|
|
|
|
‘প্রত্যন্ত’ হাওড়ায় মমতা, খোঁজ করে পেলেন না মনমোহনও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
ফোন করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। খোঁজ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। কিন্তু দু’দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে ধরতেই পারছেন না ইউপিএ সরকারের কর্তারা। খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি নিয়ে উত্তাল রাজনীতির জটিলতা বাড়িয়ে আপাতত ‘অধরা’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
খুচরো ব্যবসার দরজা বিদেশিদের জন্য খুলে দেওয়ার তিনি যে বিরোধী, সে কথা প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন মমতা। তাঁর নির্দেশে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিরোধিতা করেছেন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী। জানান লিখিত আপত্তিও। তার পর সংসদেও সরব হয়েছে তৃণমূল। লোকসভায় কাল সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে প্রায় ওয়েলে নেমে এসেছিলেন দলীয় সাংসদেরা।
|
মহাকরণে মমতা। মঙ্গলবার
সুদীপ আচার্যের তোলা ছবি। |
এই অবস্থায় মমতাকে বোঝাতে কাল সকালেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁকে ফোন করেন প্রণববাবু। কিন্তু কথা হয়নি। বলা হচ্ছে, হাওড়ায় সভা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় প্রণববাবুর ফোন ধরতে পারেননি মমতা। তাঁকে না পেয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুকুল রায়ের সঙ্গে কথা বলেন প্রণববাবু।
মমতার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না শুনে কাল সন্ধ্যায় তৃণমূলের সংসদীয় দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন ‘উদ্বিগ্ন’ মনমোহন। জানতে চান, মমতা কোথায়? সুদীপ তাঁকে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ‘প্রত্যন্ত’ এলাকায় সভা করছেন বলে যোগাযোগ করতে পারছেন না। মনমোহন জানতে চান, মমতা কোথায় আছেন? সুদীপ বলেন, হাওড়ায়। মনমোহন তাঁকে বলেন, হাওড়া কোথায় তা তিনি জানেন।
প্রশ্ন হল, কেন দিল্লিকে ‘এড়িয়ে’ যাচ্ছেন মমতা?
তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, দিল্লির ঘটনাপ্রবাহের দিকে কড়া নজর রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী। সুদীপের সঙ্গে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগও রয়েছে। কিন্তু নিজে কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে কথা না বলে তাঁদের উপরে চাপ সৃষ্টি করতে চাইছেন তিনি। মমতার দাবি, খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির সিদ্ধান্ত সরকারকে প্রত্যাহার করতে হবে।
মনমোহন অবশ্য সুদীপের মাধ্যমে মমতাকে আশ্বস্ত করতে চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করার এক্তিয়ার রাজ্য সরকারের। ফলে মমতা না চাইলে নিজের রাজ্যে খুচরো ব্যবসায় তিনি বহুজাতিকদের ঢুকতে দেবেন না। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, শরিকদের মধ্যে মতপার্থক্য প্রকাশ্যে চলে আসায় ভুল বার্তা যাচ্ছে। আলোচনার মাধ্যমে মতান্তর মিটিয়ে নেওয়ার অবকাশ রয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্ব কিন্তু সরকারের সঙ্গে কোনও আলোচনাতেই যেতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, বহু বলা সত্ত্বেও শরিকদের সঙ্গে আলোচনা না করেই সরকার একের পর এক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আর এখন বিপাকে পড়ে আলোচনার কথা বলছে। এখন আলোচনা অর্থহীন। তাই আপাতত অধরা থাকাটাই পছন্দ করছেন মমতা।
কংগ্রেস নেতাদের পক্ষে স্বস্তির খবর একটাই। সরকারের মধ্যে থেকেও ‘জনমুখী’ অবস্থান নেওয়ার জন্য তৃণমূল নেত্রীকে অভিনন্দন জানাতে চান সমাজবাদী পার্টির নেতা মুলায়ম সিংহ যাদব। কিন্তু মমতার খোঁজ পাননি তিনিও। |
|
|
|
|
|