জমি-জট কাটাতে ফের আইন সংশোধনে রাজ্য
বাম আমলে তৈরি আইন সুপ্রিম কোর্টে খারিজ হয়ে যাওয়ায় অধিগৃহীত প্রায় ১৫ হাজার একর জমি নিয়ে জটিল সমস্যা তৈরি হয়েছিল। ১৪ বছর পরে সেই সমস্যার জট কাটাতে উদ্যোগী হল রাজ্যের নতুন সরকার। এর জন্য জমি আইন ফের সংশোধনের পথে হাঁটা হচ্ছে।
মঙ্গলবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সংশোধনী বিলের খসড়া অনুমোদিত হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, ২০১৫-এর ডিসেম্বরের মধ্যে ‘অ্যাক্ট টু’তে অধিগৃহীত সমস্ত বকেয়ার মীমাংসা করতে হবে। প্রস্তাবিত বিলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘জমি অধিগ্রহণ (পশ্চিমবঙ্গ সংশোধনী বিল-২০১১)’।
জমি অধিগ্রহণের জন্য এ রাজ্যে দু’টি আইন ছিল। একটি ১৮৯৪-এর কেন্দ্রীয় জমি অধিগ্রহণ আইন, যা ‘অ্যাক্ট ওয়ান’ নামে পরিচিত। অন্যটি ১৯৪৮ সালে তৈরি রাজ্যের জমি অধিগ্রহণ আইন, যাকে ‘অ্যাক্ট টু’ বলা হয়ে থাকে। স্বাধীনতার পর দ্রুত জমি অধিগ্রহণ করে পরিকাঠামো তৈরির জন্য বিভিন্ন রাজ্য নিজেদের মতো এই আইন তৈরি করে। এই আইনে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আগেই জমি অধিগ্রহণ করা যেত।
স্বাধীনতার পর প্রথম কয়েক দশকে রাজ্যের আইনেই বেশি জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এটা করতে গিয়ে বহু ক্ষেত্রেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। পরবর্তী কালে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলার জেরে বিভিন্ন রাজ্য এই আইন বাতিল করে দেয়। পশ্চিমবঙ্গে আইনটি বাতিল হয় ১৯৯৭ সালের ৩১ মার্চ। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে, আইন বাতিল হয়ে যাওয়ায় ‘অ্যাক্ট টু’তে অধিগৃহীত জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণের কী হবে? তৎকালীন বাম সরকার ঠিক করে, ‘অ্যাক্ট টু’তে অধিগৃহীত জমির বকেয়া ক্ষতিপূরণের যাবতীয় বিষয় ‘অ্যাক্ট ওয়ান’ অনুযায়ী নিষ্পত্তি করা হবে। এ জন্য ১৯৯৭ সালের এপ্রিল মাসে রাজ্য একটি আইন তৈরি করে। তাতে প্রধানত দু’টি কথা বলা হয়। প্রথমত, ১৯৪৮ সালের ‘অ্যাক্ট টু’ বাতিল করা হল। দ্বিতীয়ত, ‘অ্যাক্ট টু’-তে অধিগৃহীত জমি নিয়ে যে সব সমস্যা রয়েছে, তার নিষ্পত্তি করা হবে ১৮৯৪ সালের কেন্দ্রীয় আইন বা ‘অ্যাক্ট ওয়ানে’। ১ এপ্রিল থেকে নতুন আইন কার্যকর হবে বলে ওই বছরেরই ২ মে (৩২ দিন পর) বিজ্ঞপ্তি জারি করে সরকার।
কিন্তু কয়েক জন জমি-মালিক সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। তাঁদের আপত্তি ছিল মূলত ওই ৩২ দিনের ব্যবধান নিয়ে। মামলায় সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দেয়, আইনের ক্ষেত্রে পরে বিজ্ঞপ্তি জারি করে (২ মে) তা আগে কার্যকর (১ এপ্রিল) করার কথা বলা যায় না। তাই ১৯৯৭ সালের আইনটি বাতিল করা হল।
পরে বাম সরকার এই নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য না করলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়েই বিষয়টিতে নজর দেন। ঠিক হয়েছে, ফের সংশোধনী এনে বকেয়া সমস্যা মেটানো হবে। নতুন বিলে বলা থাকছে, ১৯৯৭ সালের ১ এপ্রিল থেকে সংশোধনী চালু হবে। অর্থাৎ, এ বার আইনেই ১ এপ্রিল থেকে সংশোধনী কার্যকর করার কথা বলে দেওয়া হচ্ছে। সমস্যার নিষ্পত্তি করা হবে কেন্দ্রীয় জমি অধিগ্রহণ আইন (অ্যাক্ট ওয়ান) মেনে। ভূমি দফতর সূত্রের খবর, প্রায় ১৫ হাজার একর জমি ক্ষতিপূরণ ও অন্যান্য সমস্যায় আটকে রয়েছে। সমস্যা সমাধানে বিল আনা হলেও ক্ষতিপূরণ দিতে যে পরিমাণ অর্থ লাগবে, তার সংস্থান কোথা থেকে হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.