পাঠ্যক্রম কমিটিতে ফিরে আসার জন্য রাজ্য সরকারের অনুরোধ ‘খোলা মনে’ ভাববেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন সুনন্দ সান্যাল। কিন্তু ইস্তফা প্রত্যাহার করলেন না তিনি। শুক্রবার রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতরের কাছে চিঠি পাঠিয়ে ওই প্রবীণ শিক্ষক জানিয়ে দিয়েছেন, পাঠ্যক্রম কমিটির চেয়ারম্যান বা সাধারণ সদস্যের দায়িত্ব পালন করা তাঁর পক্ষে আর সম্ভব নয়। তবে সরকার শিক্ষা সংক্রান্ত কোনও ব্যাপারে পরামর্শ চাইলে তিনি তা দিতে রাজি।
নতুন সরকারের গড়া স্কুলশিক্ষা পাঠ্যক্রম কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন সুনন্দবাবু। কমিটির প্রাথমিক রিপোর্টে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ধাপে ধাপে পাশ-ফেল তুলে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু সুনন্দবাবু এর সঙ্গে সহমত নন। তিনি মনে করেন, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল তুলে দিলে, অতি দুর্বল পড়ুয়াদেরও সরাসরি উপরের ক্লাসে উঠিয়ে দিলে আখেরে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থারই ক্ষতি হবে। সেই কারণেই স্কুলশিক্ষা পাঠ্যক্রম কমিটির চেয়ারম্যান হয়েও তিনি ‘নোট অফ ডিসেন্ট’ দেন। সেখানেই থেমে না-থেকে তিনি ওই কমিটির চেয়ারম্যান এবং সাধারণ সদস্যের পদেও ইস্তফা দেন।
সুনন্দবাবুকে তাঁর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে অনুরোধ জানানো হয়। বলা হয়, আগামী দিনে শিক্ষা পরিকল্পনার ব্যাপারে তাঁর পরামর্শ জরুরি। সরকারি স্তরে অনুরোধ-উপরোধের সঙ্গে সঙ্গে কমিটির সদস্যদের অনেকেই সুনন্দবাবুর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন বলেও স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর। সুনন্দবাবু তাঁদের জানান, কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি যে-দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তা ইতিমধ্যেই পালিত হয়েছে। কমিটি রিপোর্ট পেশ করেছে। তার পরেও অবশ্য রাজ্য সরকারের অনুরোধের ব্যাপারে ‘খোলা মনে বিবেচনা’র আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী ও স্কুলশিক্ষা সচিবের কাছে চিঠি পাঠিয়ে সুনন্দবাবু জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ইস্তফা প্রত্যাহার করছেন না। কমিটির চেয়ারম্যান-পদে তো থাকবেনই না। এমনকী ওই কমিটির সাধারণ সদস্যও আর থাকতে চান না তিনি। তবে উপদেষ্টা হিসেবে বৈঠকে ডাকা হলে পরামর্শ দিতে তিনি রাজি আছেন। সুনন্দবাবুর এ দিনের চিঠির ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। কমিটির পরবর্তী চেয়ারম্যান কে হবেন? শিক্ষামন্ত্রীর সংক্ষিপ্ত জবাব, “ভাবতে হবে।” |