|
|
|
|
শ্রমিক-কর্মীদের ‘জুলুম’, মন্ত্রীর দ্বারস্থ বণিকসভা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
কন্যাপুর শিল্পতালুকে শ্রমিক সংগঠনের ‘জুলুম’ বন্ধের আর্জি নিয়ে স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের দ্বারস্থ হয়েছে আসানসোল ইন্ডাস্ট্রিয়াল চেম্বার অফ কমার্স। বিহিত না হলে কারখানা গোটানোর হুমকিও দিয়েছেন কিছু মালিক।
বণিসভার অভিযোগ, এক দল শ্রমিক-কর্মী আসানসোলের ওই শিল্পতালুকের একাধিক কারখানায় কর্মসংস্কৃতি নষ্ট করছেন। সংগঠনের সম্পাদক অশোক মুখোপাধ্যায়ের আক্ষেপ, ওই কর্মীরা নিজের কাজ করেন না। অন্যদের কাজেও বাধা দেন। কারখানায় এসেই শ্রমিক সংগঠনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে লেগে পড়েন। ‘অন্যায্য’ দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করেন। কিন্তু মালিকপক্ষ এঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলেই শ্রমিক সংগঠনগুলি ঝাঁপিয়ে পড়ে। উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। কর্তৃপক্ষকে হেনস্থা করে। |
|
আসানসোলের শিল্পতালুকে বন্ধ কারখানা। নিজস্ব চিত্র। |
সম্প্রতি শিল্পতালুকের একটি বিস্কুট কারখানায় রাতের পালিতে ঘুমোনোর অভিযোগে কর্তৃপক্ষ কয়েক জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় আচমকা উৎপাদন বন্ধ করে দেয় শ্রমিক সংগঠনগুলি। এতে কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে অভিযোগ করে কর্তৃপক্ষ ‘সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক’ নোটিস ঝুলিয়ে দেন। স্থানীয় টাইলস কারখানার মালিক অধীর গুপ্ত বলেন, “আমাদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা শ্রমিক সংগঠনগুলির এই সব জুলুম মানতে পারছি না।”
কন্যাপুরের একটি আইসক্রিম কারখানার কর্ণধার পুলক দাসের প্রশ্ন, “কারখানার অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত শ্রমিক নেতাদের কথা মতো চলবে কেন? এর ফলে আমরা আর্থিক সঙ্কটে পড়ছি।” বণিকসভার সম্পাদক বলেন, “আমরা শ্রমিক নেতাদের আলোনায় বসে সমস্যা সমাধানের আবেদন করেছি। কিন্তু ফল হয়নি। জুলুম বেড়েই চলেছে। এই অবস্থায় অনেকে এমনকী কারখানা গুটি নেওয়ার কথাও ভাবছেন।”
শ্রমিক নেতারা অবশ্য মালিক পক্ষের শিল্পের পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগ মানতে নারাজ। সিটুর বর্ধমান জেলা সভাপতি দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এত দিন এই সমস্যা হয়নি। এখন কেন হচ্ছে? মালিক পক্ষ নির্দিষ্ট অভিযোগ আনুন। আমরা শিল্পবিরোধী পরিবেশ তৈরি করি না।” মালিক পক্ষ চাইলে তাঁরা সব রকম ‘সহযোগিতা’ করতে রাজি বলেও তিনি জানিয়েছেন। আইএনটিটিইউসি-র বর্ধমান জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায় জানান, তাঁদের সংগঠনের কারও বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ এলে তাঁরা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবেন। তাঁর আশ্বাস, “আমরা এমন কিছু করব না যাতে উৎপাদন ব্যাহত হয়। বরং কেউ জুলুম করলে তাদের বিরুদ্ধেই রুখে দাঁড়াব।”
মলয়বাবু বলেন, “আইএনটিটিইউসি সাধারণত এই ধরনের আচরণ করে না। তবে যা-ই ঘটে থাক, আমি গিয়ে মালিক ও শ্রমিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা মেটাব।” |
|
|
|
|
|