দিল্লিতে খুন ছোট ছেলে, ফের ধাক্কা রায়বাড়িতে
পমৃত্যু যেন পিছু ছাড়ছে না রায় পরিবারের! ২০ বছর আগে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল বাড়ির বড় ছেলের। এ বার নয়াদিল্লিতে খুন হলেন পরিবারের ছোট ছেলে শৈলজ রায় (২৪)। সোমবার ওই ঘটনার খবর পাওয়ার পর থেকেই শোকস্তব্ধ শিলিগুড়ির সুকান্তপল্লির দোতলা বাড়িটি। মঙ্গলবার সকালে দিল্লি থেকে শৈলজর দেহ এসে পৌঁছয় সুকান্তপল্লির বাড়িতে।
শৈলজ ওরফে রূপকের বাবা সুভাষ রায় এক সময় ‘ন্যাশনাল হাইড্রো-ইলেকট্রিক কর্পোরেশন’ (এনএইচপিসি)-এর অন্যতম শীর্ষ কর্তা ছিলেন। সেখান থেকে স্বেচ্ছাবসর নিয়েছেন। এখন একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।
এ দিন কোনও মতে বললেন, “সোমবার ছেলে দুর্ঘটনায় জখম হয়েছে শুনে দিল্লি যাই। সেখানে ছেলের মৃত্যুর ঘটনা
শৈলজ রায়
জানতে পারি। বিমানে ওর মৃতদেহ নিয়ে ফিরেছি। এই মুহূর্তে কিছু ভাবতে পারছি না!” সুভাষবাবুর স্ত্রী মঞ্জুদেবী এবং মেয়ে সংযুক্তা এ দিন কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, ঘটনাটি ঘটে সোমবার ভোরে। ভোর ৩টে নাগাদ বন্ধু সিদ্ধার্থ রায়ের সঙ্গে খাবার খেতে বেরোন শৈলজ। দু’জনেই থাকতেন চিত্তরঞ্জন পার্কে। বাড়ির কাছেই গোবিন্দপুরী মেট্রো স্টেশন লাগোয়া একটি খাবারের দোকানে পরোটা খাওয়ার জন্য গাড়ি থামান তাঁরা। গাড়ির মধ্যে বসেই খাওয়াদাওয়া করছিলেন। সেই সময়ে সেখানে পরোটা খেতে আসে চেতন চৌধুরী এবং ভিকি নামে দুই যুবক। কাদের আগে পরোটা দেওয়া হবে, তা নিয়ে বচসা বাধে দু’পক্ষে। টহলদার পুলিশ গিয়ে বচসা থামায়। কিছুক্ষণের জন্য সরে গেলেও, লাঠিসোটা নিয়ে সেখানে ফিরে আসে চেতন ও ভিকি। ঘটনার অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী পাশের একটি দোকানের খাবার বিক্রেতা ধরমপাল। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, গোবিন্দপুরী ১ নম্বর গলির সামনে শৈলজ ও সিদ্ধার্থের উপর চড়াও হয় ওই দু’জন।
ধরমপাল এ দিন জানান, মাথায় লাঠির আঘাত লাগে শৈলজর। তিনি লুটিয়ে পড়েন। পুলিশ সূত্রের খবর, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। ময়না-তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ফলেই মৃত্যু হয়েছে শৈলজের। অন্য দিকে, আহত সিদ্ধার্থকে প্রথমে এইমস-এর ‘ট্রমা সেন্টার’-এ ভর্তি করানো হয়। পরে তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সরানো হয়।
নিহত শৈলজ রায়ের মাকে সান্ত্বনা। মঙ্গলবার সন্দীপ পালের তোলা ছবি।
দিল্লি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (দক্ষিণ-পূর্ব) অজয় চৌধুরী জানান, ঘটনায় অভিযুক্তেরা কেউই দাগি অপরাধী নন। চেতন অস্ট্রেলিয়ার একটি নামী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে কম্পিউটার সায়েন্সের স্নাতক। ভিকি দিল্লির একটি কলেজের ছাত্র। দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পরিবার সূত্রের খবর, আইসিএসই পাশ করেই দিল্লি চলে যান শৈলজ। কর্মসূত্রে সেখানে থাকতেন তাঁর বাবা সুভাষবাবু। সেখান থেকে বি টেক পাশ করার পরে দেড় বছরের জন্য লন্ডনে গিয়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ম্যানেজমেন্ট’ নিয়ে পড়াশোনা করেন শৈলজ। ২০১০ সালে দিল্লিতে ফেরেন তিনি। সম্প্রতি তিনি একটি বিপিও-তে কাজ করতেন।
নিহত যুবকের আত্মীয় বিধায়ক দাস জানান, শৈলজের দাদা রূপম দার্জিলিংয়ের একটি ইংরেজি-মাধ্যম স্কুলে পড়তেন। ১৯৯১ সালে দার্জিলিং থেকে গাড়িতে বাড়ি ফেরার সময় দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.