সিএসটিসিকে বলল হাইকোর্ট
কর্তাদের বেতন থেকে কর্মীদের পেনশন মেটাতে নির্দেশ
লকাতা রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা (সিএসটিসি)-র পরিচালন পর্ষদের সদস্য, চেয়ারম্যান ও অন্য উচ্চপদস্থ কর্তাদের বেতন, ভাতা এবং সাম্মানিক বন্ধ করে সেই টাকায় অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের প্রাপ্য মোটানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
সোমবার বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত জানিয়ে দেন, কর্তাদের বেতন, ভাতা বা সাম্মানিকের অর্থ থেকেই আপাতত অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন-গ্র্যাচুইটি ও অন্য প্রাপ্য মেটাতে হবে সিএসটিসি-কে। হাইকোর্ট পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই ব্যবস্থা চলবে। হাইকোর্টের নির্দেশ যথাযথ ভাবে পালিত হচ্ছে কি না, তা তদারকির জন্য রাজ্যের পরিবহণ সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। তাঁর নির্দেশ, প্রয়োজনে পরিবহণ সচিবকে সিএসটিসি-র অফিসে গিয়ে গোটা বিষয়টি দেখাশোনা করতে হবে। ফেব্রুয়ারি মাসে মামলাটির ফের শুনানি হবে। তখন হাইকোর্ট এ বিষয়ে সবিস্তার রিপোর্ট নেবে।
সিএসটিসি-র এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মী পরেশনাথ সামন্ত কলকাতা হাইকোর্টে অভিযোগ করেছিলেন, কর্তৃপক্ষ তাঁর সমস্ত অবসরকালীন সুযোগসুবিধা আটকে রাখায় গোটা পরিবার না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। গ্রা্যচুইটি-সহ অবসরকালীন প্রাপ্যের কোনও টাকাই পাননি তিনি। চাকরির শর্ত অনুযায়ী তিনি কী কী অবসরকালীন সুবিধা পাবেন, তা জানাতে আদালতের কাছে নিজের নিয়োগপত্রও পেশ করেন পরেশনাথবাবু।
রাজ্য সরকারের আইনজীবী হাইকোর্টে বলেন, নিগম কাকে নিয়োগ করবে, কাকে কী বেতন দেবে, কাদের অবসরকালীন বেতন দেবে, তা নিগমই স্থির করে। এ ব্যাপারে সরকারের কোনও দায় নেই। তা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার সম্প্রতি বড় অঙ্কের টাকা দিয়েছে সংস্থাটিকে।
সিএসটিসি-র আইনজীবী লক্ষ্মীচাঁদ বিয়ানি বলেন, নিগম যা উপার্জন করে তার পুরোটাই রিজার্ভ ব্যাঙ্কে জমা দেয়। মাসিক বেতন বা অবসরকালীন প্রাপ্য সবই সরকার মেটায়। পরিবহণ সংস্থাগুলির সঙ্গে জনস্বার্থের বিষয়টি সরাসরি যুক্ত বলেই তাদের জন্মলগ্ন থেকে এমন ব্যবস্থা চলে আসছে। কারণ, পরিবহণ সংস্থাগুলির নিজস্ব উপার্জন থেকে সব দায়দায়িত্ব মেটানো সম্ভব নয়।
সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বিচারতি করগুপ্ত বলেন, ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত কাজ করার পরে এক জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মী খেতে পাবেন না, এটা জেনে আদালত নীরব থাকতে পারে না। হাইকোর্ট চুড়ান্ত রায় না দেওয়া পর্যন্ত অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা তাঁদের প্রাপ্য পাবেন না, তা-ও হতে পারে না। তিনি বলেন, সংস্থার সব উচ্চপদস্থ কর্মীর বেতন বা সাম্মানিক বন্ধ রাখা হোক। সেই টাকা দিয়েই অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের প্রাপ্য মেটাতে হবে। পরিবহণ সচিবকে গোটা বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দিয়েছেন বিচারপতি।
পরিবহণ সচিব বি পি গোপালিকা অবশ্য জানান, তিনি বিচারপতির নির্দেশের প্রতিলিপি এখনও পাননি। তবে তিনি বলেন,“এমন নির্দেশ আদালত দিয়ে থাকলে আমাদের তা কার্যকর করতেই হবে।” সিএসটিসি-র চেয়ারম্যান তথা দফতরের বিশেষ সচিব তারাপদ মাঝির বক্তব্যও মোটামুটি একই। তিনি বলেন, “অবসরপ্রাপ্তদের প্রাপ্য দেওয়া বামফ্রন্ট আমলেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অর্থ দফতর জানিয়ে দিয়েছে, পরিবহণ সংস্থাগুলিকেই এই টাকা মেটানোর দায়িত্ব নিতে হবে। কিন্তু আমাদের তা মেটানোর আর্থিক সামর্থই নেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.