তিতি, বালাসুন্দর, তিস্তা, দ্বারকাপ্রসাদের মতই ১৫ দিন বয়সী হস্তি শাবককে বাঁচিয়ে বড় করে তোলার দায়িত্ব ফের নিজেদের হাতে তুলে নিলেন জলদাপাড়ার বন কর্মীরা। মানুষের ছোঁয়া লাগায় দল থেকে ব্রাত্য পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডির ওই হস্তি শাবককে শুক্রবার ট্রাকে করে জলদাপাড়ায় নিয়ে আসা হয়। জলদাপাড়ার ৯ জন বন কর্মীর পাশাপাশি ২ জন চিকিৎসক শাবকটির দায়িত্বে আছেন। শাবকটিতে জলদাপাড়া আনার পথে গুড়ো দুধ আর গ্লুকোজ খাওয়ানো হয়েছে। এদিন জলদাপাড়ার হলং পিলখানাতে আনার পর থেকে চিকিসকের পরামর্শে ফের সেটিকে গুড়ো দুধ ও গ্লুকোজ খাওয়ানো হয়। জলদাপাড়া বনাঞ্চলের পশু চিকিত্সক অশোক কুমার সিংহ বলেন, “এক হাজার কিলোমিটার যাত্রা করে শাবকটি ক্লান্ত। ভয়ও পাচ্ছে। এ সব কাটতে ২ দিন প্রয়োজন। মায়ের দুধ পেলে চাঙ্গা হয়ে উঠবে।” বন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ছোট্ট ছটফটে স্বভাবের শাবকটিকে বাঁচিয়ে তুলতে প্রতিবারের মত এবার কুনকি হাতি চম্পাকলির কাঁধে দায়িত্ব তুলে দিচ্ছে না বন দফতর। হলং পিলখানার মা হাতি মুক্তিরানী নামে কুনকির সাহায্য নেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাত্র তিন মাস আগে ওই হাতিটি সন্তান প্রসব করেছে।
গত জুলাই মাসে চম্পাকলি নিজের সন্তানের পাশাপাশি বাঁকুড়া থেকে উদ্ধার করে আনা দ্বারকা প্রসাদকে নিজের দুধ খাইয়ে বড় করে তোলে। এই নতুন শাবকটির ক্ষেত্রে দুধ খাওয়ানোর দায়িত্ব চম্পাকলির ঘাড়ে চাপানো হলে তার উপর চাপ হয়ে যাবে, তার বদলে মুক্তিরানীকে মায়ের দায়িত্ব পালন করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। এদিন সন্ধ্যায় মুক্তিরানীর কাছে পুরুলিয়া থেকে উদ্ধার করা শাবকটিকে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে শাবকটিকে কাছে টেনে নেয়নি কুনকি হাতিটি। এতে বেজায় চিন্তিত বন কর্মীরা। হলং-এর রেঞ্জ অফিসার রণজিৎ সরকারের কথায়, “প্রাথমিক ভাবে মুক্তিরানী শাবকটিকে দুধ খাইয়ে লালন পালন করবে বলে ঠিক হয়েছে। আশা করছি সে শাবকটিকে গ্রহণ করবে।”
ঝাড়খণ্ড থেকে আসা একটি হাতির দল নিয়মিত পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডি এলাকার ধান খেতে হানা দিচ্ছিল। বাঘমুণ্ডির চিকনা বাগান এলাকায় হাতির হানায় একজনের মৃত্যুও হয়। সম্প্রতি সেই কারণে গ্রামবাসীরা খেত ঘিরে রাতে পাহারা দিচ্ছিলেন। হাতির পালকে খেতের পাশে আসতে দেখে গ্রামবাসী তাড়া করেন। তাতে সব হাতি জঙ্গলে পালালেও এক হস্তিনী ও তার শাবক পিছিয়ে পড়ে। ধান খেতের কাদায় শাবকটি আটকে গিয়েছিল। লোকজনের চিৎকারে বহু চেষ্টা করে সন্তানকে তুলতে না পেরে হস্তিনী জঙ্গলে ফিরে যায়। তার পর কাদা থেকে উঠে পথ চলতে গিয়ে কুয়োয় পড়ে যায় শাবকটি। তাকে কুয়ো থেকে তুলে বেঁধে রাখে স্থানীয় বাসিন্দারা। মানুষের ছোঁয়া লাগায় পরে মা তাকে আর জঙ্গলে ফেরাতে চায়নি। এর পরেই বন দফতর শাবকটিকে জলদাপাড়ায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
|
বাঘ সংরক্ষণেও ডাক নীতীশকে
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটনা |
বিহারে ধোনির জায়গা পারে নীতীশ কুমার। বাঘ সংরক্ষণের জন্য প্রচারে ঝাড়খণ্ড এবং উত্তরাখণ্ড চায় বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে। দু’টি রাজ্যকে ইতিমধ্যেই ধোনি বাঘ সংরক্ষণে ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার’ হওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। দেশের বাকি রাজ্যগুলিতেও এই প্রচারের জন্য কোনও না কোনও তারকা-শিল্পী বা খেলোয়াড়কেই বেছে নেওয়া হচ্ছে। সারা দেশে যখন এমনই প্রবণতা, তখন একটু উল্টো পথেই হাঁটতে চাইছে বিহার। রাজ্যের বন দফতরের কর্তাদের এই প্রচারে প্রথম পছন্দ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকেই। এখনও মুখ্যমন্ত্রীকে সরকারি ভাবে ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার’ হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। রাজ্যের বন দফতর সূত্রে খবর, বেসরকারি ভাবে নীতীশ কুমারের ইচ্ছেটা আগে যাচাই করে দেখে নিতে চান কর্তারা। |