সুব্রত ভট্টাচার্য পাহাড়ি দৌড় থামালেন। কিন্তু পুরো পয়েন্ট নিয়ে কলকাতায় ফিরতে পারছে না মোহনবাগান।
ইম্ফলে শুক্রবার মোহনবাগান দুটো প্ল্যান নিয়ে লাজং এফসি-র বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল।
প্ল্যান এ: ওডাফা-ব্যারেটো-অসীম ত্রিভুজ দিয়ে দ্রুত গোল তুলে নিয়ে অ্যাওয়ে ম্যাচে তিন পয়েন্ট পেতে।
প্ল্যান বি: জিততে না পারলেও কোনও মতেই হারা চলবে না। অন্তত এক পয়েন্ট চাই। সে জন্য ডিফেন্সিভ স্ক্রিন মুরলী জোসেফ।
গোলের সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট হওয়ায় প্ল্যান ‘এ’ ফলপ্রসূ হয়নি সুব্রতর। তবে ডিফেন্সে ড্যানিয়েল না থাকলেও হারতেও হয়নি বাগানকে। ফোনে ধরা হলে মোহন টিডি-কে খুব একটা অখুশি বলে মনে হল না। সুব্রত বললেন, “গোল নষ্ট না করলে আমরা জিততাম। তবে ছেলেদের খেলায় আমি খুশি।”
মাঠে যাঁরা খেলা দেখতে এসেছিলেন তাঁরা অবশ্য সুব্রতর দাবি মানতে নারাজ। জানা গেল, প্রথমার্ধটা মোহনবাগানের হলেও, দ্বিতীয়ার্ধটা ছিল প্রদ্যুম রেড্ডির দলের। দু’দলই যা সুযোগ পেয়েছে তাতে যে কেউ জিততে পারত। দু’দলেরই একটা করে শট পোস্টে লেগে ফিরেছে। সুব্রত অবশ্য স্বীকার করে নিলেন, লাজংয়ের মাঝমাঠ যথেষ্ট ভাল খেলেছে।
জঙ্গি ভয় উপেক্ষা করেও খুমন লাম্পাক স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে এসেছিলেন প্রচুর দর্শক। তাদের সমর্থন স্বভাবিক ভাবেই ছিল পাহাড়ি দলের দিকেই। হয়তো সেটা ওডাফা-ব্যারেটোদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছিল। তায় ম্যাচের আগেই সুব্রতর স্ট্র্যাটেজি ওলট-পালট হয়ে যায় ড্যানিয়েল পেটের গণ্ডগোলে অসুস্থ হয়ে পড়ায়। অস্ট্রেলীয়র জায়গায় নামানো হয়েছিল মুরলীকে।
লাজংয়ের দৌড় আটকাতে মুরলীর সঙ্গে সুব্রত নির্ভর করেছিলেন দুই বঙ্গসন্তান স্টপার জুটি কিংশুক দেবনাথ-সৌরভ চক্রবর্তীর উপর। দু’জনেই ভাল খেললেন। গোল করার খুব বেশি সুযোগ দেননি শারীরিক সক্ষমতায় দেশের সবথেকে ভাল দল লাজংকে।
রক্ষণ বাঁচালেও মোহনবাগান যাঁদের উপর নির্ভর করে জেতার কথা ভাবছে সেই ওডাফা এবং ব্যারেটো এ দিন গোল করতে পারেননি। ওডাফার শট এক বার পোস্টে লাগে। এক বার ব্যারেটোর দুরন্ত সাইড ভলি ভাল বাঁচান লাজং গোলকিপার পোইরেই। দু’টি ঘটনাই প্রথমার্ধে। বিরতির পর থেকে পরিচিত মাঠে ম্যাচের রাশ নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় লাজং। কয়েক বার বিপক্ষ গোলের কাছে পৌঁছেও বাইরে মারেন মেনিয়োঙ্গার। দু’বার বাঁচায় সংগ্রামের তৎপরতা।
মোহনবাগানের পরের ম্যাচ বেঙ্গালুরুতে হ্যালের বিরুদ্ধে। তার আগে দু’ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট নষ্ট হল তাদের। সুব্রতর দলের পক্ষে অশনি সঙ্কেত। এখনও অষ্টম রাউন্ডের সব ম্যাচ না হওয়ায় মোহনবাগান আই লিগে দু’নম্বরেই রয়েছে। তবে সুব্রত এ সব নিয়ে এখনই ভাবতে নারাজ। “সবে আটটা ম্যাচ হল। এ রকম অনেক ওঠা-নামা লিগে থাকবে।”
|
মোহনবাগান: সংগ্রাম, সুরকুমার, কিংশুক, সৌরভ, ধনরাজন, গৌরাঙ্গ, মুরলী (শৌভিক), স্নেহাশিস, ব্যারেটো, অসীম (জাগতার), ওডাফা। |