতালের সুপার জীবেশ বাইন বলেন, “রাতে কেন, দিনের বেলাও রোগী ও তাঁর বাড়ির লোকজনদের কোনও নিরাপত্তা নেই। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আমরা সে কথা জানিয়েছি। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।”
হাসপাতাল ও জনস্বাস্থ্য রক্ষা কমিটির নদিয়া জেলা কমিটির সম্পাদক দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “রাতে হাসপাতালে মদ্যপ থেকে দুষ্কৃতীদের হামলার আশঙ্কা থাকে। জেলা হাসপাতালে অনেক দূরদুরান্ত থেকে লোকেরা আসেন। তাঁদের কিন্তু কোনও নিরাপত্তা নেই।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অমিত হালদারের কথায়, “এটা সত্যি যে, আমরা সব হাসপাতালে রোগীর বাড়ির লোকজনের থাকার মতো ঘরের ব্যবস্থা করে উঠতে পারিনি।” পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমণ মিশ্র বলেন, “রাতে হাসপাতালে নিরাপত্তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে কৃষ্ণগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালের ঘটনার পরে রাতে হাসপাতালগুলিতে পুলিশি টহলদারি বাড়ানো হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.