নৃত্য সমালোচনা...
মাতিয়ে দিল অসাধারণ নৃত্যরূপ
লামন্দির প্রেক্ষাগৃহে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হল জমজমাট এক নাচের অনুষ্ঠান। যাঁকে নিয়ে দর্শকদের উৎসাহ ও কৌতূহল ছিল, তিনি ইতিমধ্যেই অভিনয় জীবনে দাপটের সঙ্গে কাটিয়ে দিলেন পঁচিশটি বছর। তিনি ক্যামেরার বাইরেও নৃত্যপ্রতিভাতেও কম কিছু যান না। এর আগেও বেশ কিছু অনুষ্ঠানে নানা আঙ্গিকে বিভিন্ন নৃত্যধারায় নিজেকে মেলে ধরেছেন দর্শকদের ভূয়সী প্রশংসা সঙ্গী করে।
কলামন্দিরে কেএফটিআই আয়োজিত সেই অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল ‘বিশ্বভরা প্রাণ বিরহ মিলন গান’। রবীন্দ্রনাথের বেশ কিছু গান ও কবিতা তিনি বেছে নিয়েছিলেন, যেখানে তিনি নৃত্যছন্দে নিজেকে মেলে ধরতে পারেন। উদ্দেশ্য সফল। ‘ভালোবাসি ভালোবাসি’ গানটির সঙ্গে ইন্দ্রাণীর শরীরী এবং মুখজ অভিনয়ের মিশ্রণে তৈরি হয়েছিল একটি অর্থবহ ছবি। নাচের প্রতি কতটা আত্মিক ভালবাসা থাকলেই সেই মিশ্রণ এক অন্য মাত্রা তৈরি করে তা ইন্দ্রাণীর নাচে পরিস্ফুট।
কলামন্দিরের অনুষ্ঠানে ইন্দ্রাণী হালদার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
সেই ভাল লাগার মাধুর্য তৈরি করতে সাহায্য করেছিল দু’জনের সুললিত কণ্ঠ। গান কবিতার কোলাজে তা পরিপূর্ণ করেছেন রায়া ভট্টাচার্য ও সত্যম রায়চৌধুরী। পরিবেশনাটিতে তার গুরুত্বও অপরিসীম। এ দিন ইন্দ্রাণীর সঙ্গে সুকল্যাণও কম যাননি কিছু। সুকল্যাণ এবং সংস্থার ছেলেমেয়েরা নৃত্য ঘরানার রীতি ও আঙ্গিক বজায় রেখে ইন্দ্রাণীর সঙ্গে তাল মেলালেন। ‘একটুকু ছোঁয়া লাগে’, ‘শ্রাবণের গগনের গায়ে’ প্রভৃতি গানের সঙ্গে ইন্দ্রাণী ও সুকল্যাণের যৌথ নৃত্য পরিবেশন অনবদ্য। ‘একটুকু ছোঁয়া লাগে’ গানের সঙ্গে নৃত্য যখন শেষ হয় তখন দর্শকদের উচ্ছ্বাস বহু দিন বাদে দেখা গেল কলকাতার কোনও মঞ্চে।
শুরুতে অবশ্য সংস্থার খুদে শিল্পীরা পরিবেশন করেছিল সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিপ্রেক্ষিতে ‘প্যাশন অব গ্রিন ব্লাড’। এটি মূলত উত্তরাখণ্ডের চিপকো আন্দোলন অবলম্বনে রচিত হয়েছে। পরিচালক ছিলেন সুকল্যাণ ভট্টাচার্য। পরবর্তী নিবেদন ছিল ‘রবিরঙ্গ’ নৃত্যনাট্য। পরিবেশন করলেন গৌতম হালদারের পরিচালনায় সংস্থার শিশুশিল্পীরা। অনুষ্ঠানের অনেক বৈচিত্রের মধ্যে এটিও সার্থক সংযোজন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ইন্দ্রাণী সম্পর্কে নানা কথায় ব্যাখ্যা করলেন তাঁর নিজস্ব অনুভূতি। যার মূল কথা হল চলমান চিত্রের বৈশিষ্ট্য কখনওই চমক সৃষ্টি করা নয়, অর্থবহ আনন্দের সৃষ্টি করা। সত্যি কথা বলতে অনুষ্ঠান শেষে বলতেই হয়, ইন্দ্রাণীর ক্ষেত্রে তা সফল।

বিভিন্ন ধারার নৃত্য সমন্বয়
সম্প্রতি জ্ঞানমঞ্চে বাণীচক্রের ছাত্রীদের দ্বারা পরিবেশিত হয় ‘শারদ নৃত্যাঞ্জলি’। শুরুতে পরিবেশিত হয় রবীন্দ্রনাথের গানে আধারিত নৃত্য ‘প্রথম আদি তব শক্তি’। এর পর প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীবৃন্দ উপস্থাপন করে ভরতনাট্যম নৃত্যশৈলীর কিছু শুদ্ধ ও ধারাবাহিক নৃত্যাংশ যেমন, শ্লোকম, গণেশবন্দনা, তোড়িয়াম, তিল্লানা ইত্যাদি। এই পর্যায়ের সমাপ্তি ঘটে রীতা চক্রবর্তী পরিবেশিত লিঙ্গস্তোত্রম-এর মাধ্যমে। পরবর্তী পর্যায়ে কত্থক নৃত্যের আঙ্গিকে উপস্থাপিত হয় বন্দনা, তারানা, ঠুমরি। এ ছাড়া ত্রিতাল ও ধামার তালে নিবদ্ধ তোড়া, টুকরা, পরন, তেহাই, তৎকার ইত্যাদি। এর মধ্যে মাখনচুরি ও কালীয়দমন নৃত্যাংশ দু’টি বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য। শিল্পীদের মধ্যে হিয়া দত্তের পরিবেশনা প্রশংসনীয় এবং একক নৃত্যে অদিতি চৌধুরী দর্শকদের নজর কাড়ে। অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে এক গুচ্ছ রবীন্দ্রসঙ্গীতের উপর আধারিত একটি নৃত্যালেখ্যর মাধ্যমে। সমগ্র অনুষ্ঠানটির নৃত্য পরিচালনা করেন রিতা চক্রবর্তী ও সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সুকুমার ঘোষ ও সুকুমার শম্ভু।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.