পরিকাঠামো নিয়ে অখুশি বিধানসভার কমিটি |
গার্গী গুহঠাকুরতা • কলকাতা |
পূর্বতন বাম সরকারের প্রতিশ্রুতি ছিল ই এম বাইপাস থেকে বানতলা পৌঁছতে ছ’লেনের রাস্তা তৈরি করার। বাস্তবে তা হয়নি। তবে এ বার ছয় না হলেও, অন্তত চার লেনের রাস্তা তৈরির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে সেখানে। যা হলে, বানতলায় তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের পরিকাঠামো সমস্যার একটি দিকের সুরাহা হবে বলে আশা শিল্পমহলের। কারণ সম্প্রতি বিধানসভার তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য এই অঞ্চল ঘুরে রাস্তা-সহ পরিকাঠামোর একাধিক সমস্যা সরেজমিনে দেখেছেন। ঘাটতি যে রয়েছে, তা স্বীকারও করেছেন। এবং ইঙ্গিত দিয়েছেন সেখানে ৪ লেনের রাস্তা তৈরির জন্য সুপারিশ করার।
ওই সদস্যেরা জানান, রাস্তাঘাট, আলো, জল-সহ নানা পরিষেবা ঘাটতির কথা বিধানসভার রিপোর্টে পেশ করা হবে। জানানো হবে মুখ্যমন্ত্রীকেও। চার লেনের রাস্তা দ্রুত তৈরির জন্য অর্থসংস্থান নিয়েও মতামত জানাবে কমিটি। ঠিক কী সুপারিশ করা হবে তা জানানো না গেলেও, বিভিন্ন সংস্থার লগ্নি টেনে ওই আর্থিক অঞ্চলকে বাঁচিয়ে রাখতে এই বিষয়গুলি নিয়ে কমিটির সকলেই একমত হবেন বলে তাঁদের ধারণা।
১,১০০ একরের এই বিশেষ আর্থিক অঞ্চল দেখাশোনার জন্য ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউনশিপ অথরিটি’ তৈরির কথা ছিল। কিন্তু তা ধামাচাপা পড়েছে সরকারের অন্দরে মতানৈক্যের কারণেই। তবে দূষণের যে ভূত এই অঞ্চলকে তাড়া করছিল, তার সমাধানসূত্র মিলেছে। চর্মনগরী এবং আইটি পার্কের বর্জ্য ব্যবস্থা পৃথক করার বন্দোবস্ত হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ হলেই তা চালু হবে।
অবশ্য দূষণ সমস্যা মিটতে চললেও রাস্তার সমস্যা মেটেনি। সঙ্গে আছে জল, আলো ও কর্মী-নিরাপত্তার সমস্যাও। কমিটির এক সদস্য আবু নাসের চৌধুরি অপরিসর রাস্তার কথা স্বীকার করে বলেন, “কগনিজ্যান্টের মতো সংস্থা এখানে বিশ্ব মানের ক্যাম্পাস গড়ছে। অন্যান্য সংস্থাও প্রকল্প গড়বে। সে ক্ষেত্রে রাস্তা-সহ পরিকাঠামোগত সুবিধাগুলি রাজ্যকে দিতেই হবে। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাব।” তাঁর দাবি, রাস্তার উন্নয়নের জন্য টাকা পাওয়া আটকে থাকবে না। বিশেষ আর্থিক অঞ্চল পরিদর্শনে এসে কমিটির সদস্যরা কগনিজ্যান্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে এখন এই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাটিই একমাত্র কাজ শুরু করেছে। চর্মনগরী সংলগ্ন ওই আর্থিক অঞ্চলে রাজ্যে তাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস গড়ছে তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ২০১২-র গোড়াতেই ক্যাম্পাস সম্প্রসারণের কাজ শুরু হবে। তাই এ বার পরিকাঠামো উন্নয়নের দিকে রাজ্যের নজর ফেরাতে চায় এই মার্কিন বহুজাতিক। প্রসঙ্গত, বানতলা প্রকল্পের জন্য চিহ্নিত ১১০০ একরের মধ্যে ১২০ একর জমি তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। লক্ষ্য, শহরের কাছে জমি দিয়ে রাজ্যের ‘শো-কেস’ শিল্পের জন্য জমির চাহিদা মেটানো। বানতলার কলকাতা আই টি পার্কে ১৮টি সংস্থা জমি নিয়েছে। |