চালকল থেকে উড়ে আসে ছাই, নাকাল বাসিন্দারা
রের মেঝে থেকে বিছানা কোনওটাই দেখলে চেনার উপায় নেই। প্রতিদিন চালকলের ছাই জমে সেগুলির এমন হাল। শুধু তাই নয়, উড়ে আসা ছাই ক্ষতি করছে চোখ আর ফুসফুসেরও। পাশাপাশি চালকলের বর্জ্য নালা দিয়ে গিয়ে পড়ছে কৃষি জমিতে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে কৃষির উৎপাদন। এমনই অভিযোগ, গলসি ১ ব্লকের বুদবুদ, পারাজ, ভিড়সিন, গলিগ্রাম, পুরষা প্রভৃতি গ্রামের বাসিন্দাদের।
দীর্ঘ দিন ধরেই ওই সব গ্রামে চালকল চলছে। যদিও আগের থেকে তা সংখ্যায় অনেকটাই বেড়েছে। বর্তমানে প্রায় ২০টি চালকল রয়েছে ওই এলাকায়। অধিকাংশই লোকালয় সংলগ্ন। বাসিন্দারা জানান, অধিকাংশ রাইস মিল থেকে অনর্গল ধোঁয়ার সঙ্গে ছাই বেড়িয়ে লোকালয়ে দূষণ ছড়াচ্ছে। আবার মিলের পাশে ছাই ডাঁই করে রাখেন অনেক চালকল কর্তৃপক্ষ। সেই ছাইও উড়ে বাড়িঘরে ঢুকে পড়ে। ঘরের মেঝে, বিছানা, খাওয়ার থালায় সেই ছাই জমছে। স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল সূত্রধর, বিমান মণ্ডলদের অভিযোগ, “শ্বাসের মাধ্যমে ছাই ঢুকছে ফুসফুসে। খাবারেও মিশছে সেই ছাই। আবার কখনও তা চোখে ঢুকে সমস্যা তৈরি করছে।’’ তাঁদের আরও অভিযোগ, “রাইস মিলের বর্জ্য নালার মাধ্যমে মিশছে কৃষি জমিতে। ফলে জমির ঊর্বরতা কমে যাচ্ছে। কমছে কৃষির উৎপাদন।”
গলসি ১ ব্লকের বিডিও নিরঞ্জন কর জানান, বাসিন্দাদের তরফে চালকল থেকে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে সেই রিপোর্ট তিনি পাঠিয়ে দেওয়া হবে।” পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জয়শ্রী বিষ্ণু জানান, বাসিন্দাদের কাছ থেকে রাইস মিলের দূষণের অভিযোগ তাঁরা পেয়েছেন। রাইস মিল কর্তৃপক্ষকে দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জিও জানিয়েছেন তাঁরা। যদিও তাতে খুব ফল হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে সব চালকলই যে সম পরিমাণ দূষণ ছড়ায় না সে ব্যাপারে অবশ্য একমত বাসিন্দারা। জেলা রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে হিমাংশু মণ্ডল দাবি করেন, আগের থেকে পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। তিনি বলেন, “আগের থেকে দূষণের পরিমাণ কমেছে। তবু এখনও বেশ কিছু চালকল দূষণ রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ না করায় দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ উঠছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে সেই সব মিল মালিকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো হবে।”
এ ব্যাপারে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের দুর্গাপুর আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র চালু রাখলে বিদ্যুতের খরচ অনেক বেড়ে যায়। তাই চালকল মালিকদের কেউ কেউ ওই যন্ত্র ব্যবহারে অনীহা দেখান। পর্ষদের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যেই অভিযান চালানো হয়। তবে উপযুক্ত লোকবল না থাকায় নিয়মিত নজরদারি চালানো সম্ভব হয় না বলে স্বীকার করেছেন দফতরের এক আধিকারিক। তিনি জানান, ওই এলাকার বাসিন্দাদের তরফ থেকে লিখিত কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.