বিরোধী ভোট তিন ভাগে ভাগ হওয়ার পরেও কৃষ্ণনগর হাইস্কুলের অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে সিপিএম মনোনীত প্রার্থীরা চতুর্থ স্থান পাওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে দলের মধ্যেই। রবিবার এই স্কুলে ভোট ছিল। সেখানে ৬টি আসনে কংগ্রেস মনোনীত ৬ জন জিতেছেন। তৃণমূলের দু’টি তালিকার মোট ১২ জন লড়াই করেছেন। তবুও সিপিএমের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়েনি। বামপন্থীদেরই বক্তব্য, গত বছর বিরোধী জোট এককাট্টা হয়ে লড়াই করে এবং সে বার সিপিএম পরাজিত হয়। কিন্তু এ বার তা হয়নি। অথচ এই স্কুলটি দীর্ঘদিন ধরেই সিপিএমের ‘দখলে’ ছিল। তা হলে রাতারাতি কেন এই অবস্থা ঘটল, তার উত্তর দিতে গিয়ে কৃষ্ণনগর শহর লোকাল কমিটির সম্পাদক সমর দত্ত বলেন, “সাংগঠনিক দুর্বলতাই এর জন্য দায়ী। তা না হলে এমন ফল হয় না।” তিনি বলেন, “তবে ওই ভোটের দিন মাজদিয়ায় কৃষ্ণনগর জোনাল কমিটির সম্মেলন ছিল। ফলে সব নেতৃত্বই সেখানে থাকায় নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে একটা শূন্যস্থান তৈরি হয়।” সেই সঙ্গেই তাঁর কথায়, “আমরা ওই স্কুলে বহু উন্নয়ন করেছি। তবে রাজ্যব্যাপী যে ফল হয়েছে, এখানেও তার কোনও ব্যতিক্রম হয়নি। আমরা এখনও পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারিনি।”
এই শহর ও তার কাছাকাছি বেশ কিছু এলাকায় স্কুল নির্বাচনে সিপিএম পরপর পরাজিত হয়েছে। লেডি কারমাইকেল গার্লস হাইস্কুল, মৃণালিনী গার্লস, কালীনগর হাইস্কুল, কালীনগর গার্লস, ঘূর্ণি স্বর্ণময়ী গার্লস জিতেছে তৃণমূল এবং কংগ্রেস জিতেছে শক্তিনগর গার্লস হাইস্কুল, শক্তিনগর হাইস্কুল, মহারানি জ্যোতির্ময়ী বালিকা বিদ্যালয়, এভি হাইস্কুল, অক্ষয় বিদ্যাপীঠে। হিন্দু কল্যাণ বালিকা বিদ্যালয় জিতেছে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট। সিপিএমের শেষ ভরসা ছিল কৃষ্ণনগর হাইস্কুলই। কৃষ্ণনগর অবশ্য বরাবরই কংগ্রেসের শহর বলেই পরিচিত। এই শহরের পুরসভা কংগ্রেসের। তবে বিধানসভা আসনটি জোটের পক্ষে তৃণমূলের। কিন্তু আসন ভাগাভাগি করে জোট না হওয়ায় এই স্কুলের নির্বাচনী লড়াই কংগ্রেসের কাছে সম্মানের প্রশ্ন ছিল। টানটান উত্তেজনার মধ্যে ছ’টি আসনেই জয়ী হয়েছেন তাঁরাই। প্রার্থীরা কে কত ভোট পেয়েছেন, তা বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূল দু’টি তালিকা না দিলে একটি আসন পেতে পারত। কৃষ্ণনগরের পুরপ্রধান কংগ্রেসের অসীম সাহা বলেন, “ওই স্কুলে আমরা প্রচুর উন্নয়নের কাজ করেছি। তাই উন্নয়নের স্বার্থেই অভিভাবকেরা আমাদের ভোট দিয়েছেন। আবারও প্রমাণিত হল, শহরের মানুষ আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন।” |