অণ্ণাকে ঠেকাতে দুর্নীতি দমন নিয়ে বার্তা সনিয়ার
লোকপাল বিল তাঁদের মনোমত না হলে যখন রামলীলা ময়দানে ফের অনশনে বসার হুমকি দিচ্ছেন অণ্ণা হজারে, তখন কড়া হাতে দুর্নীতি দমনের কথা বলে তার মোকাবিলায় আসরে নামলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। রাহুল গাঁধীর ডাকা যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় অধিবেশন মঞ্চে সনিয়া আজ বলেন, “সমাজ ব্যবস্থায় দুর্নীতি হলো প্লেগের মতো। কংগ্রেস এর প্রতিকারে বদ্ধপরিকর। শুধু লোকপাল বিল নয়, সর্বস্তরে দুর্নীতি দমনে সরকার একগুচ্ছ বিল আনতে চাইছে সংসদে।”
আমেরিকায় অস্ত্রোপচার সেরে দেশে ফেরার পর এই প্রথম কোনও প্রকাশ্য সমাবেশে বক্তৃতা দিলেন সনিয়া। এবং সেটা এমন একটা সময়ে, যখন খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির সিদ্ধান্ত ঘিরে রাজনৈতিক সঙ্কট ঘনীভূত। পাশাপাশি লোকপাল বিল নিয়ে ফের সুর চড়াচ্ছে অণ্ণা-শিবির। এই অবস্থায় খুচরো ব্যবসার প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলেও দুর্নীতি প্রশ্নে স্পষ্ট বার্তা দিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী। আগ্রাসী কণ্ঠে জানিয়ে দিলেন, প্রশাসনে স্বচ্ছতা আনতে কংগ্রেস গোড়া থেকেই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সে কারণে তথ্যের অধিকার আইন যেমন ইউপিএ সরকার পাশ করিয়েছে, তেমনই একটি কার্যকরী লোকপাল বিল পাশ করাবে।
তবে বিল পাশের দায় যে বিরোধীদেরও, সে কথা আজ মনে করিয়ে দিয়েছেন সনিয়া। সংসদের চলতি শীতকালীন অধিবেশনে এ পর্যন্ত এক দিনও পুরোদস্তুর কাজ হয়নি। এই ডামাডোল চলতে থাকলে শেষ পর্যন্ত লোকপাল বিল পাশ হবে কিনা, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে। সনিয়া আজ বল বিরোধীদের কোর্টে ঠেলে বলেছেন, ওঁরা সহায়তা করলে তবেই বিল পাশ সম্ভব।
সনিয়ার সুরে সুর মিলিয়ে আজ দুর্নীতি দমনে সরকারের দৃঢ়প্রতিজ্ঞ অবস্থানের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও। জানিয়েছেন, কেন্দ্রের ভবিষ্যৎ কর্মসূচির মধ্যে বিচারব্যবস্থা ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কারও রয়েছে।
কিন্তু এ পর্যন্ত লোকপাল বিল নিয়ে যা অগ্রগতি, তাতে মোটেই খুশি নয় টিম অণ্ণা। অণ্ণা আজ সরাসরিই অভিযোগ করেছেন, লোকপাল বিল নিয়ে তাঁদের ঠকানো হয়েছে। কারণ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি যে খসড়া রিপোর্ট কমিটির সদস্যদের কাছে পাঠিয়েছে, তাতে প্রধানমন্ত্রীর পদ, বিচারবিভাগ, নিচু স্তরের আমলাদের লোকপালের আওতায় রাখা হয়নি। ‘শক্তিশালী’ লোকপাল বিল পাশ না হলে আগামী ১১ ডিসেম্বর রামলীলা ময়দানে ফের অনশনে বসার হুমকি দিয়েছেন তিনি। তার পর ২৭ ডিসেম্বর থেকে অনির্দিষ্ট কাল অনশনে বসবেন বলে জানিয়েছেন অণ্ণা।
টিম অণ্ণার সদস্য কিরণ বেদী এবং অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, “আমাদের বলা হয়েছিল, বিচারবিভাগে দুর্নীতির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট আর একটি বিলে রাখা হবে। কিন্তু তা না আছে বিলে, না লোকপালে।” সিবিআই-কে লোকপালের আওতায় না রাখারও সমালোচনা করেন তাঁরা।
এ দিকে আবার অ-সরকারি সংগঠনগুলিকে (এনজিও) লোকপালের আওতায় রাখা নিয়ে অণ্ণা-শিবিরের মতপার্থক্য প্রকাশ্যে এসেছে। অরবিন্দের মতে, “এনজিও এবং সংবাদমাধ্যমে বিস্তর দুর্নীতি আছে ঠিকই। কিন্তু তাদের লোকপালের আওতায় আনা হলে বিষয়টা অহেতুক জটিল হবে।” যা শুনে অণ্ণা-বিরোধী শিবিরের একাংশের কটাক্ষ, টিম অণ্ণার অনেকেই কোনও না কোনও এনজিও-র সঙ্গে জড়িত। তাই এই আপত্তি। ইতিমধ্যেই যাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, এবং মামলা দায়ের হয়েছে, সেই কিরণ বেদীর অবশ্য এই পদক্ষেপকে স্বাগতই জানিয়েছেন।
তবে কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, লোকপাল বিলের স্বরূপ যা-ই হোক না কেন, অণ্ণারা যে ছুতোনাতায় পথে নামবেন, তা আগেই জানা ছিল। সনিয়াও তাই মনে করেন। আর সেই কারণেই কংগ্রেস হাইকম্যান্ড চাইছে, সরকার তার কাজের মধ্যে দিয়ে মানুষের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিক যে দুর্নীতি দমনে তারা তৎপর। আর সে ক্ষেত্রে অণ্ণাদের আন্দোলন গুরুত্ব হারাবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.