নাশকতা রুখতে বিমানবন্দরগুলির ধাঁচে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজছে শহরের ‘লাইফলাইন’ মেট্রো রেল।
মেট্রো সূত্রের খবর, প্ল্যাটফর্মে নামার আগে যাত্রীদের ব্যাগ খুলে আর তল্লাশি করবেন না নিরাপত্তাকর্মীরা। ওই কাজ এর পর থেকে সামলাবে বিদেশি নজরদারি যন্ত্র। ঠিক যেমন হয় বিমানে ওঠার আগে জিনিসপত্র ‘চেক-ইন’ করার ক্ষেত্রে। পাশাপাশি, নতুন প্রযুক্তির মেটাল ডিটেক্টর গেটও বসবে স্টেশন চত্বরে। টিকিট কাউন্টার এবং প্ল্যাটফর্মে নজরদারি চালাবে ‘হাই-রেজলিউশন’ ক্যামেরা। নিজস্ব বম্ব স্কোয়াডও গড়বেন মেট্রো-কর্তৃপক্ষ। এই ব্যবস্থার নাম ‘ইন্টিগ্রেটেড সিকিউরিটি সিস্টেম’। মেট্রো সূত্রের খবর, আগামী বছরের প্রথম দিকেই চালু হয়ে যাবে এই ব্যবস্থা।
স্টেশন চত্বরে কোথাও বিস্ফোরণ হলে ক্ষতির পরিমাণ কমাতে ‘বম্ব বাস্কেট’, ‘বম্ব সাপ্রেশন ব্ল্যাঙ্কেট’ এবং ‘বম্ব স্যুট’-এর মতো সুরক্ষার জিনিসপত্র কেনা হচ্ছে। বিস্ফোরক খুঁজতে কেনা হচ্ছে ‘এক্সপ্লোসিভ ভেপার ডিটেক্টর’। দিল্লির যে সংস্থা সেগুলি সরবরাহের বরাত পেয়েছে, তারাই মেট্রোর নিরাপত্তাকর্মীদের বোমা নিষ্ক্রিয় করার প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দেবে। পরবর্তীকালে সেনাবাহিনী, দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী এবং এনএসজি-র কাছে ওই প্রশিক্ষণ দেওয়ার অনুরোধ জানাবেন মেট্রো রেল-কর্তৃপক্ষ। মেট্রো রেলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রত্যুষ ঘোষ বলেন, “প্ল্যাটফর্মে নামার আগে যাত্রীদের ব্যাগ খুলে পরীক্ষা করা হয়। এতে তাঁরা কিছুটা হলেও বিব্রত হন। সমস্যা হয় নিরাপত্তাকর্মীদের। স্ক্যানার বসলে সে পরিস্থিতি বদলাবে।”
মেট্রোর তরফে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে ২৩টি স্টেশনে একটি করে ‘হাই-ক্যাপাসিটি ব্যাগেজ স্ক্যানার’ থাকবে। মেট্রোর সিনিয়র সিকিউরিটি কমিশনার বীরেন্দ্র কুমার বলেন, “ভূগর্ভের প্ল্যাটফর্মগুলিতে নামার দু’টি করে পথ রয়েছে। এসপ্ল্যানেডে তিনটি প্রবেশপথ। আপাতত সে সব স্টেশনে একটি করে স্ক্যানার বসানো হলেও পরে সব গেটেই ওই যন্ত্র বসানো হবে।”
মেট্রো-কতৃর্পক্ষ জানিয়েছেন, স্টেশনগুলিতে এখনকার মেটাল ডিটেক্টর গেটগুলিও বদলানো হবে। সেখানে বসবে ‘মাল্টি জোন ডোর ফ্রেম মেটাল ডিটেক্টর।’ ওই ধরনের যন্ত্রে বেশি সংখ্যক ‘সেন্সর’ থাকায় নজরদারি আরও ভাল হবে। পুরনো সিসিটিভি ক্যামেরার জায়গায় লাগানো হবে ‘হাই রেজলিউশন ডে অ্যান্ড নাইট আইপি বেস ক্যামেরা।’
এক মেট্রোকর্তা জানান, নতুন ওই ক্যামেরায় ৯০ থেকে ১৮০ দিনের পুরনো ছবি ‘রেকর্ড’ করা থাকবে। এখনকার ক্যামেরায় সর্বাধিক সাত দিনের ছবি ধরে রাখা যায়। এর পরে সেগুলি মুছে যায়। বেশি সময়ের ছবি নতুন ক্যামেরায় ‘সেভ’ থাকায় কোনও ঘটনার তদন্তে সুবিধা হবে। |