|
|
|
|
|
|
|
নানা রকম... |
|
রঙ্গমঞ্চের জনক |
গিরিশচন্দ্র ঘোষের প্রয়াণ-শতবর্ষ দোরগোড়ায়। তাঁকে ঘিরে নানা
অনুষ্ঠান। মঙ্গলবার বিড়লা সভাঘরে। লিখছেন বিপ্লবকুমার ঘোষ |
গিরিশচন্দ্র ঘোষের প্রয়াণ-শতবর্ষ (১৮৪৪-১৯১২) উদ্যাপনের নানা প্রস্তুতি নিয়েছে অ্যাকাডেমি থিয়েটার। দেখা যাবে নানা অনুষ্ঠান, গান ও শিল্পকর্ম। বহু দিন পরে কলকাতার মানুষ শুনবেন বঙ্গভঙ্গকালীন বাজেয়াপ্ত নাটক ‘পরাধীনা জননী আমার’ মঞ্চগান। উদ্যোক্তাদের দাবি, “রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ‘ভক্ত ভৈরব’ স্বামী বিবেকানন্দের পরম বান্ধব ‘জি সি’ বা বঙ্গরঙ্গমঞ্চের জনক গিরিশকে ঘিরে এ বারের নিবেদন ‘গিরিশ পরম্পরা’। যা কলকাতার মঞ্চে সম্ভবত নতুন উদ্যোগ।” বা বলা যায়, অজানা তথ্যের আধারে মঞ্চগানের গৌরবগাথা।
আগামী মঙ্গল ও বুধবার বিড়লা সভাঘরে গিরিশকে নিয়ে চলবে দু’দিনের জানা-অজানা কথা ও কাহিনি।
কী সেই কাহিনি? উনিশ শতকের দ্বিতীয় ভাগে বনেদি বাড়ির অন্দরমহল ছেড়ে টিকিট কাটা পাবলিকের কাছে যখন খুলে গেল মঞ্চের দরজা, তখন থেকেই হাল ধরলেন গিরিশ। একাধারে অভিনেতা-পরিচালক-নাট্যকার-গীতিকার সর্বোপরি প্রযোজকের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠা করলেন গিরিশ-কর্তৃত্ব। আমৃত্যু চার দশকের বেশি অটুট রইল সেই গিরিশ-গরিমা। গিরিশের স্বীকারে,
‘তিরস্কার পুরস্কার, কলঙ্ক কণ্ঠের হার
তথাপি এ পথে পদ করেছি অর্পণ
রঙ্গভূমি ভালবাসি, হৃদে সাধ রাশি রাশি
আশার নেশায় করি জীবন যাপন।’
সমকালীন ইউরোপীয় থিয়েটারের অভিনয়-কেতায় মেলালেন সাবেকি যাত্রা-কথকতা-পাঁচালির গীতিময়তা। গিরিশের বয়ানে ‘সাত আট পাতা সংলাপের পরিবর্তে একখানা গানই তার সমাধা করতে পারে। তাই তাঁর নাটকে গান হয় সংলাপের দোসর। অ্যাকাডেমি থিয়েটারের পরিবেশনায় শোনা যাবে সেই মঞ্চগানের সম্ভার। গিরিশের আদি রচনা ‘কাল কোকিল তানে’ বা আগমনী নাটকের ‘কু-স্বপন দেখেছি গিরি’ থেকে শুরু করে ‘আবু হোসেন’ নাটকের সম্প্রীতির মঞ্চগান ‘রাম-রহিম না জুদা করো’, ম্যাকবেথের রূপান্তরে ডাইনিদের গান ‘ধলা কালী কটা কালী’ পার করে , সিরাজদ্দৌলার ‘আসছে ওই নবাব বাহাদুর’। এমনকী ভগিনী নিবেদিতাকে উৎসর্গ করা নাটক ‘তপোবলে’র ‘অবনত সসাগরা অবনী’র মতো বহু গান।
সঙ্গে নানা অজানা তথ্যসূত্র মিলবে দেবজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনা ও নির্মাণে। দেবজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে শোনা যাবে এক সময়ে গিরিশের গাওয়া মঞ্চগানও। সূত্রধরের ভূমিকায় থাকবেন অভিনেতা দীপঙ্কর দে। এই অনুষ্ঠানের ফাঁকেই দেখা যাবে এক প্রদর্শনী। যেখানে থাকবে গিরিশের চিত্রাবলি, সঙ্গে অভিনয়, বিজ্ঞাপন আর নাট্যগ্রন্থের প্রথম প্রকাশের স্বাক্ষরিত শিরোনামপত্র। যা দেখতে দর্শকমহলে এক বাড়তি কৌতূহলও তৈরি হয়েছে। অন্য দিকে দেখানো হবে স্বল্প দৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্র, যেখানে গিরিশের কিছু সংলাপকে হুবহু তুলে ধরা হয়েছে। এমনই দাবি দেবজিতের। |
|
|
|
|
|