ঢাকাই জাল নোটের প্রচুর
‘চালান’ নিয়ে উদ্বিগ্ন দিল্লি
পাকিস্তানে ছাপা জাল নোট নিয়ে মাথা ব্যথা ছিলই। এ বার জাল নোটের ‘ঢাকাই সংস্করণ’ চিন্তায় ফেলেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে।
এত দিন পাকিস্তানে ছাপা জাল নোট বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্গা, দুবাই বা মালয়েশিয়া হয়ে এ দেশে আসত। এখন আসছে বাংলাদেশে ছাপ জাল নোট। আসছে প্রচুর পরিমাণে। গত বছরের তুলনায় এ বছর বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে পাচারের সময় যে পরিমাণ জাল নোট ধরা পড়েছে, তা আগের তুলনায় যথেষ্ট বেশি। গোয়েন্দা রিপোর্ট জানাচ্ছে, বাংলাদেশের ঢাকা-সহ বেশ কিছু জায়গায় জাল নোট ছাপার কাজ চলছে। যা পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি দিয়ে এ দেশে ঢোকানোর চেষ্টা চলছে। চলতি বছরে সারা দেশে যে পরিমাণ জাল নোট ধরা পড়েছে, তার সিংহভাগই পশ্চিমবঙ্গে।
কিছু দিন আগেই দিল্লিতে ভারত-বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। বাংলাদেশের যে সব ঠিকানায় জাল নোট ছাপা হচ্ছে বলে সন্দেহ, তার তালিকা ভারতের তরফে বাংলাদেশ সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আজ বিএসএফের ডিজি ইউ কে বনশল বলেন, “আমরা আগের থেকে অনেক সক্রিয়। কিন্তু এ কথাও সত্যি, বাংলাদেশ থেকে জাল নোট পাচারের চেষ্টাও অনেক বেড়ে গিয়েছে।” শেখ হাসিনা সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ করবেন বলে আশাবাদী নয়াদিল্লি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের হিসেবে, চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশে ১৯ লক্ষ ৪৬ হাজার ৭১২টি জাল নোট উদ্ধার হয়েছে। যার মোট মূল্য ৯৬ কোটি টাকারও বেশি। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গেই ধরা পড়েছে ১৮ লক্ষ ৫৩ হাজার ১২টি নোট। যার মূল্য ৯২ কোটি টাকারও বেশি। এর সিংহভাগই বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ঢুকেছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক মনে করছে।
জাল নোট পাকিস্তানে না বাংলাদেশে ছাপা, তা কী ভাবে বোঝা যাচ্ছে? বিএসএফ সূত্রের বক্তব্য, পাকিস্তানে জাল নোট ছাপানো হয় ব্রিটেন ও ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা উঁচু মানের কাগজে (এই কাগজ পাঠানো বন্ধ করার জন্য কূটনৈতিক স্তরে ওই দেশগুলির সঙ্গে কথাও বলছে দিল্লি)। পাকিস্তানে ওই নোট ছাপার প্রযুক্তিও একেবারে নিখুঁত। ১০০ ও ৫০০ টাকার নোটের মাঝ বরাবর ‘আরবিআই’ লেখা যে সবুজ রঙের সরু পাত থাকে, তা-ও নকল করে ফেলা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে ছাপানো জাল নোটের কাগজ তেমন ভাল মানের নয়, ছাপার প্রযুক্তিও উন্নত নয় পাকিস্তানের মতো। ফলে অপেক্ষাকৃত সহজে ওই সব জাল নোট ধরে ফেলা যায়।
জাল নোট ঢুকছে কী ভাবে?
সাধারণ অনুপ্রবেশকারীদের উপরে নজর রাখা হলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক মনে করছে, হুজি-র মতো জঙ্গি সংগঠনগুলিও এ কাজে যুক্ত। দু’বছর আগে কলকাতায় প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা মূল্যের জাল নোট-সহ ৩ হুজি জঙ্গি ধরা পড়ে। তবে বাংলাদেশি ও পাক অনুপ্রবেশকারীদেরও এক চোখে দেখছে না বিএসএফ। বিএসএফের ডিজি-র যুক্তি, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকি অনেক কম। অনেকেই রুটিরুজির টানে বা অন্য প্রয়োজনে এ দেশে আসেন। তাঁদের আটক করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, গত বছর এমন ৬,২৯০ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। জাল নোট ও অনুপ্রবেশের এই সব সমস্যা খতিয়ে দেখার জন্য ডিসেম্বর মাসেই মালদা ও দক্ষিণবঙ্গে সীমান্ত সফরে যাবেন বিএসএফের ডিজি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.