সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করল মার পিপলস কনভেনশন (ডেমোক্র্যাটিক) আসাম। আজ হাফলং থেকে ২০ কিমি দূরে বড়াইল পাহাড়ের জঙ্গলে সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে জঙ্গি সংগঠনটির প্রচার সচিব এল ডেভিড মার সংঘর্ষবিরতির কথা ঘোষণা করেন। তিনি জানান, তাঁদের সংগঠনে ৩৫ জন সশস্ত্র ক্যাডার রয়েছেন। তাঁরা কেন্দ্র-রাজ্য বা কোনও নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে সশস্ত্র সংগ্রামে না গিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মার জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন ও সুরক্ষার চেষ্টা করবেন। এ ভাবেই বিভিন্ন সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে বলে জঙ্গি নেতারা আশাবাদী। মণিপুরে অবশ্য এই সংগঠনটি আগেই সংঘর্ষবিরতিতে এসেছে।
ডিমা হাসাও জেলার অ-ডিমাসা উপজাতিদের জঙ্গি সংগঠন হিল টাইগার ফোর্সের সমালোচনা করে ডেভিড বলেন, শান্তির পথে হাঁটার সময় এই সংগঠনটি এখন মার যুবকদের বন্দুক হাতে নেওয়ার জন্য উস্কানি দিচ্ছে। তবে এতে তারা সফল হবে না বলেই অভিমত ডেভিডের।
মার-দের সংঘর্ষবিরতির ঘোষণায় রাজ্য পুলিশ সন্তোষ প্রকাশ করেছে। এডিজি খগেন শর্মা বলেন, “এটি শুভ লক্ষণ। ডিমাসাদের সব ক’টি সংগঠন সংঘর্ষবিরতি মেনে চলছে। ক’ দিন আগে কুকি রেভলিউশনারি আর্মিও (কেআরও)-একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ মার-রা। শুধু কিছু জেমি নাগা সম্প্রদায়ের যুবক রয়েছে, যারা অস্ত্র হাতে অসমের মানুষকে সন্ত্রস্ত করে রাখতে চাইছে। কিন্তু সবাই যখন শান্তি চাইছে, তখন তাদের পক্ষেও বেশি দিন অস্ত্রের দাপট চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না।” ‘মার’ নামে এই জনগোষ্ঠীটি মূলত অসমের কাছাড় ও ডিমা হাসাও জেলা এবং মণিপুর ও মিজোরামের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাস করে। এর আগেও টি সাংখুমের নেতৃত্বে মার পিপলস কনভেনশন নামে এক জঙ্গি সংগঠন সরকারের সঙ্গে আলোচনাক্রমে অস্ত্র সমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছিল। তখন তাদের দাবি মেনেই বরাক উপত্যকা পার্বত্য উপজাতি উন্নয়ন পরিষদ গঠিত হয়। কিন্তু এর ক’বছরের মধ্যেই ২০০৩ সালে ডিমাসাদের সঙ্গে তাদের সংঘাত তীব্র হয়ে উঠলে মার পিপলস কনভেনশন (ডেমোক্র্যাটিক) নামে নতুন জঙ্গি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এর আগে আত্মসমর্পণে যিনি মূল ভূমিকা নিয়েছিলেন, সেই প্রাক্তন মন্ত্রী দীনেশপ্রসাদ গোয়ালা আজ কাছাড় জেলার লক্ষ্মীপুর আসনের বিধায়ক। কিন্তু সংঘর্ষ বিরতির ঘোষণায় আজ তিনি প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হননি। |