টোটকা নয়। বরং কলকাতার নিকাশি ব্যবস্থার হাল ফেরাতে স্থায়ী চিকিৎসার দিকেই এগোতে চাইছে সেচ দফতর। রাজ্যে নতুন সরকার আসার পরে সেচ দফতরের পক্ষ থেকে শহরের নিকাশি খালগুলির হাল ফেরাতে বেশ কিছু নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। ওই সব পরিকল্পনা একটি রিপোর্ট আকারে প্রকাশ করে পাঠানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের কাছে।
ওই রিপোর্টে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সেচ দফতরের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া সরকারি সংস্থাগুলি যেন যত্রতত্র নালা-নর্দমা তৈরি করে কোনও এলাকাকে জলবন্দি দশা থেকে মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা না করে। ওই কাজের জন্য পুরসভা বা অন্যান্য সরকারি সংস্থা যেন অবশ্যই সেচ দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে। রিপোর্ট বলছে, বিভিন্ন সরকারি সংস্থা খালের জল বহন ক্ষমতা যাচাই না করেই সেখানে জল ফেলছে। ফলে বহন ক্ষমতার বেশি জল খালগুলিতে গিয়ে পড়ছে। তাই সেচ দফতর ও বিভিন্ন রাজ্য সরকারি সংস্থাকে মিলিত ভাবে সমন্বয় কমিটি তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি বর্ষায় নিকাশির কাজ যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয়, সে জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখার কথা বলা হয়েছে রিপোর্টে। সেই সঙ্গে নিকাশির কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির কর্মক্ষমতা ভাল করে যাচাই করতে হবে। নিকাশির কাজে পাম্পের গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু কোনও পাম্পের জল তোলার ক্ষমতা কত, তার কোনও তথ্য নেই সেচ দফতরের কাছে। এমনকী কোন খালের জল ছাড়ার প্রকৃত ক্ষমতা কত, পরীক্ষা করা হয়নি তা-ও। খালগুলির পাশে প্রয়োজন মতো পাম্পহাউস তৈরির প্রস্তাবও তাই দেওয়া হয়েছে রিপোর্টে।
বাগজোলা, নোয়াই, টালিনালার মতো খালের ধারে ঝুপড়িবাসীদের বেআইনি বসবাস দীর্ঘদিনের। রিপোর্ট বলছে, প্লাস্টিক থেকে শুরু করে জীবজন্তুর মৃতদেহ সবই ওই খালে ফেলা হয়। ফলে পলি জমে নাব্যতা হারাচ্ছে খালগুলি। তাই সেচ দফতর প্রস্তাব দিয়েছে, বেআইনি দখলদারদের থেকে খালপাড় মুক্ত করা হোক।
সেচ সচিব অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় জানান, বেআইনি দখলদারদের সরিয়ে খালপাড় সংরক্ষণ করতে হবে। নির্ধারিত সময় অন্তর পলি তুলতে হবে। খালের ঢাল ঠিক রেখে খাল চওড়া করতে হবে। যাতে বর্জ্য খাল দিয়ে বেরোনোর সময়ে বাধা না পায়। নিকাশি পাম্পগুলির মানোন্নয়ন করতে হবে। বর্ষার সময়ে নিকাশি পাম্পগুলি চালু রাখতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা রাখতে হবে। |