|
|
|
|
কৃষি পেনশন |
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাই সার, নির্দেশিকা নেই ৪ মাসেও |
সুমন ঘোষ • মেদিনীপুর |
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম দফায় গত জুলাইয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে সময়ে এক সমাবেশ-মঞ্চ থেকে ‘৭৫ হাজার মানুষকে’ কৃষি পেনশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। ঘোষণার পর ৪ মাস কেটে গিয়েছে। পেনশন পাওয়া তো দূরের কথা, এখনও সামান্য কাজও এগোয়নি পশ্চিম মেদিনীপুরে। এগোবেই বা কী ভাবে, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার ৪ মাস পরেও সরকারি কোনও নির্দেশিকাই যে জারি হয়নি!
কৃষি দফতরের ব্যাখ্যা, মুখ্যমন্ত্রী সমাবেশ মঞ্চ থেকে কৃষি পেনশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেও কৃষি দফতরের কাছে সরকারি নির্দেশিকা আসেনি। তাই পদক্ষেপও করা হয়নি। ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পে সাম্মানিক বাড়ানোরও ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই ব্যাপারেই বা কী হয়েছে? জেলা কৃষি দফতর জানিয়েছে, এই ধরনের কোনও প্রকল্পও জেলায় চালু নেই। ফলে সাম্মানিক বাড়ানোরও প্রশ্ন নেই। ভবিষ্যতে প্রকল্প চালু হলে, কী ভাবে সেই প্রকল্পে কাজ হবে, কাদের নিয়োগ করা হবে, এই ধরনের নির্দেশিকা পৌঁছনোর পরেই এ বিষয়ে জানতে পারবে জেলা কৃষি দফতর। তার পরেই পদক্ষেপ করা না করার প্রশ্ন উঠবে। জেলা কৃষি দফতরের তথ্য আধিকারিক দুলাল দাস অধিকারী বলেন, “সরকারি নির্দেশিকা না এলে আমরা কোনও কাজই করতে পারি না। কৃষি পেনশন বা কৃষকবন্ধু সংক্রান্ত কোনও নির্দেশিকা এখনও হাতে আসেনি।”
গত ১২ জুলাই ঝাড়গ্রামে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উন্নয়নের একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান তিনি। তারই মধ্যে একটি প্রতিশ্রুতি ছিল, নতুন করে ‘৭৫ হাজার ২০৫টি পরিবারকে কৃষি পেনশন দেওয়া হবে’। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় আগে ৮ হাজার ৮০৯টি পরিবার কৃষি পেনশন পেতেন। ওই দিনই নতুন করে জঙ্গলমহলের ১০৯টি পরিবারকে কৃষি পেনশন দেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। যাঁদের চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ওই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসাও হয়। এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত পরিবার মাসে সাড়ে ৭৫০ টাকা পান। নতুন ভাবে প্রকল্পের আওতায় আসা ১০৯টি পরিবারও পেনশন পেয়েছেন। কিন্তু ‘৭৫ হাজার ২০৫টি পরিবার’কে প্রকল্পের আওতায় আনার বিষয়টির কী হল? প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তার কথায়, “এ বার রাজ্যে নতুন করে ৬৯ হাজার পরিবারকে এই প্রকল্পের আওতায় আনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কৃষি দফতর। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, ‘৭৫ হাজার ২০৫টি পরিবার’কে প্রকল্পে নিয়ে আসা হবে। সেটা রাজ্যের সব জেলা মিলিয়ে, নাকি শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়, নাকি শুধু মাওবাদী প্রভাবিত এলাকায়-তা নিয়েই ধোঁয়াশা রয়েছে। কারণ, মাওবাদী এলাকার উন্নয়নের কথা বলতেই মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়গ্রামে এসেছিলেন।”
ফলে বিভ্রান্তির গেরোয় আটকে কৃষি পেনশন প্রকল্পে আরও অনেকের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আশা। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, “আমরা সরকারি নির্দেশিকা ছাড়া কোনও কাজ করতে পারি না। কোনও ব্যক্তি বা মন্ত্রী মঞ্চ থেকে কী বলছেন, তা দেখে আমরা কাজ করতে পারি না। নির্দেশিকাই আমাদের কাছে শেষ কথা।” প্রকল্পের ভবিষ্যত কী হবে, তা নিয়ে সবাই অন্ধকারে। |
|
|
|
|
|