|
|
|
|
মিজোরাম সীমান্ত আলোকায়িত করার কাজ চলছে ধীর গতিতে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলচর |
অনুপ্রবেশ এবং চোরা কারবার ঠেকাতে মিজোরাম-বাংলাদেশ সীমান্তে ছয় মাস আগে ‘আলোর বন্যা’ বইয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছিল। ঢাকঢোল পিটিয়ে এই কাজের সূচনা হলেও আপাতত সেই কাজ চলছে নিতান্তই ধীর গতিতে। শিলচরে সাংবাদিক বৈঠক করতে এসে বিএসএফের আইজি মনোহরলাল বথাম কার্যত স্বীকার করে নিলেন কাজে এই ঢিলেমির কথা। তিনি বলেন, সীমান্ত আলোকায়িত করার কাজে সময় বেশি লাগছে কিছু সমস্যার জন্য। তবে তিনি আশাবাদী, সমস্যাগুলির সমাধান ঘটিয়ে এই ‘ভাল কাজ’টি অবশ্যই সম্পন্ন করা হবে।
সমস্যাগুলি কী কী? কাল সাংবাদিক বৈঠকে বিএসএফকর্তা রথাম জানান, মিজোরামে ৩৩৬ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে। দৈর্ঘটা কম নয়। রাতেও অনুপ্রবেশকারী ও চোরাচালানদারদের উপরে নজর রাখতে সীমান্ত বরাবর চলছে আলো লাগানোর কাজ। অনেক জায়গায় খুঁটিও বসানো হয়েছে। প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকা বলে অনেক স্থানেই দরকার জেনারেটরের। |
|
সাংবাদিক বৈঠকে বিএসএফের আইজি। ছবি: স্বপন রায় |
িন্তু শুধু জেনারেটর কিনলেই হল না। সমস্যা হল, জেনারেটরগুলি রাখা হবে কোথায়? বিএসএফের সীমান্ত চৌকিতে সেগুলি রাখার কথা থাকলেও এখন ওই রাজ্যে মাত্র ২০টি চৌকি রয়েছে। নতুন করে হবে আরও ৭১টি। এ জন্য টেন্ডার ডেকে ঠিকাদার সংস্থাগুলিকে কাজ দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সেখানে আবার আর এক সমস্যা। এমন সব জায়গায় চৌকির স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে যেগুলি আক্ষরিক অর্থেই দুর্গম। চৌকি নির্মাণ, আলোর ব্যবস্থা বা কাঁটাতারের বেড়া যা-ই হোক না কেন, আগে সীমান্ত সড়ক তৈরি করতে হবে। না হলে নির্মাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে ৯ চৌকিতে বিএসএফকে হেলিকপ্টারের সাহায্যে জওয়ানদের রেশন সামগ্রী পৌঁছে দিতে হয়। আগরতলা থেকে উড়ে গিয়ে মিজোরামের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আকাশ থেকে খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেট ফেলা হয়। বথাম অবশ্য আশাবাদী, সীমান্ত সড়ক তৈরি হলেই এই সব সমস্যার সমাধান হবে। তবে এই আলোকায়িত করার কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনও উত্তর মেলেনি।
বথাম জানান, সীমান্তে প্রায় ১৩ শতাংশ সড়ক তৈরি হয়ে গিয়েছে। ৫৮ শতাংশের কাজ চলছে। বাকি ২৯ শতাংশে এখনও শুরু হয়নি। তবে কত দ্রুত সেখানেও কাজ শুরু করা যায় তা দেখা হচ্ছে। সড়ক নির্মাণ হয়ে গেলে চৌকি ও কাঁটাতারের কাজ এগোবে। সঙ্গে থাকবে আলোর ব্যবস্থা। কাঁটাতারের বেড়ার কাজেরও পরিসংখ্যান দেন বথাম। মিজোরামে ১৯ শতাংশ সীমান্ত কাঁটাতারে ঘেরা হয়েছে। ৬৩ শতাংশে কাজ এগোচ্ছে। সড়ক না থাকায় বাকি ১৮ শতাংশে কাজ শুরু করা যায়নি।
কাছাড়-করিমগঞ্জের বাংলাদেশ সীমান্তও বথামের অধীনে। সেখানে ফ্লাড লাইটের কাজ শুরু হয়েছে গত মাসে। এই অঞ্চলে দুর্গম এলাকা না থাকলেও জমি সংক্রান্ত বিবাদ রয়েছে। সে জন্য প্রায় ৫ শতাংশ এলাকায় কাঁটাতারের বেড়ার কাজ শুরুই করা যায়নি। তবে ৭৩ শতাংশ এর মধ্যেই কাঁটাতারে ঘেরা হয়েছে। বাকি ২২ শতাংশের কাজ চলছে।
বিএসএফ আইজি-র দাবি, কাঁটাতারে যত বেশি এলাকা ঘেরা হচ্ছে, ততই অনুপ্রবেশ ও চোরাচালানের মাত্রা কমছে। বেআইনি পথে সামগ্রী পারাপার কঠিন হয়ে পড়ায় ধরা পড়ার মাত্রা বাড়ছে। গত বছরে আড়াই কোটি টাকার সামগ্রী বাজেয়াপ্ত হয়েছে মিজোরাম ও বরাকের আন্তর্জাতিক সীমান্তে। এর মধ্যে ১০৩টি গবাদি পশুও ধরা পড়েছে। ধরা পড়েছে ৮৮ জন অনুপ্রবেশকারী ও চোরাকারবারী। তাদের ৪১ জন বাংলাদেশের ও ৪ জন মায়ানমারের নাগরিক। ১৩ হাজার ৮০০ বোতল কাফ সিরাপ বাজেয়াপ্ত হয়েছে । গত বছরের থেকে ওই সংখ্যাটি তিন গুণেরও বেশি। |
|
|
|
|
|