ট্রেন উড়িয়ে দেওয়ার হুমকির ফলে মঙ্গলবার দুপুরে পূর্বরেলের লালগোলা-শিয়ালদহ শাখায় রেল চলাচল ব্যাহত হল। হুমকিদাতা নিজেকে মাওবাদী বলে দাবি করেছে। এই দিন মুর্শিদাবাদের লালগোলার স্টেশন মাস্টার মাথুরা মুণ্ডার কাছে বেলা ১১টা নাগাদ আধ ঘণ্টার মধ্যে চার বার উড়ো ফোনে এক ব্যক্তি নিজেকে মাওবাদী বলে পরিচয় দিয়ে ট্রেন উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। বহরমপুর জিআরপি থানার ওসি প্রকাশ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ফোনে ওই ব্যক্তি বলেছিল ‘এই ট্রেনটি উড়িয়ে দেওয়া হবে।’ তখন স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল লালগোলা-রানাঘাট ডিএমইউ প্যাসেঞ্জার। খবর পেয়েই ট্রেনটির কামরা ফাঁকা করে দিয়ে তল্লাশি শুরু করি। তবে সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি।” শেষ পর্যন্ত ট্রেনটি নির্ধারিত সময়ের পৌনে দু’ঘণ্টা পরে লালগোলা ছাড়ে। চলাচল ব্যাহত হয়েছে এই শাখার অন্য বেশ কিছু ট্রেনেরও। |
তল্লাশি চলছে লালগোলা স্টেশনে। মঙ্গলবার। ছবি গৌতম প্রামাণিক |
প্রকাশবাবু বলেন, “স্টেশন মাস্টারের ঘরের একটি ফোনেই বারবার ফোন করা হচ্ছিল। কোথা থেকে ওই ফোনগুলি করা হয়েছিল, তা জানার চেষ্টা করছি আমরা।” মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার ভরতলাল মিনা বলেন, “আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। ওই ফোনগুলি কোনও মাওবাদীই করেছে কি না, দেখা হচ্ছে। লালগোলা-সহ বিভিন্ন স্টেশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়েছে।”
এ দিন সকাল ১১টা ৭ মিনিট থেকে ১১টা ৩৪ মিনিটের মধ্যে ৪ বার ওই ফোন আসে। এর মধ্যেই ১১টা ২০ মিনিটে ওই লালগোলা প্যাসেঞ্জার ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই ফোন আসার পরে জানাজানি হয়ে যায় হুমকির কথা। আতঙ্কিত যাত্রীরা ট্রেন থেকে নেমে পড়েন। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সমীর গোস্বামী বলেন, “উড়ো ফোনের খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করি। এর পরেই দাঁড় করিয়ে রেখে ট্রেনের প্রতিটি কামরায় তল্লাশি চালানো হয়। নিয়ে যাওয়া হয় পুলিশ-কুকুরও। যদিও সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি।” রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনার জেরে দুপুর ২টোর ডাউন লালগোলা প্যাসেঞ্জার ৩৫ মিনিট দেরিতে লালগোলা থেকে ছেড়েছে। আপ লালগোলা প্যাসেঞ্জার ১২টা ১০ মিনিটের বদলে দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে এবং লালগোলাগামী আপ হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস ১১টা ৪৫ মিনিটের বদলে দুপুর ১টা ১৬ মিনিটে পৌঁছয়। |