|
|
|
|
ভোটের উত্তাপ নেই, আজ দক্ষিণে লড়াই নিয়মরক্ষার |
পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায় |
ভোট ভোট গন্ধটা কোথাও নেই। মত প্রয়োগের মাত্র ১৪-১৫ ঘণ্টা আগেও নির্বাচনী উত্তাপের বদলে একেবারে ঠান্ডা, গতানুগতিক চেহারায় দক্ষিণ কলকাতা।
৩০ তারিখ এখানে লোকসভা উপনির্বাচন না?
প্যাকেটে চানাচুর ভরতে ব্যস্ত দোকানি থেকে শুরু করে টিউটোরিয়ালে পড়তে যাওয়া তরুণী প্রত্যেকেরই এই প্রশ্নে নিরুত্তাপ প্রতিক্রিয়া “তাতে আলাদা কী এল-গেল? ভোট তো হতেই থাকে!”
উপনির্বাচনের আগে দক্ষিণ কলকাতার রাস্তায় পুলিশের সংখ্যা নাকি প্রার্থীদের ব্যানার পোস্টার কোনটা বেশি কম, তা নিয়ে রীতিমতো তর্ক বাধতেই পারে। অনেক ঘুরেও কোথাও সে ভাবে জওয়ানদের টহল দিতে দেখা গেল না। নির্বাচনের আগের সন্ধ্যাতেও দক্ষিণ কলকাতা তার প্রাত্যহিকতার গণ্ডি ভাঙার তেমন কোনও আগ্রহ দেখায়নি।
মঙ্গলবার বিকেল প্রায় সওয়া চারটে। খিদিরপুরের কার্ল মার্ক্স সরণির দু’পাশে দোকানগুলোয় প্রতিদিনের মতোই কেনাবেচা চলেছে। মোড়ের কাছে জিপে হেলান দিয়ে হাল্কা মেজাজে চায়ে চুমুক দিচ্ছিলেন জংলা উর্দি পরা কয়েক জন জওয়ান। আলাদা করে পথচলতি কেউই তাঁদের দিকে নজর দিচ্ছিলেন না।
গার্ডেনরিচে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সদর দফতরের সামনে সার সার ‘ইলেকশন ডিউটি’ লেখা প্রাইভেট বাস দাঁড় করানো। ইতিউতি লাঠি হাতে ঘুরছেন কয়েক জন পুলিশকর্মী। কেউ কেউ আবার সামনের দোকানে চা-শিঙাড়া খেতে ব্যস্ত। |
|
ভোটকর্মীদের প্রস্তুতি। মঙ্গলবার, আলিপুরের এক কেন্দ্রে। নিজস্ব চিত্র। |
গার্ডেনরিচ, মেটিয়াবুরুজ, খিদিরপুরের মতো স্পর্শকাতর অঞ্চলগুলিতেও নিরাপত্তার মাত্রাতিরিক্ত আয়োজন নেই। গার্ডেনরিচ ডক এলাকাও চোখে পড়ার মতো ফাঁকা। উত্তেজনার আবহটাই উধাও। নির্বাচন নিয়ে মাথা ঘামানোর তুলনায় মহরমের মরসুমে লোকে ছোট-বড় নানা আকারের তাজিয়া কিনতে বেশি ব্যস্ত। ভোটের ব্যানারের তুলনায় বিভিন্ন এলাকায় পাল্স পোলিওর ব্যানার বেশি চোখে পড়েছে। পুলিশ ও জওয়ানেরা এ দিন মূলত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলির মধ্যে প্রস্তুতিতেই ব্যস্ত থেকেছেন। আশপাশ দিয়ে মাঝেমধ্যে ‘ইলেকশন ডিউটি’ লেখা গাড়ি হুশ করে বেরিয়ে যাওয়া ছাড়া রাস্তা দিয়ে হাঁটলে কে বলবে যে, রাত পোহালেই নির্বাচন?
তুলনায় ভোটের হাওয়া কিছুটা হলেও বইছে বেহালা, নিউ আলিপুর বা চেতলার অলিগলিতে। একমাত্র এখানেই যুযুধান দুই রাজনৈতিক দলের কয়েকটি পতাকা-ব্যানারের দেখা পাওয়া গেল। পাড়ার রকের আড্ডা, চায়ের দোকান থেকে ছিটকে এল ভোট নিয়ে আলোচনা।
এই নির্লিপ্ততার মধ্যে ভোটের উত্তাপ বলতে একমাত্র সিপিএম প্রার্থী ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সিপিএম নেতা রবীন দেবের অভিযোগ। মঙ্গলবারই তাঁরা বলেন, নির্বাচন ঘোষণার পরে চলচ্চিত্র উৎসবে গিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করতে ফিল্মসিটির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের কথায়, “এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে। যা অভিযোগ করা হচ্ছে, কমিশন তার অন্য উত্তর দিচ্ছে।” একটি দৈনিকে তৃণমূল প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য বিজ্ঞাপন বেরিয়েছে বলেও তাঁরা অভিযোগ করেন। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার জানিয়েছেন, এর তদন্ত হবে। |
এক নজরে |
এলাকা: কসবা, বালিগঞ্জ, রাসবিহারী, ভবানীপুর, বন্দর, বেহালা পূর্ব, বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র
ভোট চলবে: সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা
মোট ভোটার: ১৫ লক্ষ ৬০ হাজার ৪০৬
মোট ভোট কেন্দ্র: ১৯০২টি
অতি স্পর্শকাতর বুথ: ৩৩৫টি
স্পর্শকাতর বুথ: ৩১৫টি
|
প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী |
|
|
সুব্রত বক্সী |
ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় |
এ ছাড়া, আছেন ৩ নির্দল |
নিরাপত্তায়
• কেন্দ্রীয় বাহিনী ২০ কোম্পানি
• কলকাতা পুলিশের ১৩ হাজার কর্মী
• প্রতি বুথে ৬ জন সশস্ত্র বাহিনীর পুলিশ মাইক্রো অবজার্ভার
• ১৭৩ জন। ১২৩টি বুথে ক্যামেরা
|
নির্বাচনী কেন্দ্রে সমস্ত সরকারি, বেসরকারি অফিস বন্ধ। কর্মক্ষেত্র কেন্দ্রের বাইরে
হলে ভোটারের আবেদনের ভিত্তিতে এক দিনের অতিরিক্ত ক্যাজুয়াল ছুটি। |
|
|
|
|
|
|