দলের লোকাল সম্মেলনের প্রতিবেদনে শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের যে সমালোচনা করা হয়েছে তা জেলা কমিটি অনুমোদন করছে না বলে জানাল কোচবিহার সিপিএম। শুক্রবার কোচবিহারে নিজেদের জেলা দফতরে সিপিএম নেতাদের সঙ্গে প্রায় দু ঘণ্টা দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয় ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্বের। তার পরে ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ, বিধায়ক পরেশ অধিকারীকে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক চণ্ডী পাল এবং প্রাক্তন মন্ত্রী দীনেশ ডাকুয়া। চণ্ডীবাবু বলেন, “ফরওয়ার্ড ব্লক সম্পর্কে দলের কয়েকটি লোকাল সম্মেলনের প্রতিবেদনে যে বক্তব্য রয়েছে তা পার্টির বক্তব্য নয়। বাম ঐক্য বা পার্টির গাইড লাইন বিরোধী কোনও বক্তব্য মানা যায় না। আমরা সে সব কোনও বক্তব্য অনুমোদন করিনা।” কোচবিহার জেলা সম্পাদকের সাফাই, “পার্টির নিচু তলার কোনও কোনও এলাকায় অনেক সময় স্বচ্ছ ধারণা থাকে না। জেলা থেকে আমরা তা সংশোধন করে থাকি। প্রতিবেদনগুলি ছাপানোর দায়িত্বে থাকা নেতাদের কোনও গাফিলতি রয়েছে কী না তাও দেখা হবে।”
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা প্রাক্তন মন্ত্রী দীনেশ ডাকুয়া বলেন, “ফরওয়ার্ড ব্লকের সঙ্গে গোলমাল দেখা দিয়েছিল। এদিনের বৈঠকে সেটা কেটে গিয়েছে। এখন থেকে প্রতিবেগনে বিভিন্ন পার্টির অবস্থান আলোচনায় বামফ্রন্ট বিরোধী কিছু লেখা যাবে না।”
সিপিএমের এই ঘোষণায় খুশি ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্ব। দলের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “আমরা কোনও সময় বামফ্রন্ট ভাঙন বলিনি। সব সময়ই দু’দলের নিচু তলায় ঐক্য রাখার চেষ্টা করা হয়। আগামী দিনে বামফ্রন্টগত ভাবেই লড়াই হবে। সিপিএমের কয়েকটি লোকাল সম্মেলনের প্রতিবেদনের বক্তব্য নিয়ে কর্মীদের ক্ষোভ ছিল। এদিনের বৈঠকে নির্দিষ্টভাবে তা আমরা সিপিএম নেতাদের দেখিয়েছি।”
ফ্রন্ট সূত্রের খবর, কোচবিহার সদরের ঘুঘুমারি, দিনহাটার ভেটাগুড়ি, নিগমনগর, নাজিরহাট পরপর চারটি লোকাল সম্মেলনে প্রতিবেদনে সিপিএম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক তুলোধনা করে। ভেটাগুড়ির প্রতিবেদনে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফরওয়ার্ড কংগ্রেস, তৃণমূলের সঙ্গে জোট করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে কর্মীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়। শরিকের রাজনৈতিক চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। একের পর এক বিষয়গুলি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেতে থাকায় ফরওয়ার্ড ব্লকের কর্মী, নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। বামফ্রন্টের কর্মসূচি থেকে কোচবিহারে নিজেদের সরিয়ে রাখার কথা ঘোষণা করে ফরওয়ার্ড ব্লক। জেলা সিপিএমের একাংশের মতে, জেলা নেতৃত্বের এদিনের বৈঠক এবং ঘোষণার জেরে নিচুতলায় কর্মীদের অনেকের মনোবল ভেঙে যেতে পারে। জেলায় সার্বিক ঐক্য একরকম হলেও স্থানীয় স্তরে বাস্তবটা অন্যরকম। তবে কঠিন এই রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাম ঐক্যকে মজবুত করার জন্য জেলার নেতারা যা করেছেন, সেটাকেও আবার অস্বীকার করা যায় না। |