|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা |
সুরাহা কবে |
বাজার বেহাল |
কৌশিক ঘোষ |
রাস্তায় পড়ে রয়েছে মাছের আঁশ আর মাছের খালি ট্রে। ভনভন করছে মাছি। ডায়মন্ড হারবার রোডে, বেহালা ট্রামডিপোর বিপরীতে ‘পৌর পণ্য বীথিকা’র গেটের সামনে দুর্গন্ধে দাঁড়িয়ে থাকাই দায়। বাজারের অবস্থাও তথৈবচ। অভিযোগ, পুরসভাকে বার বার বলেও কোনও কাজ হয়নি।
বাজারের ভেতরে দোকানঘরগুলিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভেঙে পড়েছে নিকাশি ব্যবস্থাও। ফলে বৃষ্টি না হলেও নর্দমা উপচে প্রায়ই জল দাঁড়িয়ে যায়। ছড়িয়ে থাকে আবর্জনা। বিদ্যুতের পুরনো তারও জট পাকিয়ে থাকে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মূলত কলকাতা পুরসভার অধীন এই বাজারের রক্ষণাবেক্ষণে গাফিলতি রয়েছে। তাঁরা জানান, কিছু দিন আগে ব্যবসায়ী সমিতি পুরসভাকে চিঠিও দিয়েছে।
মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বাজারের রক্ষণাবেক্ষণ একেবারে করা হয় না, এ অভিযোগ ঠিক নয়। তবে কিছু সমস্যা আছে। বাজারের একাংশ ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। বাজারের উন্নতিকল্পে এই ব্যবসায়ীদেরও পুরসভার সঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। আধুনিক মানের উন্নত বাজার নির্মাণের কথাও পুরসভা ভেবেছে। তবে তার জন্য বিকল্প জায়গার প্রয়োজন। ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা ছাড়া তা সম্ভব হবে না।”
|
|
শাকসব্জি তো বটেই, মাছের পাইকারি বাজার হিসেবেও এই বাজারটি শহরে অন্যতম। ৩৫টির মতো মাছের আড়ত রয়েছে। ভোর চারটে থেকে সকাল সাতটা মাছের পাইকারি বাজার বসে। খুচরো বিক্রি চলে সারা দিন। ব্যবসায়ীর মোট সংখ্যা প্রায় পাঁচশো।
বাজারের সামনে রাস্তার উপরেই সারা রাত মাছ-ভর্তি বড় বড় লরি আসে। মাল নামানো ও বেচাকেনা চলে। স্থানীয় বাসিন্দা অঞ্জন রায় বলেন, “রাস্তা নোংরা হয়, দুর্গন্ধে টেঁকা দায় হয়ে ওঠে। লরির জন্য খুব ভোরেও যান চলাচলে অসুবিধা হয়।” পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকার ১৯৭৫-এ বাজারটি তৎকালীন মালিকের কাছ থেকে অধিগ্রহণ করে। তার পরে এটি সাউথ সুবার্বান মিউনিসিপ্যালিটির অধীনে আসে। পরে বেহালার এই এলাকার সঙ্গে বাজারটিও কলকাতা পুরসভার আওতায় আসে। তবে ছোট একটি অংশ বেসরকারি মালিকের হাতে থেকে যায়।
পুরসভার বাজার দফতরের এক আধিকারিক জানান, পুরসভার আওতাধীন বাজারের ব্যবসায়ীরা পুরসভাকেই দোকানের ভাড়া দেন। কিন্তু ব্যক্তিগত মালিকানার অংশটি থেকে স্বাভাবিক ভাবেই পুরসভা কোনও অর্থ পায় না। ফলে অর্থাভাবই রক্ষণাবেক্ষণে বড় বাধা। ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রতন মণ্ডল বলেন, “গত দু’বছর ধরে বাজার সারানোর ব্যাপারে পুর-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কাজ করেননি। অবশ্য কিছু দিন আগে বাজার পরিদর্শন করে সংস্কারের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মেয়র।” |
|
১৪ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান মানিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীণ কিছু সমস্যা রয়েছে। সেগুলি না মেটা পর্যন্ত এই বাজার সংস্কারে অসুবিধা হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে সমাধান করব।” স্থানীয় কাউন্সিলর অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “রাস্তায় যাতে রাতে মাছভর্তি লরি না দাঁড়ায় সে জন্য পুর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। পুরসভা যতই পরিষ্কার করুক না কেন, মাছের আঁশ থেকে রাস্তায় কিছু নোংরা থেকেই যায়। লরি থেকে মাছ নামানোর জন্য কাছেই একটা ফাঁকা জায়গার কথা পুরসভাকে জানানো হয়েছে। বর্তমানে যে সংস্থা নাইট পার্কিংয়ের দায়িত্বে আছে তার মেয়াদ শেষ হলেই এ ব্যবস্থা চালু হবে।”
|
ছবি তুলেছেন পিন্টু মণ্ডল |
|
|
|
|
|