আদালতে মামলা রুজু করে কালিয়াগঞ্জ কলেজ থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট তুলে নিল ছাত্র পরিষদ। শুক্রবার সকালে সংগঠনের তরফে কালিয়াগঞ্জ শহর জুড়ে প্রচার করে ধর্মঘট তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। ধর্মঘট উঠে যাওয়ায় কলেজের স্বাভাবিক পঠনপাঠনের কাজ শুরু হয়েছে। বি.এ. প্রথম বর্ষের সাধারণ বিভাগের পদার্থবিদ্যা বিষয়ে পরীক্ষাও এদিন নির্বিঘ্নে হয়েছে। পাশাপাশি, কলেজ কর্তৃপক্ষ এদিন প্রায় ৩৫০ জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের মধ্যে আর্থিক অনুদানের চেক বিলি করেছেন। আর্থিক অনুদানের পড়ুয়াদের ফর্ম তোলা ও জমা নেওয়ার কাজও নির্বিঘ্নে হয়েছে। তবে, ছাত্র পরিষদের তরফে কলেজ ধর্মঘট তুলে নেওয়া হলেও সাধারন সম্পাদক নির্বাচন বাতিল করে কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারন নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করার দাবিতে টানা আন্দোলনে নামার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। আন্দোলনের কর্মসূচি ঠিক করতে এদিন সকালে কালিয়াগঞ্জের তালতলা এলাকায় বৈঠকে বসেন ছাত্র পরিষদ নেতৃত্ব। ছাত্র পরিষদের কলিয়াগঞ্জ টাউন কমিটির সভাপতি অমিত দেবগুপ্ত বলেন,“সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে মামলা শুরু হওয়ায় ও পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে আমরা অনির্দিষ্টকালের কলেজ ধর্মঘট তুলে নিলাম। ১ ডিসেম্বর আদালত রায় ঘোষণা করবে। আমরা সেইদিকে তাকিয়ে রয়েছি। অধ্যক্ষ বেআইনি ভাবে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে সংসদ উপহার দিয়েছেন। নির্বাচন বাতিল করে ছাত্র সংসদের সাধারণ নির্বাচনের বিঙ্গপ্তি জারি করার দাবিতে শনিবার থেকে আমরা টানা ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দিনভর অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” |
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জের সিভিল বিচারক জুনিয়র আদালতে মামলা দায়ের করেন কলেজের প্রথম বর্ষের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র বিশ্বজিত নুনিয়া। বিচারক তপন মিত্র মামলাকারীর বক্তব্য শোনার পর কলেজ কর্তৃপক্ষকে আগামী ৭ দিন নির্বাচিত নতুন ছাত্র সংসদের কাজকর্মের ওপর স্থগিতাদেশ রাখার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি, বিচারক অধ্যক্ষের কাছে জানতে চান এক বছরের মধ্যে কীভাবে দুইবার ছাত্র সংসদ গঠন করা যায! কলেজ কর্তৃপক্ষকে আগামী ১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিজেদের বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দেয় আদালত? কলেজের অধক্ষ্য পীযুষকুমার দাস বলেন, “বিদায়ী ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিয়ে কলেজ থেকে বার হয়ে গিয়েছেন। তাই, সমস্ত সরকারি নিয়ম মেনেই নতুন সাধারন সম্পাদক নির্বাচন করা হয়েছে। কলেজের পঠন-পাঠনের স্বার্থে ছাত্র পরিষদ ধর্মঘট তুলে নেওয়ায় আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।” আগামী ফেব্রুয়ারী মাসে কলেজের ছাত্র সংসদের পরবর্তী নির্বাচন হওয়ার কথা। গত ফেব্রুয়ারী মাসে কলেজের ছাত্র সংসদের ২৯ টি আসনের মধ্যে ২ টি আসনে কেউ প্রার্থী না দেওয়ায় ভোট হয়নি। ২৭টি আসনের মধ্যে ৭ টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জয়ী হয় এস এফ আই। ২০টিতে প্রার্থী দেয় এস এফ আই ও ছাত্র পরিষদ। ভোটে ২০ টি আসনে জিতে এস এফ আই ছাত্র সংসদ দখল করে। গত জুন মাসে এস এফ আইয়ের ১৪ জন তৃণমূল ছাত্র পরিষদে যোগ দেন। বিদায়ী ছাত্র সংসদের সাধারন সম্পাদক সহ এস এফ আইয়ের ৭ জন সদস্য তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা দেওয়ার পরে‘নিস্ক্রিয়’ হয়ে যান। ফলে, ছাত্র সংসদে অচলাবস্থা দেখা দেয়। তাই অন্তর্বর্তী ভাবে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন হয়। তার পরেই, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে বুধবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল ছাত্র পরিষদ। |