বাসের সিটে পড়েছিল একটা কালো রঙের ব্যাগ। তার ভিতরে ছিল মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের মার্কশিট, সার্টিফিকেট-সহ জরুরি কাগজপত্র। বাসের চালক বহু সন্ধান করে ব্যাগের মালিকের বাড়িতে গিয়ে সেই ব্যাগ তুলে গিলেন।
হুড়ার জবজবিগোড়া গ্রামের অপূর্ব ঘোষ কলকাতার শোভাবাজারের একটি আয়ুর্বেদিক মেডিক্যাল কলেজের ফার্মাসি বিভাগের ছাত্র। কলকাতা থেকে গত শুক্রবার তিনি বাড়ি ফেরার পথে দুর্গাপুর বাসস্ট্যান্ডে ব্যাগটি হারিয়ে ফেলেন। তাঁর কথায়, “দুর্গাপুর বাসস্ট্যান্ডে বাস পাল্টানোর সময় কালো রঙের ওই ব্যাগটি নিতে ভুলে যাই। পরে যখন খেয়াল হল তখন ওই বাসটি সেখানে ছিল না। ব্যাগের ভিতরে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের মার্কসিট, সার্টিফিকেট ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজ ছিল। তাই সব খোয়া যাওয়ায় খুব দুঃশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম।” |
ছাত্রের সঙ্গে বাস চালক। ছবি: প্রদীপ মাহাতো। |
দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের ওই বাসের চালক সবদেব দাস জানান, ডিপোতে গাড়ি নিয়ে গিয়ে অভ্যাসবশত গাড়ির ভিতর পরীক্ষা করার সময় ওই ব্যাগটি তাঁর নজরে আসে। ব্যাগ খুলে সার্টিফিকট ও মার্কসিট দেখেই তিনি বুঝে যান কারুর অসাবধানতায় ব্যাগটি পড়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, “আমি ঠিক করি যেভাবেই হোক ব্যাগটি ফেরত দিতে হবে। কিন্তু ওই যুবকের নাম ও তাঁর ঠিকানা হুড়া ছাড়া আর কোনও তথ্য ব্যাগের ভিতরে ছিল না। মঙ্গলবার গুড়ায় গিয়ে তাঁর নামে খোঁজ করতে করতে সটান বাড়ি পৌঁছে যাই।” ছেলের মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের মার্কশিট, সার্টিফিকেট-সহ জরুরি কাগজপত্র ভরা ব্যাগ পেয়ে খুশি অপূর্বর বাবা প্রশান্ত ঘোষ। তিনি বলেন, “টাকা পয়সা ওই ব্যাগে না থাকলেও কাগজপত্রগুলির মূল্য অনেক। আমরা ফেরত পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়েই গিয়েছিলাম। সহদেববাবুকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই।” এ সব শুনে সহদেববাবর প্রতিক্রিয়া, “অপূর্বর কাছে তো এগুলি অমূল্য। তাই খোঁজ করে তাঁকে গিয়ে গেলাম।” |