শাপে বর।
নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে রাজ্যের পাঁচ জায়গায় সফট্ওয়্যার টেকনোলজি পার্ক (এসটিপি) গড়তে পারেনি কেন্দ্র। এখন সেই জমিতে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের জন্য পরিকাঠামো তৈরি করবে তারা। অনেকেই মনে করছেন, এর ফলে আখেরে দু’দিক থেকেই লাভবান হবে রাজ্য। এক বার পরিকাঠামো তৈরি হয়ে গেলে লগ্নি টানা সহজ হবে। একই সঙ্গে রেহাই পাবে চাপে থাকা রাজ্যের কোষাগারও। কারণ, বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে (পিপিপি মডেল) কেন্দ্র এই পরিকাঠামো গড়লে কোনও আর্থিক ব্যয়ভার বহনের দায় থাকবে না রাজ্য সরকারের।
সল্টলেক, শিলিগুড়ি, হলদিয়া, দুর্গাপুর ও খড়্গপুরে প্রায় তিন একর করে মোট ১৫ একর জমি রয়েছে কেন্দ্রীয় টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের। মূলত তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক বা এসটিপি প্রকল্পের জন্যই ওই জমি নিয়েছিল তারা। ছোট ও মাঝারি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির হাত ধরতে সেখানে এসটিপি প্রকল্প চালু করার পরিকল্পনা ছিল। যাতে এই প্রকল্পের আওতায় থাকার দরুন কর ও রফতানি ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ সুবিধা পায় তারা।
কিন্তু এই প্রকল্পের মেয়াদ ফুরিয়ে যায় গত মার্চের শেষ দিকেই। ফলে বরাদ্দ জমি ব্যবহার করতেই হত বিকল্প কোনও কাজে। ইতিমধ্যে ক্ষমতায় আসার পরই তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে শুধু কলকাতার গণ্ডি ছাড়িয়ে জেলায় জেলায় পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সূত্রেই কেন্দ্রকে তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামো গড়তে ওই জমি ব্যবহারের প্রস্তাব দেয় রাজ্য। সম্প্রতি তথ্যপ্রযুক্তি দফতরকে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে কেন্দ্রও।
তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের আধিকারিক স্বরূপ রায়ের দাবি, “এ ধরনের পরিকাঠামো তৈরি হলে ছোট ও মাঝারি সংস্থার লগ্নি টানা সহজ হবে।” এবং পুরো বিষয়টিতে রাজ্যের আর্থিক দায়ও থাকবে না। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, আর্থিক সঙ্কটে নাজেহাল রাজ্যের কোষাগারের কাছে এটি যথেষ্ট স্বস্তির। কারণ, এসটিপি প্রকল্পে কিছুটা আর্থিক ব্যয়ভার বহন করতে হত রাজ্যকে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সেই দায় বর্তাবে না তাদের উপর।
রাজ্যের আর একটি সুবিধা হল: কেন্দ্র অনুমতি দেওয়ায় এই সব পরিকাঠামোর এক তৃতীয়াংশ জায়গা নিজেদের প্রয়োজনমতো ব্যবহার করতে পারবে তারা। অনেকের ধারণা, সেখানে বেশ কিছু নতুন ও ছোট সংস্থাকে কাজ করার সুযোগ করে দিতে পারে রাজ্য সরকার। তা ছাড়া, সল্টলেক-সেক্টর ফাইভের মতো জায়গায় (যেখানে জমির দাম আকাশছোঁয়া) জমির চাহিদা মেটাতেও কিছুটা সাহায্য করবে এই পরিকাঠামো।
সল্টলেক-সহ ওই পাঁচটি জায়গার পাশাপাশি আগামী দিনে কল্যাণীতেও এ ধরনের পরিকাঠামো গড়তে চায় কেন্দ্র। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইনফর্মেশন টেকনোলজির জন্য ইতিমধ্যেই জমি চিহ্নিত হয়ে রয়েছে সেখানে। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে শিক্ষা ও শিল্পের সেতু বন্ধন করতেই ক্যাম্পাসে তথ্যপ্রযুক্তির পরিকাঠামো তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে বলে দফতর সূত্রে দাবি। |