রাজস্থানের এক প্রত্যন্ত এলাকা। যেখানকার সাধারণ গরিব-গুর্বো মানুষগুলোর কাছে এত দিনেও গিয়ে উঠতে পারেনি আর্থিক উন্নয়নের অন্যতম প্রাথমিক একটি শর্ত, ব্যাঙ্কিং পরিষেবা। সেখানেই এ বার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ব্যাঙ্কে টাকা রাখা, তোলা, পাঠানো-সহ বিভিন্ন ব্যাঙ্কিং লেনদেনের সুযোগ পৌঁছে দিতে চলেছে এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক। যাকে সমাজের সব স্তরে উন্নয়ন ছড়িয়ে দেওয়ার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবেই তুলে ধরছে তারা। এর জন্য দেশের অন্যতম বৃহৎ এই বেসরকারি ব্যাঙ্ক জোট বেঁধেছে মোবাইল পরিষেবা সংস্থা ভোডাফোনের ‘এম-পয়সা’(মোবাইল মারফত আর্থিক লেনদেন পরিষেবা)-র সঙ্গে।
যেখানে ব্যাঙ্ক নেই, সেখানে মোবাইল এই কৌশলে ভর করে ঠিক একই ভাবে এক সময় ভোডাফোনের ‘এম-পেসা’ আফ্রিকার তিনটি দেশেও এনেছিল ‘মোবাইল ব্যাঙ্কিং’। যা কার্যত বিপ্লব ঘটায় আফ্রিকা জুড়ে। সেখানে ব্যাঙ্ক নেই এমন অঞ্চলের ১ কোটি ৭০ লক্ষেরও বেশি মানুষকে প্রাথমিক আর্থিক পরিষেবা দেয় তারা, জানান ভোডাফোন ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর (বিজনেস অপারেশন্স) সুনীল সুদ। আর্থিক অনুন্নয়নের সেই ‘ফাঁক’কে পুঁজি করে ভারতেও আনা হল সেই ‘মডেল’।
রাজস্থানের চমু তহসিলে ভোডাফোন এম-পয়সার সঙ্গে চালু হল এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক মোবাইল-ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পরিষেবাটি। ভারতে ব্যাঙ্কটির (রিটেল লায়াবিলিটিজ, মার্কেটিং ও ডিরেক্ট ব্যাঙ্কিং চ্যানেলস) কর্তা রাহুল ভগতের দাবি, “এ দেশে এ ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম। দেশে শহর-গ্রামের মোট সংখ্যা যেখানে ৬ লক্ষ, সেখানে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের শাখা মাত্র ৮৯ হাজার। ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চল পরিষেবা থেকে কার্যত বঞ্চিত।”
কর্তৃপক্ষ জানান, মোবাইল-ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে প্রথমে নিকটবর্তী ভোডাফোন এম-পয়সা বিপণিতে গিয়ে টাকা জমা দিতে হবে। তার পর মোবাইলে বেছে নিতে হবে টাকা জমা, তোলা, অন্য কোথাও পাঠানো বা অ্যাকাউন্টে টাকার অঙ্ক জানার মতো বিষয়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিজস্ব ‘পিন’ নম্বর দিয়ে পরিষেবাটি নিতে হবে গ্রাহককে। লেনদেন ঠিকঠাক হল কি না, তা এসএমএস-এ জানানো হবে গ্রাহককে। সুদ বলেন, “এ দেশের বহু মানুষ এতে উপকৃত হবেন।” ইতিমধ্যেই রাজস্থানের ৩২০টি গ্রাম ও ৫৪টি শহরের ২,২০০ বিপণিতে শুরু হয়েছে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া। |